টাকার অভাবে থেমে আছে রাসেলের ছবিটি

তিন বছর আগে ‘নৃ’ ছবির নির্মাতা রাসেল আহমেদ মারা যান। ছবি: সংগৃহীত
তিন বছর আগে ‘নৃ’ ছবির নির্মাতা রাসেল আহমেদ মারা যান। ছবি: সংগৃহীত

তিন বছর আগে ‘নৃ’ ছবির নির্মাতা রাসেল আহমেদ মারা যান। তখন থেকেই বেশ কয়েকবার ছবির সম্পাদনা-পরবর্তী কাজ শুরু হলেও অর্থাভাবে থেমে যায়। তবু ছবিটির কাজ শেষ করার স্বপ্ন দেখেন নির্মাতার স্ত্রী ইথেল আহমেদ। ‘নৃ’ ছবির শুটিং-পরবর্তী কাজ শেষ করতে ছবিটির পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন নির্মাতার স্ত্রী।

২০১৪ সালে ‘নৃ’ সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। নির্মাতার নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্ত্রীর সহযোগিতায় ২০১৭ সালেই নির্মাণকাজ শেষ করেন নির্মাতা রাসেল আহমেদ। চলচ্চিত্রটির পরবর্তী কাজের লগ্নিকারী পেতে অনলাইনে প্রথম টিজার মুক্তি দিয়েছিলেন নির্মাতা। সে সময় বেশ প্রশংসিত হয় ছবির টিজার। কিন্তু শুটিং প্রযোজনা-পরবর্তী কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাসেল আহমেদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালের ১৫ মে মারা যান। এরপর ছবিটির কাজ শেষ করার দায়িত্ব নেন স্ত্রী ইথেল আহমেদ। একদিকে ছবির জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ, অন্যদিকে ছবির কাজ চালিয়ে যাওয়া—দুটি সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয় তাঁকে। তবু ইথেল সিনেমাটি মুক্তি দিতে চান।

‘নৃ’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘নৃ’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

আর্থিক সংকটে এখনো সম্পাদনা, কালার গ্রেডিং, ডাবিংয়ের কাজগুলো থেমে আছে। ইথেল আহমেদ বলেন, ‘আমার স্বামী (নির্মাতা রাসেল আহমেদ) তাঁর সব সঞ্চয় এবং ধারদেনা করে ছবিটির শুটিং শেষ করেছিলেন। রাসেল “নৃ” ছবিটি নিয়ে অনেক আশাবাদী ছিলেন। অনেক সংকটের মধ্য দিয়েও শুটিং শেষ করেছেন। আমাদের অল্প কিছু আর্থিক সহযোগিতা দরকার। এখন তো অনেক লগ্নিকারী আছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ এগিয়ে এলে “নৃ” সিনেমার মধ্যে দিয়ে সিনেমাপ্রেমী মানুষটা বেঁচে থাকবেন।’

‘নৃ’ ছবিটির সঙ্গে প্রথম থেকেই যুক্ত ছিলেন শাহরিয়ার শাওন। তিনিও চেষ্টা চালাচ্ছেন সিনেমাটির কাজ শেষ করতে। শাহরিয়ার শাওন জানান, ‘সম্পাদনার কাজ নিয়েই বারবার পিছিয়ে আসতে হচ্ছে। একটি চলচ্চিত্রের সব কাজ শেষ করা যেমন বেশ সময়সাপেক্ষ, তেমনি শুরু করার জন্য কিছু টাকা দরকার। আমরা যারা সিনেমাটির সঙ্গে প্রথম থেকেই যুক্ত সবাই মিলে চেষ্টা করছি বাকি কাজ শেষ করতে। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে অর্থ ছাড়া শুধু পরিশ্রম দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না।’

‘নৃ’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘নৃ’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

রাসেল আহমেদ প্রথম ২০১২ সালে ছবিটির চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেন। পরের বছর ২০১৩ সালের প্রথম দিকে নির্মাতা প্রথম বরিশালে প্রাথমিকভাবে শুটিংয়ের কাজ শুরু করেন। এরপর অনেকবার অর্থনৈতিক কারণে থেমে যায় শুটিং। ‘নৃ’ ছবির গল্পে রাসেল আহমেদ বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে এক ফ্রেমে নিয়ে এসেছেন। তাদের জীবন ও দর্শনকে গল্পে প্রাধান্য দিয়েছেন বলে জানান নির্মাতার স্ত্রী ইথেল আহমেদ। ‘নৃ’ চলচ্চিত্রের জন্য নির্মাতা তাঁর নিজের জেলা বরিশালকে লোকেশন হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।