ডলারের পাহাড়ে যেসব ছবি

>কিছু কিছু চলচ্চিত্র আছে, যেগুলো মুক্তির পরপরই বক্স অফিসে সুনামি শুরু হয়ে যায়। এসব ছবির আয় এতই বেশি যে তা আক্ষরিক অর্থেই গড়েছে ডলারের পাহাড়। পরে এসব ছবির সিক্যুয়াল-প্রিক্যুয়াল তৈরি হয়েছে। তাতেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুপ্রসন্ন ছিলেন ভাগ্যদেবী। ফলে বিনিয়োগকারীর সিন্দুকে জমে কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার। আয়ের দিক থেকে শীর্ষে থাকা এমনই কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবির কথা জানাচ্ছেন অর্ণব সান্যাল
মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম
মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম

মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স 

বিশ্বব্যাপী আয়
২ হাজার ২৫৯ কোটি ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭ ডলার 

মার্ভেলের জগতে কে নেই? আয়রন ম্যান, ক্যাপ্টেন আমেরিকা, গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি ইত্যাদি ইত্যাদি। এত অতিমানবের মেলা জমিয়ে বেশ কামাই করেছে মার্ভেল। ওপরে আয়ের সংখ্যাটি তো দেখছেন। একটু কষ্ট করে গোনা শুরু করুন, তাহলেই বুঝবেন ডলারের পাহাড় কতটা উঁচু! এতে স্ট্যান লির তৈরি প্রায় সব সুপারহিরোর অবদান আছে। ব্ল্যাক প্যান্থার, ক্যাপ্টেন মার্ভেলরাও কম যায় না। তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে ‘অ্যাভেঞ্জার’ সিরিজের ছবিগুলো। চলতি বছর শুধু অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম আয় করেছে প্রায় ২৮০ কোটি ডলার। সর্বকালের সবচেয়ে বেশি আয় করা চলচ্চিত্রে পরিণত হয়েছে এই ছবি। সামনে আসছে ব্ল্যাক উইডো–দের দিন। সুতরাং ‘এক নম্বর’ মার্ভেলকে আপাতদৃষ্টিতে টেনে নামানো বড়ই কঠিন।

স্টার ওয়ারস: রাইজ অব দ্য স্কাইওয়াকার
স্টার ওয়ারস: রাইজ অব দ্য স্কাইওয়াকার

স্টার ওয়ারস 

বিশ্বব্যাপী আয়
১ হাজার ৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৪ ডলার

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আনাচে-কানাচে কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ করেও মাটির পৃথিবীতে মার্ভেলের মতো ডলারের বন্যা তৈরি করতে পারেনি স্টার ওয়ারস। সবচেয়ে বেশি আয় করা ফ্র্যাঞ্চাইজির তালিকায় মার্ভেলের পর থাকলেও, প্রথমের তুলনায় পার্থক্য আকাশ-পাতাল। অবশ্য ২০১২ সালে ডিজনি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনে নেওয়ার পর থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলী ও গল্পে অনেক বৈচিত্র্য ও চমক এসেছে। নতুন চরিত্র নিয়ে নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে নিয়মিত বিরতিতে। বিশ্লেষকদের ধারণা, দ্রুতই মার্ভেলের সঙ্গে আয়ের দিক থেকে পাল্লা দিতে শুরু করবে ‘স্টার ওয়ারস’ ফ্র্যাঞ্চাইজি। গত ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘স্টার ওয়ারস’–এর নতুন সিক্যুয়াল দ্য রাইজ অব স্কাইওয়াকার। জেজে আব্রামস পরিচালিত এই ছবির আয় আর কিছুদিনের মধ্যেই ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

‘হ্যারি পটার’ সিরিজের দুই মূল চরিত্র
‘হ্যারি পটার’ সিরিজের দুই মূল চরিত্র

হ্যারি পটার

বিশ্বব্যাপী আয়
৯১৮ কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭২ ডলার 

জাদুর কাঠি হাতে, গোল ফ্রেমের চশমা পরা এক ছেলের গল্প। জে কে রাওলিংয়ের লেখা ‘হ্যারি পটার’ সিরিজের এই বইগুলো যেমন বেস্টসেলার হয়েছিল, তেমনি বক্স অফিসেও ঝড় তুলেছিল হ্যারি পটারকে নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম ছবি ছিল হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য সরসরাস স্টোন। ২০১১ সালে হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করেছিল। অঙ্কটি ছিল ১৩৪ কোটি ডলারের বেশি। ২০১৬ সাল থেকে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে মুক্তি পাচ্ছে ‘ফ্যান্টাস্টিক বিস্ট’ সিরিজের ছবিগুলো। চলতি বছরেই এই সিরিজের আরেকটি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ছবিতে আয়ও মন্দ হবে না। 

