মেকআপেই ছয় ঘণ্টা পার

হেদায়েত নান্নু ও রাশেদ মামুন। ছবি: সংগৃহীত
হেদায়েত নান্নু ও রাশেদ মামুন। ছবি: সংগৃহীত

নাটকের গল্পটা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে, যাঁরা বেশভূষা ও সাজসজ্জায় আলাদাভাবে নজর কাড়েন। সেই সাজ পর্দায় ঠিকঠাক ফোটাতে রূপসজ্জাকারীকে বেশ বেকায়দায় পড়তে হলো। পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ব্যয় করতে হলো রূপসজ্জা করতে। তবুও রূপসজ্জাকারী নির্মাতার মন পাচ্ছিলেন না। পুরো শুটিং টিম তখন অলস বসে। আরও কয়েক দফা মেকআপ করার পর অবশেষে নির্মাতার মনে ধরল। এ কারণে নির্মাতাকে পড়ন্ত বিকেলে বলতে হলো ‘অ্যাকশন’।

রাশেদ মামুন। ছবি: সংগৃহীত
রাশেদ মামুন। ছবি: সংগৃহীত

এতে শুধু সময় ব্যয় হলো তা–ই নয়, নির্মাতাকে নিতে হলো অতিরিক্ত আরও একটি দিন। দুই দিনের জায়গায় শুটিং গড়াল তিন দিনে। নাটকের নাম ‘আনসিন স্টোরি’। অনেকগুলো খণ্ড ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মূল গল্পটি লিখেছেন রূপক বিন রউফ, পরিচালনাও তাঁর। তিনি বলেন, ‘চিত্রনাট্য লেখার সময় আমার চোখের সামনে চরিত্রগুলো ভাসছিল। সেটা রূপসজ্জাকারীকে বারবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেকআপ করার পর মনে ধরেনি। মনে হয়েছে, মেকআপে কোথাও যেন একটা ঘাটতি আছে। এরপর প্রায় দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে মেকআপ ঠিকঠাক মনে হয়। তারপর শুটিং শুরু করি। এ কারণে নির্দিষ্ট শিডিউলের বাইরেও আরও এক দিন শুটিং করতে হয়।’

নাটকটিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে অভিনয় করেছেন রাশেদ মামুন ও হেদায়েত নান্নু। সাত বছর আগে ‘কমন জেন্ডার’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাশেদ। ছবিটি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে ছিল। তখন কাছ থেকে তাঁদের তিনি দেখেছেন, তাঁদের গল্প শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘“কমন জেন্ডার” ছবিতে অভিনয় করার সুবাদে এই মানুষদের কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়। তখন তাঁদের দেখেছি। এমন চরিত্রে অভিনয়ের সময় তাঁদের কথা বলার ধরন, মুখের এক্সপ্রেশন, হাঁটা, হাতের ব্যবহার—সবকিছু খেয়াল রাখতে হয়। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় সাজসজ্জা নিয়ে। কারণ, একদম নিখুঁত মেকআপ ছাড়া চরিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয় না।’

এমন গল্প নিয়ে নাটক নির্মাণ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জীবনের মধ্যে অনেক চমৎকার কিছু গল্প থাকে। প্রেমের মধ্যেও যে গভীর রক্তক্ষরণ থাকে, সেটা এই গল্পের মূল উপজীব্য। আমরা বাইরে যেভাবে দেখি, তার আড়ালে তাদের কিছু গল্প আছে। সেটাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নাটকে সাহারা ও হিরা নামের দুজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের গল্প দেখানো হয়েছে।’