আসিফ গাইতে চান পাঁচ হাজার গান

আসিফ আকবর।  ছবি: প্রথম আলো
আসিফ আকবর। ছবি: প্রথম আলো

প্রেমিকা হারানো একটি দুঃখের গান ২০ বছর আগে অচেনা এক তরুণকে পৌঁছে দিয়েছিল বাংলাদেশের ঘরে ঘরে। তখনকার তরুণদের প্রেমসংগীত যেন হয়ে উঠেছিল ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। আসিফের ভরাট কণ্ঠের সেই গান দিন-রাত বাজতে শুরু করেছিল দেশের পাড়া-মহল্লায়। রাতারাতি বদলে গিয়েছিল আসিফের জীবন।

২০০১ সালের ২৯ জানুয়ারি বাজারে আসে ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবামটি। এ বছর সেই গান ও অ্যালবামের মুক্তির ২০তম বর্ষপূর্তি। সেই অ্যালবামের ৬০ লাখ কপি বিক্রি হয়েছিল! জনপ্রিয়তার ২০তম বর্ষে এসে শিল্পী আসিফ আকবর জানালেন নিজের লক্ষ্যের কথা। নিজের গাওয়া পাঁচ হাজার গান শ্রোতাদের জন্য রেখে যেতে চান তিনি।

এরই মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি গান গেয়েছেন আসিফ আকবর। যদিও গায়ক যে হবেন একদিন, মোটেও ভাবেননি সে কথা। গানের নেশা আসিফকে কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। এতটাই অর্থকষ্টে ছিলেন যে খ্যাতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত ঈদের আনন্দ পর্যন্ত আসেনি তাঁর জীবনে।

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করেছেন আসিফ। গতকাল বুধবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গেয়ে যেতে চাই। আমার সঙ্গে ৫০-৬০ জন গীতিকার ও সুরকার আছেন, যাঁরা নিয়মিত গান তৈরি করছেন। হিসাব করেছি, ৫৫ বছর যদি সুস্থ থাকি, হাতে আছে দুই হাজার দিন। প্রতিদিনও যদি গেয়ে যাই, পাঁচ হাজার গান হবে না। তবে আমার খুব চাওয়া, আমার গাওয়া পাঁচ হাজার গান যেন থাকে। আমার মৃত্যুর পরও যেন সবাই আমার গান শোনে।’

ও প্রিয়া তুমি কোথায় অ্যালবামের প্রচ্ছদ
ও প্রিয়া তুমি কোথায় অ্যালবামের প্রচ্ছদ

অনেক গান গাইতে গিয়ে মান তো ঠিক রাখা সম্ভব নয়—এমন আশঙ্কায় আসিফ বলেন, ‘কিছুদিন আগেও যাচাই-বাছাই ছাড়া গান করেছি। অনুরোধেও অনেক গান গাইতে হয়েছে। আমার উপলব্ধি হয়েছে, মিউজিক ভিডিওই সব নয়। বছরে ছয়–সাতটা মিউজিক ভিডিও করব। বাকি সব হবে স্টুডিও ভার্সন ও লিরিক্যাল ভিডিও।’
এ বছর প্রথমবার লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন আসিফ। বইমেলায় আসছে তাঁর বই পোটকরা টু ম্যানহাটান। তিনি বলেন, ‘লেখালেখি আমার কাজ নয়, আমি পড়তে ভালোবাসি। আমাদের পরিবারের সবারই কমবেশি পড়াশোনার অভ্যাস আছে। অভ্যাসটা হয়েছে আম্মাকে দেখে।’
বইয়ের নাম নিয়ে আসিফ বলেন, ‘আমাদের গ্রামের নাম পোটকরা। আমার বাবা পিছিয়ে পড়া ওই গ্রামের ছেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট। বাবাকে অনুসরণ করে আমরা সবাই প্রতিষ্ঠিত। কুমিল্লা শহরে পড়াশোনা করে বেড়ে উঠলেও পোটকরার মাটির সোঁদা গন্ধ আজও আমার গায়ে লেগে আছে। আমার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত আমাদের একান্নবর্তী পরিবার ও গ্রামের মানুষ। পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছি গানের সুবাদে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটানে পৌঁছে নিল আর্মস্ট্রংয়ের মতো বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছি মনে মনে। পোটকরা গ্রামটাকে ভুলিনি।’
গত বছর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন আসিফ। গহীনের গান নামের ওই ছবির পর আর কোনো সিনেমায় দেখা যাবে না তাঁকে।