খুব খারাপ লাগছে মানুষটার জন্য: শাকিব খান

শাকিব খান। ছবি: ফেসবুক থেকে
শাকিব খান। ছবি: ফেসবুক থেকে

২০১৯ সালটা তাঁর নিজের সিনেমার কাজের ক্ষেত্রে খানিকটা দুর্যোগপূর্ণ গেছে বলে মনে করেন ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। মাত্র তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে তাঁর। তবে এই দুর্যোগের মধ্যেও শাকিব খানের কাছে প্রশান্তি যে ঢাকাই চলচ্চিত্রে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে তাঁর নিজের প্রযোজনায় ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ ব্যবসা করেছে। এদিকে দুর্যোগ কাটিয়ে নতুন বছরে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আরও বেশি বেশি ভালো ছবি দর্শকদের উপহার দিতে চান তিনি। সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজও শুরু করেছেন। এই মধ্যে ঘটেছে অঘটন। তাঁর দীর্ঘদিনের দেহরক্ষী হারুন অর রশিদ আজ রোববার সকালে মারা গেছেন। হঠাৎ করেই তাঁর চলে যাওয়ায় মর্মাহত হয়েছেন শাকিব খান। এসব বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।

শাকিব খান। ছবি: ফেসবুক থেকে
শাকিব খান। ছবি: ফেসবুক থেকে

কীভাবে মারা গেলেন আপনার দেহরক্ষী?
মাস খানেক ধরে অসুস্থ ছিলেন। মাথায় টিউমার হয়েছিল। শ্বাসকষ্ট ছিল। টিউমার অপারেশন করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অপারেশন সফলও হয়েছিল। প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। দু-এক দিনের মধ্যেই হাসপাতাল ছাড়ার কথা ছিল। আমার সঙ্গে কয়েক দিন আগে কথাও হলো, দ্রুতই আমার সঙ্গে কাজে যোগ দেওয়ার কথা। হঠাৎ করেই রোববার সকালে মারা যাওয়ার সংবাদ জানতে পারলাম। আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি।

আপনার সঙ্গে কত দিন ধরে ছিলেন?
আমার ঠিক মনে নেই। আট থেকে নয় বছর হবে। সম্ভবত ‘জান আমার জান’ ছবির শুটিংয়ের সময় আমার সঙ্গে কাজ শুরু করেন। সব সময়ই জানপ্রাণ দিয়ে আমার জন্য কাজ করতেন। তাঁর কাজে কখনোই গাফিলতি দেখিনি।

আপনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের জায়গাটা কেমন ছিল?
রাতের ঘুমানো ছাড়া সব সময়ই আমার সঙ্গেই থাকতেন। পরিবারেই সদস্যদের মতোই থাকতেন। আন্তরিকতা নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে চলতেন। শুটিং বা যেকোনো জায়গায় গেলে আমাকে ছায়া দিয়ে রাখতেন। আমাকে নিরাপত্তা দিতেন। সত্যি কথা কি, খুব খারাপ লাগছে মানুষটার জন্য।

আপনি দেখতে গিয়েছিলেন?
দেখা হয়নি। মরদেহ দেখার জন্য বের হয়েছিলাম। কিন্তু মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে বেশিক্ষণ রাখেনি। আমি যাওয়ার আগেই মরদেহ নিয়ে দেশের বাড়ি কুমিল্লায় রওনা হয়ে গেছেন আত্মীয়স্বজন। ‘বীর’ ছবির শুটিংয়ের শিডিউল ছিল এফডিসিতে। পরে সেখানে চলে এসেছি। অবশ্য আমার ভাই মনির সব সময়ই তাঁদের খোঁজখবর রাখছেন।

‘বীর’ ছবির শুটিং কি শেষ পর্যায়ে?
হ্যাঁ, মোটামুটি শেষ। আজও এফডিসিতে শুটিং করছি। কয়েকটির দৃশ্যের কাজ বাকি ছিল। এখন দুটি গানের শুটিং বাকি আছে। কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এটি আমার নিজের ঘরের ছবি। আশা করছি মার্চে মুক্তি দিতে পারব ছবিটি।

বলছিলেন নতুন বছরে এস কে ফিল্মস থেকে পরিকল্পনা করে কাজ করবেন। কী ধরনের পরিকল্পনা করছেন?
২০২০ সালে একটি টিম করে কাজ করব। পরিকল্পনা চূড়ান্ত। অন্য প্রযোজকের ছবি তো থাকবেই, পাশাপাশি নিজের প্রযোজনা থেকে তিন-চারটি ছবির কাজ হবে। ‘কবি’ ও ‘প্রিয়তমা’ নামে দুটি ছবির নাম ঠিক হয়েছে। আরেকটি ছবি করবেন মালেক আফসারি। নাম এখনো ঠিক করিনি। এই বছরটা একটি সঠিক সময় ধরে কাজ করব। একটি ছবির কাজ শেষ হবে, টিম থেকে ওই ছবির পোস্টের কাজ চলবে। পরের ছবিতে আমি কাজ শুরু করে দেব। এভাবেই কাজ হবে।

শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী হারুন অর রশিদ। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী হারুন অর রশিদ। ছবি: সংগৃহীত

আপনি যে ধরনের ছবিতে কাজ করেন, তা থেকে শুনেছি ‘কবি’ ছবিটি আলাদা। প্রস্তুতি কেমন?
এটি একটি ভিন্ন ধরনের ছবি হবে। বলা যায় ক্ল্যাসিক ছবি এটি। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এই ছবি পরিচালনা করবেন হাসিবুর রেজা। তাঁর আগের ছবি ‘সত্তা’র মতোই একটি শক্তিশালী টিম থাকবে এই ছবিতে। সেভাবেই পরিচালক এগোচ্ছেন। ছবির গানগুলোও ‘সত্তা’ ছবির মতোই আলোচিত হবে আশা করছি।

শুনলাম, এই ছবির জন্য নতুন নায়িকা খুঁজছেন?
হ্যাঁ। এই ছবির গল্পে দেখা যাবে বাংলাদেশ থেকে একটি মেয়ে কলকাতায় যাবে। গল্প কলকাতা শহরকে ঘিরেই। গল্পের প্রয়োজনে একজন মিষ্টি চেহারার মেয়ে দরকার। অবশ্যই মেয়েটি বাংলাদেশি হতে হবে। এখনো পাইনি। খোঁজ চলছে। শুধু এই ছবির জন্যই না, ‘প্রিয়তমা’ ছবির জন্যও নতুন মেয়ে খুঁজছি। ‘কবি’ ছবিতে কলকাতার সব্যসাচী, প্রিয় চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখার্জির কাজ করার কথা আছে। পুরো শুটিং হবে কলকাতায়।

অনেক দিন ধরেই ইফতেখার চৌধুরীর পরিচালনায় ‘লন্ডন লাভ’ নামে একটি ছবিতে অভিনয়ের কথা শোনা যাচ্ছিল। তার খবর কী?
এই ছবির জন্য মাঝে দুবাই গিয়েছিলাম। মুখে মুখে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু চুক্তি হয়নি এখনো। এ মাসেই প্রযোজকের বাংলাদেশে আসার কথা আছে। তা ছাড়া এখনো নায়িকা চূড়ান্ত হয়নি এই ছবির। সুতরাং এখনই এই ছবি নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।