গান, সিনেমা, ওয়েব প্রযোজনায় স্বাগতা

স্বাগতা। ছবি: সুমন ইউসুফ
স্বাগতা। ছবি: সুমন ইউসুফ

শীতের পোশাকে রীতিমতো ‘প্যাকেট’ হয়ে আসা জিনাত সানু স্বাগতার সঙ্গে প্রথম আলো কার্যালয়ে দেখা হতেই ‘হাই ফাইভ’ দিলেন। কারণ? আমাদের দুজনের নামই যে এক। সকাল সকাল গরম কফির উষ্ণতায় শুরু হলো ‘অভিনয়শিল্পী স্বাগতা’র সঙ্গে আড্ডা। কী করছেন আজকাল? যদিও প্রশ্নটা হওয়া উচিত ছিল, কী করছেন না? তিনি নায়িকা, গায়িকা, উপস্থাপিকা, অভিনয়শিল্পী, মডেল, নির্দেশক—এই সবই। জানালেন, ভালোবাসার আলো আঁধার, চিটার ডট কম, গোল্লাছুট নামের তিনটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নিমা রহমানের পরিচালনায় আরও একটি ধারাবাহিক নাটকে। ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে শুটিং।

ধারাবাহিকের বয়ান
গোল্লাছুটে তিনি তোতলা, একটু বোকা, সারা দিন কান্না করেন, এ রকম। চিটার ডট কমে তিনি চিটারের বউ। কীভাবে ডিল করেন চিটারকে? ‘যেভাবে লেখা থাকে। আমি তো চিটারের পক্ষে’—স্বাগতার সংক্ষিপ্ত উত্তর। ভালোবাসার আলো আঁধার নাটকে আবার তিনি খুবই লক্ষ্মী মেয়ে।

ওয়েব প্রযোজনায়
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হইচই–এর ভালোবাসা দিবসের বিশেষ আয়োজন ‘পাঁচফোড়ন’–এর জন্য গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত থ্রি কিসেস নামের একটি ওয়েব প্রযোজনায় দেখা যাবে স্বাগতাকে। সেখানে তাঁর চরিত্রটি একজন এমফিল শিক্ষার্থীর, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। এ ছাড়া পাপপুণ্য সিনেমায় তাঁকে দেখা যাবে ছোট্ট একটি বিশেষ চরিত্রে। নূরুল আলম আতিকের মানুষের বাগান ছবিতেও তিনি আছেন। সামনে শুরু করবেন ফাহিম কাদের পরিচালিত হীরার খোঁজে চাঁদের কাছে নামের ছবির শুটিং। এতে তিনি অভিনয় করবেন মুখ্য একটি চরিত্রে।

প্রায় একই সময়ে কীভাবে এত রকম চরিত্র হন, আবার ফিরে আসেন স্বাগতায়? উত্তরে স্বাগতা ফিরে গেলেন ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুতে, ‘২০০৫ সালে মডেল অন্বেষণের প্রতিযোগিতা ‘ইউ গট দ্য লুক’–এ বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই আমার অভিনয়জীবন শুরু। সেবার মান্না ভাইয়ের বিপরীতে শত্রু শত্রু খেলা ছবিটা করলাম। প্রমাণ করলাম, সিনেমা হিট করার জন্য স্বল্প পোশাক বা শরীর প্রদর্শন আবশ্যক নয়।’

অভিনয়ে যেভাবে

স্বাগতা ১৭ বছর ধরে শাস্ত্রীয় সংগীত শিখেছেন। পড়াশোনা করেছেন ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিষয়ে। স্কুলে যাওয়ার আগে থেকে স্বাগতা গান আর অভিনয়ের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে যাওয়া–আসা করতেন। যাঁর বেড়ে ওঠাই এভাবে, তাঁর কাছে আর অভিনয়ের প্রস্তুতি আর চরিত্রে ঢোকার প্রক্রিয়া নিয়ে কীই–বা জানতে চাই। তবুও প্রশ্ন করেই ফেললাম, ‘কবে থেকে বুঝলেন যে অভিনয়টা আপনাকে দিয়ে হবে?’ স্বাগতা বললেন, ‘সে এক মজার গল্প। তখন গরম ভাত অথবা নিছক ভূতের গল্প নাটকে আমার চরিত্র ছিল একজন হিস্টিরিয়া রোগীর। সে অদ্ভুতভাবে হাসতে হাসতে, কাঁদতে কাঁদতে কাদা থেকে উঠে কামড় দেয় তারিক আনাম খানের কানে। শুটিং শুরুর আগে তারিক আনাম খান বলেছিলেন, “তুই বেইলি রোডের মেয়ে, হিস্টিরিয়া রোগী তো দেখিসনি জীবনে। এই রোগী যা–তা করে।” আর শুটিংয়ের সময় কিনা সেই তারিক আনাম খানই ক্যামেরার সামনে ভয় পেয়ে গেছিলেন স্বাগতাকে দেখে। ভেবেছিলেন সত্যি সত্যি আমি কামড়ে দেব! সে কথা শুনে বুঝেছিলাম অভিনয়টা আমাকে দিয়ে হবে।’

নির্দেশক স্বাগতা

ইতিমধ্যে খ্যাতির বিড়ম্বনা নামে একটা মঞ্চনাটক নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাগতা। চলছে রবীন্দ্রনাথের কাল মৃগয়াকেদেশের মঞ্চে নামানোর কাজ। এর ফাঁকে ফাঁকে সেরে ফেলেছেন বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ। আর উপস্থাপনা তো আছেই। সঙ্গে সংসারটাও করছেন সমান তালে। স্বাগতার দিন কি ৪৮ ঘণ্টায় হয়? কে জানে!