'ডেঞ্জারাস ভালোবাসার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল'

>

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বীর। কাজী হায়াতের জীবনের ৫০তম এই ছবির প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পী শাকিব খান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তি প্রতীক্ষিত এই ছবি, জীবনের প্রথম প্রেম এবং ভালোবাসা নিয়ে তাঁর ভাবনার কথা জানালেন

‘বীর’ ছবির ট্রেলার ও গান প্রকাশিত হয়েছে। যাঁরা গান ও ট্রেলার কিছুই দেখেননি, তাঁরা কেন ছবিটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে যাবেন বলে মনে করেন?
এটা পরিচালক কাজী হায়াতের মৌলিক গল্পের ছবি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবিতে একেবারে সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে। যার কিছু সংলাপ তো মানুষের মুখে মুখে। ছবিটি বর্তমান সময়ের কথা বলেছে। আমি মনে করি সেদিক বিবেচনা করে এই ছবিটি দেখবে। অতি সাধারণ গল্পের এই ছবিতে অতি সাধারভাবে বিষয়টা উপস্থাপন করা হয়েছে। কাজী হায়াতের আলাদা একটা স্টাইল আছে।

‘বীর’ ছবির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক কোনটি?
সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছবির গল্প। পরিচালক কাজী হায়াতের আলাদা একটা স্টাইল আছে। এই স্টাইল দেশের বেশির ভাগ মানুষের বেশ পছন্দের।

অনেকেই বলছে, আপনার ছবিটি রাজনৈতিক গল্পের। ভালোবাসা দিবসে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পেছনে কারণ কী?
ভালোবাসা দিবসে সব সবময় মানব–মানবীর প্রেমের কথা বলবে তা কিন্তু না। দেশপ্রেমের কথাও বলবে। আমার এই ছবিটি দেশপ্রেমের। পাশাপাশি ছবিতে রোমান্স তো থাকেই। এই ছবিতেও আছে। ‘তুমি আমার জীবন’ শিরোনামের রোমান্টিক গান তো সাড়াও ফেলেছে। তা ছাড়া বছরের শুরু থেকে প্রেক্ষাগৃহ মালিকেরাও ব্যবসায়িকভাবে খরায় ছিলেন। সেই ভাবনাও কাজ করেছে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আপনার প্রতিষ্ঠান এসকে বিগ স্ক্রিন এবং ‘বীর’ ছবির আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, এফডিসি তো গার্বেজ। চলচ্চিত্রের একজন প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রীর এটা শুনতে কেমন লেগেছে?
সত্যিকার অর্থে চলচ্চিত্রের অবস্থা নিয়ে আমরাও চিন্তিত। একটা সময় চলচ্চিত্রের অবস্থা যা ছিল, সেখান থেকে এই করুণ অবস্থা সত্যিই অনেককে ব্যথিত করে। আমরাই হয়তো গার্বেজ বলার অবস্থায় নিয়ে এসেছি বিধায় তিনি বলেছেন। দিন দিন আমাদের সিনেমা নির্মাণের হার কমে গেছে। প্রযুক্তির দিকটাও দুর্বল। তথ্য প্রতিমন্ত্রীর কথা চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত যাঁরাই উপস্থিত ছিলেন সমর্থন করছেন। আমরাই আমাদের লজ্জার জায়গাটা তৈরি করেছি। উত্তরণের পথও খুঁজে বের করতে হবে। পরিচিতজনদের অনেকের কাছ থেকে আমিও শুনেছি, তোমাদের সিনেমায় আছে কি? বছর বছর বিভিন্ন সংগঠনের নির্বাচন, দলাদলি, পিকনিক, ইফতার পার্টি, আর কীই–বা আছে। এসব শুনতে তো খারাপই লাগে। আর খারাপ লাগে বলেই আমার অবস্থান থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ঢাকা ক্লাবে আপনার ছবি মুক্তির অনুষ্ঠানে নায়িকা বুবলীকে দেখা যায়নি। এ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তাঁর না থাকার কারণটা কি?
এদিন ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই থাকতে পারেননি। এটা মূলত আমার প্রতিষ্ঠান এস কে বিগ স্ক্রিনের অনুষ্ঠান ছিল। পাশাপাশি ‘বীর’ নিয়ে আলোচনা ছিল। এর আগেও আমাদের ছবি মুক্তির সময় প্রচারণায় তিনি ছিলেন না। এটা যাঁর যাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এসব নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমি নিজেও আমার অনেক ছবি মুক্তির অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। থাকার বিষয়টা বাধ্যতামূলক কিছুও না।

