মার্চে আসছে 'জনকের মুখ'

‘জনকের মুখ’ নামের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে ফারজানা ছবি। ছবি: সংগৃহীত
‘জনকের মুখ’ নামের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে ফারজানা ছবি। ছবি: সংগৃহীত

সাল ১৯৭৫। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি বাড়ি। সেই বাড়িতে থাকেন সোলেমানের মা, যে সোলেমান মারা গেছে মুক্তিযুদ্ধে, ১৪ আগস্ট। সেদিন থেকেই এই মা আর আঙিনার ফুলের সুবাস পায় না। পায় না পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণ। গত তিন বছরের মতো সেবারও ছেলের মৃত্যুর দিনে মা ফিরনি রাঁধে। কিন্তু পুড়ে যায় সেই ফিরনি। এ কি কোনো অশুভ সংকেত? ১৫ আগস্ট ভোররাতে সেই মা স্বপ্নে দেখে, তার সন্তান মরে পড়ে আছে। কালো কাপড়ে আচ্ছন্ন তাঁর সারা শরীর। ঘুম ভেঙে উঠে বুক ধড়ফড় করে এই মায়ের। তিনি ভাবেন, তাঁর একটাই সন্তান। দুবার মারা যায় কীভাবে?

সম্প্রতি শেষ হলো বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ওপর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জনকের মুখ’–এর শুটিং। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় ও মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন কমিটির আর্থিক অনুদানে নির্মিত এই ছবি পরিচালনা করেছেন মান্নান হীরা। ৩৫ মিনিট ব্যাপ্তি এই ছবির শুটিং হয়েছে ঢাকা, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের নন্দীগ্রাম, সোরল, ভাদুন, হারবাইদসহ বেশ কিছু গ্রামে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারজানা ছবি। শহীদ সোলেমান চরিত্রটি করেছেন সাক্ষ্য শহীদ।

শুটিংয়ের এক ফাঁকে পরিচালক বুঝিয়ে দিচ্ছেন দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
শুটিংয়ের এক ফাঁকে পরিচালক বুঝিয়ে দিচ্ছেন দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

কাজের অভিজ্ঞতা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফারজানা ছবি বলেন, ‘বেশকিছু দৃশ্যে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার কাল্পনিক কথোপকথন দেখানো হয়েছে। এই চরিত্রের বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব এবং অসীম শক্তির মাঝে আমি ব্যক্তি ছবিকে ভুলে ছিলাম। আমাকে বয়স এবং চিন্তায় অনেকটা সামনে এগোতে হয়েছে। কিন্তু গল্পের সময়টা আবার পেছনের, আমার অদেখা। সেসব অনুভব ধারণ করা আমার জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা, আর অভিনয় জীবনের একটা বড় প্রাপ্তি।’

বঙ্গবন্ধুর ছবির সঙ্গে কথা বলছেন সোলেমানের মা। ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধুর ছবির সঙ্গে কথা বলছেন সোলেমানের মা। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে পরিচালক জানিয়েছেন, কাজটি যেমনভাবে করতে চেয়েছিলেন, সেভাবেই হয়েছে। আগামী মার্চে দেশের মানুষ দেখতে পারবে ‘জনকের মুখ’। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত একজন শহীদের মায়ের জীবনের ছবি আঁকা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে। সন্তান মারা যাওয়ার পর যাঁর একমাত্র আস্থা, শক্তি আর অবলম্বন ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।