মিশনভিত্তিক ছবি নির্মাণে ঝোঁক

মিশন এক্সট্রিম ছবিতে সাদিয়া নাবিলা ও আরিফিন শুভ।  ছবি: সংগৃহীত
মিশন এক্সট্রিম ছবিতে সাদিয়া নাবিলা ও আরিফিন শুভ। ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোমান্টিক অ্যাকশন-ঘরানার ছবি তৈরির চল দেখা গেছে ঢালিউডে। কিন্তু ২০১৭ সালে মিশনভিত্তিক ছবি ঢাকা অ্যাটাক সফল হওয়ার পর এ ধরনের চলচ্চিত্রের দিকে আগ্রহ দেখা গেছে নির্মাতাদের। ঢাকা অ্যাটাক-এর পথ ধরে তৈরি হচ্ছে মিশন এক্সট্রিম, মিশন এক্সট্রিম টু, শান, অপারেশন সুন্দরবন, গিরিগিটি ছবিগুলো।

এরই মধ্যে পুলিশ বিভাগের অভিযানকে কেন্দ্র করে ফয়সাল আহমেদ ও সানি সানোয়ার পরিচালিত মিশন এক্সট্রিম ও মিশন এক্সট্রিম টু ছবি দুটির শুটিং শেষ হয়েছে। আগামী দুই ঈদ—ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে ছবি দুটি। এম এ রাহিম পরিচালিত শান ছবির কাজ প্রায় ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। এই ছবিও পুলিশ বিভাগের অভিযানকে কেন্দ্র করে। র‌্যাবের অভিযানভিত্তিক ছবি দীপঙ্কর দীপন পরিচালিত অপারেশন সুন্দরবন ছবির প্রথম ধাপের শুটিং শেষ হয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানভিত্তিক ছবি সৌরভ কুণ্ডু পরিচালিত গিরিগিটির শুটিং চলছে পুরোদমে।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য, ঢাকার চলচ্চিত্রে ৭০ দশক থেকে একটা প্রথা চলে আসছে। যখন কোনো ধরনের ছবি জনপ্রিয় হয়, সে ধরনের ছবি তৈরির দিকে ঝুঁকে যায় ইন্ডাস্ট্রি। সেই ধারা কিছুদিন চলে। তাতে কিছু ছবি যেমন সফল হয়েছে, আবার কিছু ছবি ব্যর্থও হয়েছে।

প্রযোজক ও হল প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ঢাকা অ্যাটাক সফল হওয়ার কারণে মিশনভিত্তিক ছবিতে আগ্রহ বেড়েছে। তবে ছবিগুলোর একটি থেকে আরেকটিতে যদি নতুনত্বের ছাপ থাকে, তাহলে কিছুদিন এ ধরনের ছবি চলবে। তা নাহলেও সেই বেদের মেয়ে জোস্না ছবির মতো হবে। কারণ, বেদের মেয়ে জোস্না জনপ্রিয় হওয়ার পর ফোক-ঘরানার আরও ছবি তৈরি করা হয়েছিল, সব কিন্তু চলেনি।

ঢাকা অ্যাটাক ও অপারেশন সুন্দরবন ছবির নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন বলেন, ‘এ ধারাটি নতুন। ঢাকা অ্যাটাক সফল হওয়ার পর থেকে এই দিকে ঝুঁকছেন নির্মাতারা। তবে একটি ছবি থেকে আরেকটি ছবির গল্প, নির্মাণের ধরন ও বৈশিষ্ট্য আলাদা হতে হবে। তবে এই ধারা দিয়েই ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে না। নানা ধরনের ছবি বানাতে হবে।
মিশন এক্সট্রিম ছবির দুই পরিচালকের একজন ও প্রযোজক সানি সানোয়ারের মতে, পুলিশি অ্যাকশন থ্রিলার-ঘরানার ছবির বিশ্বব্যাপী চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশে ঢাকা অ্যাটাক ছবিটি মুক্তির আগে, তা বোঝা যায়নি। তিনি বলেন, ঢাকা অ্যাটাক ছবি মুক্তির পর বোঝা গেল, এ ধরনের ছবির বড় মার্কেট আছে বাংলাদেশেও। তবে এই পরিচালকের কথা, একই ধারার পরবর্তী ছবিগুলোতে একই আয়োজন, একই উপাদান থাকলে ছবি চলবে না। অবশ্যই নতুন কিছু থাকতে হবে।

এ ব্যাপারে নির্মাতা মতিন রহমান মনে করেন, মিশনভিত্তিক চলচ্চিত্রের এই নতুন ঘরানার ছবি যে কেউ চাইলেই বানাতে পারবেন না। এখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা লাগে। যাঁরা করছেন, তাঁরা সেই সহযোগিতা নিয়ে করছেন। বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন তিনি। মতিন রহমান বলেন, এখন সিনেমাকে কোনোভাবেই সাজানো যাচ্ছে না। দর্শকের প্রত্যশা পূরণ করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে যদি ভালো কাজ করা হয়, হোক। এটি সিনেমার জন্য ভালো। তবে অবশ্যই যেন কাজগুলো আলাদা হয়, সিনেমায় গল্প বলাটা যেন ঠিকঠাক থাকে।