বঙ্গবন্ধুর চশমা দিয়ে এই দেশটা দেখব

কুমার বিশ্বজিৎ। ছবি: প্রথম আলো
কুমার বিশ্বজিৎ। ছবি: প্রথম আলো
>

এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। ৩০ জানুয়ারি ইউটিউব চ্যানেল গানছবি থেকে অবমুক্ত হলো ‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ–এর গাওয়া একটি গান। গানটির প্রসঙ্গ ধরেই কথা হয় কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে।

‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু’ গানটি নিয়ে জানতে চাই।
যে মানুষটির জন্য আমরা একটি পতাকা, একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি, তাঁর কাছে আমাদের অনেক ঋণ। সেই ঋণ শোধ করার সাধ্য আমাদের নেই। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি একটা সুযোগ পেয়েছি। যেহেতু আমি গানের মানুষ, তাই গানের মাধ্যমেই একটুখানি ঋণ শোধ করতে চাই।

এই গান তৈরির গল্পটি বলুন।
প্রায় আট মাস আগে গানটি পাই। আমি আর কোনো গান নিয়ে এতটা খুঁতখঁতে ছিলাম বলে মনে হয় না। এই গানটির মাধ্যমে তিন প্রজন্মের মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে। গানের গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার এক প্রজন্ম। আমি আর এই গানের সংগীতায়োজক মানাম আহমেদ, সমসাময়িক গানের সুরকার কিশোর দাশ নতুন প্রজন্মের। সুর করার পর মানাম ২২ দিন সময় নিয়েছে গানটির অর্কেস্ট্রেশন করতে। গানে এসরাজ বাজিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত মিউজিশিয়ান আরশাদ খান। ঢাকায় এসেছিলেন গানবাংলার উইন্ড অব চেঞ্জের রেকর্ডিংয়ে। তাঁকে পেয়ে গেলাম। তিনি গানটি সম্পর্কে জেনে বাজালেন বিনা পারিশ্রমিকে। বাঁশি বাজিয়েছেন জালাল। গানটির মিউজিক ভিডিওতেও যুক্ত হয়েছে নতুন প্রজন্ম। তাদের অনুভব করতে বলেছি, বঙ্গবন্ধুর চশমা দিয়ে দেশটি দেখতে বলেছি। তাহলে তারা প্রকৃত বাংলাদেশটি দেখতে পাবে। বঙ্গবন্ধুর চশমা দিয়ে এই দেশটা দেখব।

গানে গানে আপনি চার দশক নিজেকে ধরে রেখেছেন। নিজেকে ধরে রাখার জন্য আপনি কী কী বিষয় পরিচর্যা করছেন?
আমি যখন গান শুরু করেছি, সেটি ছিল সংগীতের স্বর্ণযুগ। আমাদের কষ্ট করে নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে হয়েছে। সব সময় মনে হয়েছে, সময়কে সময় দিলে নিশ্চয়ই সময়ও ভালো কিছু দেবে। আমার বেলায়ও তাই ঘটেছে। পরিচর্যার জায়গা বলতে সব সময় ভালো গান করার চেষ্টা ছিল। এখনো আছে।

আগে মানুষ পয়সা দিয়ে গান কিনে শুনত। আর এখন অনলাইনে ভিডিওসহ বিনা পয়সায় গান দিয়েও শ্রোতাকে গান শোনানো যাচ্ছে না। গান এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?
গান সব সময় দেখার, শোনার, উপলব্ধি করার। গানের কথায় কাব্যময়তা, অন্ত্যমিল, সাহিত্য এবং ভালো সুর থাকতেই হবে। কিন্তু এখন গান কি আর সেই জায়গায় আছে? এখন গান চলে গেছে যাঁরা বাণিজ্য করেন, তাঁদের হাতে। তাঁরা বৈশ্বিক বাজার ধরতে ঠিক করে দেন কী ধরনের গান করতে হবে। যে শ্রোতার জন্য এই গানগুলো করা, তাঁরা কেন এই গান শুনবেন? তাঁরা খাঁটি শিল্পীর গানই শুনতে চাইবেন। আমরা ‘ইয়ো ইয়ো’ টাইপ ওয়েস্টার্ন গান কেন প্রমোট করব? আমাদের লালন, হাসন, শাহ আবদুল করিমের গান ভাঙলেই তো যথেষ্ট।

সংগীতাঙ্গনে এখন একটা অস্থিরতা অনিশ্চয়তা। নতুন প্রজন্ম কীভাবে শ্রোতার কাছাকাছি পৌঁছুবে।
নতুন প্রজন্মের ভিশন ঠিক করতে হবে। অন্যের গান না গেয়ে, পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজের গান তৈরি করতে হবে। একটা গান দিয়েও আজীবন শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া সম্ভব।