সৃজিতের ঢাকা, মিথিলার কলকাতা

প্রথম আলো কার্যালয়ে সৃজিত-মিথিলা। ছবি: কবির হোসেন
প্রথম আলো কার্যালয়ে সৃজিত-মিথিলা। ছবি: কবির হোসেন

আজ বিবাহিত জীবনের প্রথম ভ্যালেন্টাইন পালন করছেন সৃজিত মুখার্জি ও মিথিলা। সম্প্রতি প্রথম আলোর স্টুডিওতে এক সন্ধ্যায় দেখা মিলল এই নবদম্পতির সঙ্গে। ভারতের কলকাতার প্রখ্যাত পরিচালক সৃজিত মুখার্জি বসে গালে হাত দিয়ে ‘ফেলুদা ফেরত’–এ টোটা রায় চৌধুরীর প্রশংসা করছেন, ‘ও কিন্তু খুব চেষ্টা করেছে। প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ফেলুদা হয়েছে। আমি যখন ওকে দৃশ্য বোঝাচ্ছি, ওর চোখমুখ বলে দিচ্ছিল, ও ফেলুদা।’ ওদিকে পাশেই সাজঘরে রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ব্যস্ত কেশসজ্জায়।

সৃজিতকে সামনে পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আমাদের এদিকে তো বলে শ্বশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি। আপনার কেমন বোধ হচ্ছে? উত্তর এল, ‘একদম ঠিক কথা। প্রতি বেলায় কমপক্ষে ১৫ পদ। সেটা মাঝেমধ্যেই ২১ পদে গিয়ে দাঁড়ায়। আর আমিও খেতে ভালোবাসি।’ জানালেন, দুপুরেও দাওয়াত রক্ষা করতে গেছিলেন। মিথিলার বোন মিম রশীদ ও ইরেশ যাকেরের সন্তান মেহা রশীদ যাকেরের মুখেভাত অনুষ্ঠান ছিল। সেখান থেকে ভরপেট খাওয়াদাওয়া করে এসেছেন প্রথম আলোর নিমন্ত্রণে।

প্রথম তাঁদের যোগাযোগ হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবি: প্রথম আলো
প্রথম তাঁদের যোগাযোগ হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবি: প্রথম আলো

তাই পরের প্রশ্নটা স্বাভাবিকভাবেই এ রকম, স্ত্রীর হাতের রান্না কেমন? মজা করে বললেন, ‘বিয়ের আগে তো অনেক শুনেছিলাম। এখনো সেভাবে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি।’ উত্তরটা ওপাশে মিথিলার কান এড়াল না। শোনা গেল, ‘এই, কী বললে? আমি তোমাকে কলকাতায় গিয়ে মাংস রেঁধে খাওয়াইনি?’ সৃজিত ঠিক মনে করতে পারলেন না। এভাবেই ফটোসেশনের পুরোটা সময় খুনসুটিতে মেতে ছিলেন এই নবদম্পতি। এই ধরুন, শাড়িটা যেন কিছুতেই ঠিকঠাক লাগছে না মিথিলার। সেটি বলতেই সৃজিত বললেন, ‘অপূর্ব লাগছে!’ আর মিথিলাও সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘আমাকে অপূর্ব কেন লাগবে? আমি তো মিথিলা।’

সৃজিত জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুরবাড়িই সেরা। ছবি: প্রথম আলো
সৃজিত জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুরবাড়িই সেরা। ছবি: প্রথম আলো

জাতিস্মর, রাজকাহিনী বা দ্বিতীয় পুরুষখ্যাত এই পরিচালকের কাছে জানতে চাইলাম, মিথিলা ছাড়া ঢাকার আর কী ভালো লাগে? এককথায় উত্তর এল, ‘ইলিশ’। পাশ থেকে নববধূ অনুযোগের সুরে বললেন, ‘আমি আর ইলিশ?’ তাই এবার একটু ভেবে সংশোধন করলেন, ‘খাবারের ভেতর ইলিশ, অনুভবের ভেতর আতিথেয়তা আর মানুষের ভেতর আইরা (মিথিলা–তাহসানের মেয়ে)।’ আর মিথিলার কলকাতার কী ভালো লাগে? মিথিলা জানালেন, তাঁর পুরো কলকাতা শহরটাই ভালো লাগে। কত বছরের পুরোনো ইতিহাস আর ঐতিহ্যের শহর।

খোলামেলা আলাপ চলল আলোচিত এই তারকা দম্পতির বিয়ের আগের ও পরের প্রেম, বর্তমান ব্যস্ততা, গুজব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব—সবকিছু নিয়েই। সেসব নিয়েও চলল তাঁদের ঠাট্টা–মশকরা। খবর রটেছিল, সৃজিত নাকি মিথিলাকে ৩ কোটি টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছেন। আর সৃজিতের মতে, এটিই তাঁর জীবনের সবচেয়ে ‘দামি’ গুজব। মিথিলা অবশ্য জানতে চাইলেন সেই গাড়ি এখন কোথায়। এর ভেতরেও বারবার সৃজিতের চোখ চলে যাচ্ছিল ছোট পর্দায়। সেখানে ২২ গজে ব্যাট হাতে খেলছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। এভাবেই নানা আলাপ আর হাসাহাসিতে কেটে গেল সন্ধ্যা।