তাপসী বললেন 'থাপ্পড়'-এর গল্প

তাপসী পান্নু
তাপসী পান্নু

পর্দায় যখনই তাপসী আসেন, তখনই ঝড় তোলেন। নাম শাবানা, বেবি, পিঙ্ক, সান্ড কি আঁখ, মুল্ক, বদলাসহ আরও অনেক ছবিতে দেখা গেছে তাঁর দাপুটে অভিনয়। শক্তিশালী নারী চরিত্র নিয়ে সিনেমা বানাতে গেলেই নির্মাতা সবার আগে ভাবেন তাপসী পান্নুর নাম। এমনই একটি ছবি থাপ্পড়। অনুভব সিনহা পরিচালিত এই ছবিতেও তাপসী এক প্রতিবাদী নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ছবির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। এ উপলক্ষেই তিনি কথা বলেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

‘থাপ্পড়’–এর গল্প

থাপ্পড় ছবিটি নারীর ওপর পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে তৈরি। ট্রেলারেই সবার মন জয় করেছেন পিঙ্কখ্যাত অভিনেত্রী তাপসী পান্নু। এর আগে অনুভব সিনহার সঙ্গে মুল্ক ছবিতে কাজ করেছিলেন তাপসী। সেখানেও অত্যন্ত শক্তিশালী চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আর্থিকভাবে অতটা সফল না হলেও তাপসীর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছিল দর্শক ও বোদ্ধাদের। সেই সফল ছবির নির্মাতা অনুভবের সঙ্গে আবার কাজ করা প্রসঙ্গে তাপসী বলেন, ‘শুধু গল্প আর চরিত্র আলাদা ছিল। বাকি সব একই রকম ছিল। একটা পুরোনো চিরচেনা পরিবেশে থাপ্পড়–এর কাজ করলাম।’

ব্যক্তিগত তাপসী

কথায় কথায় উঠে আসে ব্যক্তি তাপসীর কথা। ব্যক্তিজীবন নিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি কাজের প্রতি অবহেলা সহ্য করতে পারি না। কেউ নিজের কাজ যথাযথভাবে না করলে আমার খুব রাগ হয়। কত মানুষ কাজের আশায় বসে থাকে, কিন্তু কাজ পায় না। আবার অনেকে কাজের সুযোগ পেয়েও সেটার মূল্যায়ন করে। এসব অনিয়ম দেখলে আমি হুট করে রেগে যাই।’ এই রাগ থেকে কি কখনো কাউকে চড়–থাপ্পড় মেরে ফেলেছেন তাপসী? এই প্রশ্নে এসে তাপসী ফিরে গেলেন পারিবারিক শিক্ষার কাছে। বললেন, ‘জীবনে আমি কাউকে একটা চড়ও মারিনি। প্রয়োজন পড়েনি। কোনো ছেলে উত্ত্যক্ত করলে তাকে শাসন করার জন্য আমার চোখই যথেষ্ট ছিল। আমার মা–বাবাও আমাকে কখনো মারেননি।’

একটা সময় কিছুটা রাগী ছিলেন। চট করে রেগে যেতেন, কিন্তু বলিউডে আসার পর নাকি তাপসীর সহনশীলতা অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আগে আমি খুবই অস্থির প্রকৃতির ছিলাম, কিন্তু এই দুনিয়ায় পা রাখার পর সহ্যশক্তি বেড়ে গেছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বোধ হয় এখন আমি অনেক পরিপক্ব হয়েছি।’

বিতর্কের জবাব

সান্ড কি আঁখ ছবিতে ৩২ বছর বয়সী তাপসী পান্নু অভিনয় করেছেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার চরিত্রে। এ নিয়ে বলিউডের বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী কটাক্ষ করেছিলেন তাঁকে। এই সমালোচনার জবাবে তাপসী বলেন, ‘আমি বাইরের কারও কথা গায়ে মাখি না। কটূক্তি নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। নেতিবাচক বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রাখতে ভালোবাসি। আমি মনে করি, জীবন খুব ছোট। এসব বাজে বিষয়ের পেছনে সময় নষ্ট করার সময় আমার নেই। তবে নিজের প্রিয়জনেরা কেউ কিছু বললে তখন অবশ্যই গায়ে লাগে।’

কথায় কথায় তাপসী তাঁর অভিনয়জীবনের কিছু ভুলের কথাও আমাদের জানালেন। বললেন, ‘বলিউড ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমাকে বোঝানো হয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে হলে বড় বড় হিরোর সঙ্গে কাজ করতে হবে, কিন্তু পরে বুঝেছি আমি ভুল করছি। আমি এখন এমন ছবি করি, যা আমাকে টানে।’

যা আছে হাতে

তাপসী পান্নু এই মুহূর্তে ব্যস্ত নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম। একের পর এক ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি। এখন হাসিন দিলরুবা ছবির শুটিং চলছে। এরপর তাপসী ব্যস্ত হয়ে পড়বেন রশ্মি রকেট ছবি নিয়ে। আক্রশ খুরানা পরিচালিত এই ছবিতে তাঁকে দৌড়বিদের ভূমিকায় দেখা যাবে। আর তার জন্য তাপসীকে টানা তিন মাসের বিশেষ দৌড়ের প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে। তাপসী বলেন, ‘তিন মাসের প্রশিক্ষণের মাত্র এক মাস গেছে। এখন আমাকে দৌড়বিদদের মতো দেহগড়ন বানাতে হবে। রোজ দেড় ঘণ্টা করে অ্যাথলেট ও জিম ট্রেনিং নিচ্ছি। এর পাশাপাশি হাসিন দিলরুবা ছবির কাজও চালিয়ে যাচ্ছি।’ তাপসীকে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মিতালি রাজের বায়োপিক শাবাশ মিঠুতেও নামভূমিকায় দেখা যাবে। ইতিমধ্যে এই ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে এসেছে। রশ্মি রকেট শেষ হতে না হতে তাপসী দৌড়বিদ থেকে ক্রিকেটার হওয়ার মিশনে নামবেন।