স্পাইডার–ম্যান
স্পাইডার–ম্যান

স্পাইডার-ম্যান 

বিশ্বব্যাপী আয়
৭২২ কোটি ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫৭ ডলার 

মাকড়সা-মানবের আয়ও মন্দ নয়। কমিক বই থেকে সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল ২০০২ সালের স্পাইডার-ম্যান ছবিটি। এরপর মাকড়সা-মানবের চরিত্রে অনেক অভিনেতাকেই দেখা গেছে। এখন আছেন টম হলান্ড। গত বছর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির মুক্তি পাওয়া সাম্প্রতিকতম ছবি স্পাইডার-ম্যান: ফার ফ্রম হোম বেশ ভালো ব্যবসা করেছে। বিশ্বব্যাপী ছবিটি আয় করেছে ১১৩ কোটি ডলারের বেশি। স্পাইডার-ম্যান–এর দিনকাল তাই ভালোই চলছে বলা চলে।

জেমস বন্ড
জেমস বন্ড

জেমস বন্ড

বিশ্বব্যাপী আয়
৭১১ কোটি ৯৬ লাখ ৭৪ হাজার ৯ ডলার 

এরই মধ্যে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে ‘জেমস বন্ড’ ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সিনেমার ট্রেলার। নতুন ছবির নাম নো টাইম টু ডাই। জেমস বন্ড চরিত্রে নতুন কে আসছেন—এমন আলোচনার মধ্যেই পুরোনো বন্ড ড্যানিয়েল ক্রেইগ হাজির হয়েছেন স্বমহিমায়। সেই ১৯৬৩ সালে ডক্টর নো সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু করেছিল ইয়াং ফ্লেমিং সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র ০০৭। তবে ড্যানিয়েল ক্রেইগ ‘জেমস বন্ড’–এ নাম লেখানোর পর থেকে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ছবিগুলো একদিকে যেমন সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছে, অন্যদিকে আয়েও জোয়ার এসেছে। নতুন ছবিটি কেমন ব্যবসা করে—এবার সেটিই দেখার পালা।

ফাস্ট অ্যান্ড িফউরিয়াস
ফাস্ট অ্যান্ড িফউরিয়াস

ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস

বিশ্বব্যাপী আয়
৫৯০ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ১২৯ ডলার 

দুরন্ত গতি, সঙ্গে দুর্দান্ত অ্যাকশন—এই নিয়ে ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস. ফ্র্যাঞ্চাইজি। বলা হয়, এই ফ্র্যাঞ্চাইজির নির্মাতারাও নাকি বক্স অফিসে এতটা সাফল্য আশা করেননি! অভাবিত সাফল্য পেয়ে অবশ্য তাঁরা কাজে ঢিলেমিও করেননি। আর তাই ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াসের জয়রথ ছুটছেই। গেল বছর মুক্তি পেয়েছে ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস প্রেজেন্টস: হবস অ্যান্ড শ। এই ছবি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৭৬ কোটি ডলারের বেশি। ২০২০ ও ২০২১ সালে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আরও দুটি চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। সুতরাং, ডলার আরও আসছে। 

দ্য লর্ড অব দ্য রিংস
দ্য লর্ড অব দ্য রিংস

দ্য লর্ড অব দ্য রিংস

বিশ্বব্যাপী আয়
৫৮৫ কোটি ৮০ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৪ ডলার 

এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আছে দুটি সিরিজ। একটি দ্য লর্ড অব দ্য রিংস, অন্যটি দ্য হবিট। দুই সিরিজ মিলিয়েই বিপুল আয় করেছে এ ফ্র্যাঞ্চাইজি। এখন পর্যন্ত এর ছয়টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে ২০০৩ সালের দ্য লর্ড অব দ্য রিংস: দ্য রিটার্ন অব দ্য কিং এবং ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া দ্য হবিট: অ্যান আনএক্সপেকটেড জার্নি। দুটো ছবিই বিশ্বব্যাপী শত কোটি ডলারের বেশি আয় করেছে।