ঢাকার মেয়রের ভূমিকায় শহীদুজ্জামান সেলিম

অর্ষার সঙ্গে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালারূপী মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত
অর্ষার সঙ্গে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালারূপী মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির হ্যামিলন শহরের মেয়র বাঁশিওয়ালার সঙ্গে বেইমানি করলেন। চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিলেন না। সে জন্য শহরের শিশুদের নিয়ে পাহাড়ের আড়ালে চলে গেলেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। সেই যে গেলেন, আর ফিরে এলেন না। এই গল্প তো আমাদের সবারই জানা! শরতের কোনো এক বৃষ্টিভেজা দিনে ঢাকার রাজপথে যদি হঠাৎ দেখা মেলে সেই হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার, তবে?

এরপর কী হলো—এ প্রশ্নের উত্তর পেতে দেখতে হবে ধারাবাহিক নাটক ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এখন ঢাকায়’। শিগগিরই এটি প্রচারিত হবে দেশের জনপ্রিয় একটি টিভি চ্যানেলে।

এক পর্দায় শহীদুজ্জামান সেলিম ও মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত
এক পর্দায় শহীদুজ্জামান সেলিম ও মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত

এই ধারাবাহিকের নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো রূপকথার গল্প বলতে চাই না। আমার উদ্দেশ্য ঢাকার মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, তাঁদের সংগ্রাম ও সমস্যার কথা বলা। তবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। রূপকথার চরিত্রগুলো এখানে রূপক।’

মূল চরিত্র হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার ভূমিকায় দেখা দেবেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ মোশাররফ করিম। তরুণ নির্মাতার এই নাটকের কোন দিকটি আপনাকে টানল? উত্তরে প্রথম আলোকে এ অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘গল্পটা ভালো লেগেছিল। এই বাঁশিওয়ালা এমন একটা শহরের স্বপ্ন দেখে, যেখানে প্রত্যেক মানুষ নিরাপদ। কোনো দুর্নীতি নেই। দুশ্চিন্তা নেই। মানুষ হাসে। এই স্বপ্ন তো সবার। কাজের অভিজ্ঞতাও ভালোই। মন দিয়ে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।’

শহীদুজ্জামান সেলিমকে দেখা যাবে ঢাকার মেয়রের ভূমিকায়। তিনি সারা রাত শহর ঘুরে ঘুরে মানুষের দুঃখ–কষ্ট দেখেন। এই মেয়রের অনুভব, এই শহরের মূল সমস্যা মিথ্যা। শহরের উন্নয়নের জন্য নৈতিকতা আর মূল্যবোধের চর্চা দরকার।

‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এখন ঢাকায়’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এখন ঢাকায়’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই নাটকের চিত্রনাট্যে একটা ফ্যান্টাসি ছিল। বাস্তবের সঙ্গে অবাস্তবের সমন্বয় ব্যাপারটা আমাদের নাটকে খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু নির্মাণ আবার সে রকম হয়নি। অন্য আট-দশটা নাটকের মতোই সাধারণ।’

প্রথমবার মেয়র হয়ে কেমন লাগল? শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘মেয়র চরিত্রের জন্য আমি আনিসুল হককে (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র) সামনে রেখেছি। তাঁকে ভেবেই অনুপ্রাণিত হয়েছি। আর আমি মাত্র দুদিন কাজ করেছি তো। তাই এই চরিত্র নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না।’

নাদিয়া আফরিন মিমকে দেখা যাবে আরেক রূপকথার চরিত্র, সিনড্রেলারূপে। এই সিনড্রেলার জুতা ধর্ষক ও নারী নির্যাতকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। শিক্ষিত ও দরিদ্র পরিবারের সন্তান অ্যালেন শুভ্রর স্বপ্ন পূরণ করবে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। অন্যদিকে ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করকে দেখা যাবে সাংবাদিকের ভূমিকায়, হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার কর্মকাণ্ড সরাসরি সম্প্রচার করতে।

ছোট পর্দায় দেখা যাবে, হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা ঢাকার মানুষের সুখ–দুঃখের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এভাবেই এগিয়ে যায় গল্প। যে গল্প মানুষকে হাসায়, কাঁদায় এবং ভাবায়। আবার কখনো কখনো হয়ে ওঠে শহরের মানুষের জীবনের গল্প।