আমি মিথ্যা বলতে চাই না: ভিকি কৌশল

>উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছবির এক বছর পর আবার পর্দায় আসতে চলেছেন ভিকি কৌশল। ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই অভিনেতাকে এবার নবাগত পরিচালক ভানু প্রতাপ সিংয়ের ভৌতিক ছবিতে দেখা যাবে, নাম ভূত: দ্য হন্টেড শিপ। এটি মুক্তি পাবে আগামীকাল। এর পরপরই দুটি বায়োপিকে অভিনয় করবেন তিনি। সম্প্রতি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধর্ম প্রডাকশনের মুম্বাইয়ের কার্যালয়ে ভিকি কৌশলের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।

ভিকি কি ভূতকে আদৌ ভয় পান? 
ভিকি:
পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর গ্রামে আমাদের বাড়ি। ওখানে গেলে ভূতের ভয় আমাকে পেয়ে বসে। আসলে গ্রামের পরিবেশ এমন যে ভয় করবেই। তবে ভূতের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ কখনো হয়নি। ভূতকে ভয় পেলেও ভৌতিক ছবি দেখতে খুব উপভোগ করি। তবে একা ভূতের ছবি দেখি না। রাতে আমার বাড়িতে সব বন্ধু এলে একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখি। আমি তো অর্ধেক ছবি দেখি চোখ বালিশ দিয়ে চেপে রেখে। সর্বশেষ ভূতের ছবি দেখেছি অ্যানাবেল কামস হোম। এত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে পরে ১০ মিনিট আন্দাজ আপনা আপনা ছবিটা দেখে তারপর ঘুমাতে হয়েছে। 

হঠাৎ ভূতের ছবিতে অভিনয় করার কারণ কী? 
ভিকি:
ধর্ম প্রডাকশন থেকে যখন আমাকে বলা হলো এই ভৌতিক ছবির কথা, তখন আমি একটু অবাক হই। ভেবেছিলাম, নিশ্চয় এই ভূতের ছবি নাচগানে ভরপুর হবে। আমি সাধারণত রাতে চিত্রনাট্য পড়ি। আর একবারেই পড়ি। এই ছবির চিত্রনাট্য পড়ার সময় আমি এতটাই ভয় পেয়েছিলাম যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি ছবিটা আমি করবই। একজন অভিনেতা হিসেবে নতুন নতুন ঘরানায় নিজেকে আবিষ্কার করার সেরা সময় এখন। আমার কাছে মনে হয়, ভৌতিক ছবিতে অভিনয় করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। এখানে আমার সহ–অভিনেতা একজন ভূত। যাকে দেখা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়। এ কারণে আমাকে অভিনয়ের অনেক সূক্ষ্ম বিষয় মাথায় রাখতে হয়েছিল। আমার অভিব্যক্তি এমন রাখতে হয়েছে, যাতে দর্শক যেন ভয় পান। আবার অতি অভিনয়ও যেন মনে না হয়। 

ভিকি কৌশল
ভিকি কৌশল

বলিউডে এ সময়ের সফল অভিনেতাদের মধ্যে আপনি একজন। আপনার কাছে সফলতা কী? 
ভিকি: সফলতার হাত ধরে খ্যাতি আসে। তারকাজীবনে দুটিই খুব মজাদার ও আপেক্ষিক। কারণ, দর্শক আপনাকে সবকিছু দিতে পারেন, আবার মুহূর্তেই তা কেড়েও নিতে পারেন। তাই এটা আপেক্ষিক। সাফল্য ও খ্যাতি কখনোই স্থায়ী নয়। সবকিছু নির্ভর করে কাজের ওপর। আমিও সফলতাকে উপভোগ করি। তবে কখনো তা মাথায় চড়ে বসতে দিই না। বাবা-মায়ের চোখে যখন একরাশ খুশি দেখি, এটাই আমার কাছে আসল সফলতা। এ ব্যাপারে আমি সত্যি ভাগ্যবান। অনেক বাবা-মা তাঁদের সন্তানের সাফল্যের ভাগীদার হওয়ার সুযোগ পান না। আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকি। আমার বাবা-মা ও বন্ধুদের সঙ্গে ফিল্ম নিয়ে কখনো আলোচনা করি না। আমার পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গ আমাকে আনন্দ দেয়। 

এখন বায়োপিকে অভিনয় করছেন। একসঙ্গে দুটি বায়োপিকে কাজ করা কতটা কঠিন?
ভিকি: শ্যাম মানেকশ ও উধম সিং—এই দুটি বায়োপিকে আমি অভিনয় করছি। বায়োপিক একজন অভিনেতার কাছে অনেক বড় দায়িত্বের। এখানে এক সুতাও যেন এদিক–সেদিক না হয়, তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হয়। মানেকশ একজন সেলিব্রেটি সেনা কর্মকর্তা। ছবির শুটিংয়ের আগে আমার বাবা-মা তাঁর সম্পর্কে অনেক কথা আমাকে বলেছেন। আমার প্রতিবেশীর কাছে মানেকশর একটা অটোগ্রাফ আছে। তিনি সেই অটোগ্রাফ আমার হাতে তুলে দিয়েছেন, যাতে ছবিতে আমি স্বাক্ষর দিলে তা হুবহু মানেকশর মতো হয়। আমি চিত্রনাট্য পড়ার সময় তাঁর সম্পর্কে অনেক জেনেছি। পরপর বায়োপিকে অভিনয়ে করতে করতে আমি বোধ হয় ভিকিকেই হারিয়ে ফেলব! 

‘উধম সি’ বায়োপিকটির পরিচালক সুজিত সরকার। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
ভিকি: সুজিত সরকার আমার স্বপ্নের পরিচালক। আমি সব সময় তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি। আমরা সম্প্রতি ছবির শুটিং শেষ করেছি। সুজিত সরকারের কাছ থেকে আমি ফিল্ম মেকিং এবং অভিনয়–সংক্রান্ত অনেক কিছু শিখেছি। তিনি খুবই সাদামাটা, সহজ-সরল মানুষ। উধম সিং ছবির জন্য সুজিত সরকার ১৫ বছর অপেক্ষা করেছেন। কারণ, তাঁর কাছে ছবিটি নির্মাণ করার জন্য বাজেট ছিল না। 

ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে নানান গুঞ্জন শোনা যায়। এ ব্যাপারে আপনি কী বলতে চান? 
ভিকি: (লাজুক হাসি হেসে) আমি এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে চাই না। আগে আমি আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে অনেক খোলামেলা ছিলাম। এখন আমি আমার ব্যক্তিজীবন আড়ালে রাখতে চাই। কারণ, আমি মিথ্যা বলতে চাই না। কারণ, একটা মিথ্যা থেকে শত মিথ্যা জন্ম নেবে। তাই আমি মনে করি না যে এ বিষয়ে কথা বলার এটা সঠিক সময়।