'মনের মানুষ' খুবই বাজে একটি সিনেমা: অঞ্জন দত্ত

অঞ্জন দত্ত। ছবি: প্রথম আলো
অঞ্জন দত্ত। ছবি: প্রথম আলো

‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগান নিয়ে ১১ জানুয়ারি শুরু হওয়া অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিন ছিল গতকাল রোববার। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরে মাপনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের মধ্যে হাজির ছিলেন গায়ক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা অঞ্জন দত্ত। এদিন ছিল তাঁর জন্মদিন। সমাপনী দিনে ‘নেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ সেকশনে সেরা দর্শক জনপ্রিয়তা পুরস্কার পেয়েছে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ফাইনালি ভালোবাসা’। অনুষ্ঠানের একফাঁকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালোবাসা।

আপনার বিশেষ একটি দিনে ‘ফাইনালি ভালোবাসা’ ছবির জন্য সেরা অডিয়েন্সের পুরস্কার পেলেন। কেমন লাগছে?
আজ আমার জন্মদিন। এই দিনে আমার সেরা পাওয়া ঢাকা ১৮তম চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অডিয়েন্সের পুরস্কার। বাংলাদেশে গান দিয়েই আমার পরিচিতি। আমার ৫০ থেকে ৬০ ভাগ দর্শক বাংলাদেশের। এই দর্শক অনেক পরে আমার সিনেমা দেখেছে। তাদের কাছে আমার ‘ফাইনালি ভালোবাসা’ সিনেমাটি নিয়ে আসতে পেরে আমি খুবই গর্বিত।

প্রথমবার ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এসে কোন বিষয়টা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে?
কিছু ছোট ফেস্টিভ্যাল, যেগুলো খুবই ইউনিক হয়, ঠিক তেমনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এটি আমার কাছে আন্তর্জাতিক মানের মনে হয়েছে। এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে ছবি আসে, তরুণ-প্রবীণ নির্মাতার মিলনমেলা, বিভিন্ন দেশের সিনিয়র জুরি মেম্বর সেরা ছবিগুলো নির্বাচন করেন। এখানকার ফেস্টিভ্যাল পরিচালক, ভলান্টিয়ার—সবাই খুবই অমায়িক।

বাংলাদেশের সিনেমা কি দেখা হয়?
হ্যাঁ দেখি। তানভীর মোকাম্মেলের ছবি দেখেছি। তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ দেখেছি। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর শেষ সিনেমা বাদে সব কটিই দেখেছি। ফারুকীর ‘টেলিভিশন’ আমার অত্যন্ত প্রিয় ছবি।

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশনে সেরা দর্শক জনপ্রিয়তা পুরস্কার পেয়েছে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ফাইনালি ভালোবাসা’। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশনে সেরা দর্শক জনপ্রিয়তা পুরস্কার পেয়েছে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ফাইনালি ভালোবাসা’। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের অভিনেতাদের নিয়ে কি সিনেমা বানানোর ইচ্ছে আছে?
কথা হয়েছে, কিন্তু সেভাবে হয়ে উঠছে না। এ জন্য দুদিকের লোকেদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আমি চেয়েছি এখানে এসে পুরোটাই শুটিং করতে। তখন প্রশ্ন আসবে, আমার গভর্নমেন্ট কী পাচ্ছে? সেদিক থেকে তারা বাজেট কমিয়ে দিচ্ছে। এখানকার ওপর তখন চাপ পড়ছে। তখন আবার প্রশ্ন উঠবে, এখানকার ফিল্ম মেকাররা কেন ফিল্ম করবে না। সবাইকে আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এলে কাজ করব।

যৌথভাবে কিছু সিনেমা হয়েছে?
হয়েছে ‘মনের মানুষ’। যেটা খুবই বাজে একটি সিনেমা। লালনের ওপর বই পড়ে আমার মনে হয়েছে, ‘মনের মানুষ’ সিনেমা নিয়ে উনি (গৌতম ঘোষ) যে কাজ করেছেন, সেটা কিছুই হয়নি। ‘মনের মানুষ’ একটা কমার্শিয়াল ছবি।

বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের জন্য কী বলতে চান?
কমার্শিয়াল হয়ে যেয়ো না। স্রেফ টাকার জন্য সিনেমা বানিয়ো না। ভালো ছবিকে প্রোমোট করতে হবে। ভালো গল্প দর্শকদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। ভালো ছবির জন্য কথা বলে যেতে হবে।

ঢাকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে আপনার সেরা প্রাপ্তি কী?
এখানে এসে কিছু দেশের ফেস্টিভ্যাল পরিচালকদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তাঁরা আমার ছবিটি দেখে খুবই প্রশংসা করছেন। তাঁরা তাঁদের দেশে ছবিটি দেখাতে চাইছেন। এই সংযোগ একজন ফিল্ম মেকার হিসেবে আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।