ভালোবাসা দিবসে জানতে চাই, আপনার কাছে ভালোবাসা কী?
ভালোবাসা খুব রঙিন একটা বিষয়। ভালোবাসায় যখন মানুষ পড়ে তখন রঙিন একটা জীবন পায়। মানুষের মধ্যে অন্য রকম একটা আনন্দ কাজ করে। এই অনুভূতি তো আসলে বলে বোঝানো সম্ভব না। শুধু যিনি ভালোবাসেন তিনি এই অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারেন। ভালোবাসা ডেঞ্জারাস বিষয়ও। ভালোবাসাকে খুব সূক্ষ্মভাবে হ্যান্ডেল করতে হয়। একটু এদিক–সেদিক হলেই ভালোবাসা বিপজ্জনক হয়ে যায়। তাই বলতে চাই, ভালোবাসা খুব রঙিন, ভালোবাসা খুব ভয়ংকর।

এই যে বললেন ভালোবাসা ডেঞ্জারাস বিষয়ও, আপনার জীবনে এমন ডেঞ্জারাস ভালোবাসা এসেছিল কি?
শুধু আমি না, ডেঞ্জারাস ভালোবাসার সঙ্গে যে আমার দেখা হয়েছিল, এটা সবাই জানেন। ওই ভালোবাসার কথা আর বলতে চাই না।

এই মুহূর্তে কাউকে ভালোবাসেন কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারছেন না, সেই ভালোবাসার মানুষের নাম না বলে তাঁর উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
আমার কাছে মনে হয়, এখন আমার ছেলে আব্রামকে খুব বেশি ভালোবাসি। তাঁর সঙ্গে আমার দেখা–সাক্ষাৎ কম হয়।

কেন মেয়েরা বা নায়িকারা আপনার প্রেমে পড়ে বলে মনে করেন?
সত্যি কথা বলতে, সবার ভালোবাসা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতে ভালোবাসাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। শুধু মেয়েরা কিংবা নায়িকারা ভালোবাসে এমনটা নয়। ছোট বাচ্চারাও খুব আলতো করে যখন বলে, শাকিব খান, কী যে শক্তি পাই। আর কেন প্রেমে পড়ি, তা তো আমি জানি না। প্রেমে পড়ার কারণ খুঁজিও না।

কেউ কি কখনো বলেনি আপনার প্রেমে কেন পড়েন?
এই বিষয়ে তো কখনো কথা হয়নি।

জীবনে প্রথম প্রেমে কবে পড়েছিলেন?
ক্লাস নাইনে থাকতে প্রথম প্রেমের প্রস্তাব পাই। সে ছিল আমার ক্লাসমেট।

জীবনে কতবার প্রেমে পড়েছেন?
গুনে দেখিনি তো। অগণিত প্রেম। একজন মানুষের জীবনে প্রেম বারবার আসতে পারে।

ভালোবাসা দিবসের পরিকল্পনা কী?
বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। ভালোবাসা দিবসে যেহেতু ছবি মুক্তি পাচ্ছে, ছবি ঘিরেই ভালোবাসা থাকবে। গাড়িতে করে ঢাকা ও ঢাকার পাশের কয়েকটা প্রেক্ষাগৃহের সামনে ঘুরব। এর বাইরে অন্য কোনো ভালোবাসার নাম শুনলে আঁতকে উঠি। ভালোবাসা অনেক কিছু দিয়েছে, অনেক কিছু কেড়েও নিয়েছে। আমি মনে করি, অতিরিক্ত আবেগময় মানুষের জন্য ভালোবাসা মেইনটেন করা মুশকিল।

আপনি কি নিজেকে বেশি আবেগময় মনে করেন?
আমি অনেক বেশি আবেগময়। খুব ইতিবাচক মানসিকতার মানুষ।

অনেকের ঈদের ছবির পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আপনার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না?
পরিকল্পনা চলছে। ভাবছি কীভাবে কী করা যায়। কিছুদিনের মধ্যে ঈদের ছবি চূড়ান্ত করব।