'লাইকে' এগিয়ে যাঁরা

তারকাদের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজের ছবি
তারকাদের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজের ছবি
একটা সময় ছিল যখন তারকা মানে ছিল অধরা এক কাঙ্ক্ষিত চরিত্র, যাকে ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না। কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে তারকা আর ভক্তদের সেই ব্যবধান এখন কমে গেছে। ভক্তরা সহজেই হয়ে যাচ্ছেন তারকাদের বন্ধু, কখনো অনুসারী। ফেসবুক দিয়ে এই দূরত্বমোচন শুরু হয়। এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা তারকাদের পাতায় (পেজে) পড়া লাইকের সংখ্যা দিয়ে ইদানীং মাপা হয় জনপ্রিয়তাও। আজ আমরা ফেসবুকে ‘লাইক’–এর হিসাবে এগিয়ে থাকা পাঁচ তারকার হিসাবটা দেখে নিই। লিখেছেন মনজুরুল আলম

পরীমনি নিজেই জানতেন না

বাংলাদেশের তারকাদের মধ্যে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি অনুসারী নিয়ে ১ নম্বরে আছেন নায়িকা পরীমনি। তাঁর ব্যবহৃত ফেসবুক পাতায় লাইকের সংখ্যা ৮৮ লাখ ৩৬ হাজার। তাঁর অনুসারীর (ফলোয়ারের) সংখ্যা ৮৮ লাখ ৬০ হাজার। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের কাজ থেকে শুরু করেন, একান্ত মুহূর্তটিও সবার সামনে তুলে ধরেন পরীমনি। সেসব পেশাগত ও ব্যক্তিগত ছবিতে ভক্তদের লাইকের সংখ্যাও প্রচুর। তবে গত এক বছরে পেশাগত ছবির চেয়ে পরী তাঁর ব্যক্তিগত স্থিরচিত্রই বেশি প্রকাশ করেছেন নিজের পেজে। ‘লাইক’ আর অনুসারীর দিক থেকে এগিয়ে থাকা নিয়ে পরী বলেন, ‘বাহ, এত ভক্ত আমার। আমি নিজেই জানতাম না। এটা তো দারুণ খবর।

ছবিতে ফারিয়ার সাড়া বেশি

নুসরাত ফারিয়ার ক্যারিয়ার শুরু হয় আরজে (রেডিও জকি) হিসেবে। অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করতেন। এরপর আসেন অভিনয়ে। সিনেমায় নাম লেখানোর পর থেকেই চালু করেন নিজের ফেসবুক পেজ। এই নায়িকার ফেসবুক পাতায় বর্তমান লাইকের সংখ্যা ৭০ লাখ ৫২ হাজার (গত মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে)। এই অভিনেত্রীকে অনুসরণ করেন ৭০ লাখ ৬২ হাজার ভক্ত। প্রতিদিন বেশ কয়েকবার ফারিয়া নিজেই তাঁর পেজে ঢুঁ মারেন। নিজের কাজ এবং নিজেকেই প্রচার করেন বেশি। ২০১৫ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি সরব। ফেসবুক পাতায় কখনো তাঁকে দেখা যায় জিমে ব্যায়ামের ছবি পোস্ট করছেন, কখনো আবার বেশ কয়েকবার খোলামেলা ছবি দিয়ে উঠে আসেন আলোচনায়, আবার কখনো তাঁকে পাওয়া যায় পাশের বাড়ির পরিপাটি মেয়েটির মতো। 

তাহসানের ডায়েরি

ভেরিফায়েড পেজ

নাটক, সিনেমা ও গান, এই তিন মাধ্যমে সরব তাহসান। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও এগিয়ে আছেন তিনি। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পাতায় নিয়মিত তাহসান নিজের সব খবর তুলে ধরেন। কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে দেখা করছেন, কাজ করছেন কোন প্রকল্প নিয়ে—তাঁর পুরো পদাঙ্ক ফুটে ওঠে ফেসবুকের পাতায়। জাপান সফর থেকে শুরু করে গ্র্যামি দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পর্যন্ত তাহসান তাঁর অভিজ্ঞতা মন খুলে ফেসবুক পাতায় তুলে ধরেন। ২০০৭ সালে নিজের ফেসবুক পেজটি চালু করেছিলেন। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত এই পেজে লাইকের সংখ্যা ছিল ৬৭ লাখ ৯০ হাজার। তাঁকে অনুসরণ করেন ৬৮ লাখ ৪৩ হাজার জন। গত এক বছরের মধ্যে দ্য ব্রেকার পাম বিচে তোলা তাহসানের একটি ছবি তাঁর অনুসারীরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন, তাতে লাইকের সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজার।

তাহসান তাঁর পেজটি সম্পর্কে বলেন, ‘ভক্তদের জন্যই এত দূরে এসেছি। লাখ লাখ ভক্তের ভালোবাসায় আমি সিক্ত। তাঁদের ভালোবাসা নিয়েই আগামী দিনটা পার করতে চাই।’

১০ বছরে আসিফের ৩২ লাখ

সংগীতশিল্পী আসিফের ফেসবুক পাতায় লাইক আছে ৩২ লাখ ২১ হাজার। এই হিসাব৩ মার্চ পর্যন্ত পাওয়া। তাঁকে অনুসরণ করেন ৩২ লাখ ৪২ হাজার জন। ২০১০ সালে আসিফ আকবর এই ফেসবুক পেজটি চালু করেন। তখন খুব বেশি সাড়া পাননি এই গায়ক। কারণ এর আগে থেকেই তাঁর নামে অনেকগুলো ভুয়া পেজ ভক্তদের বিভ্রান্ত করছিল। পরে আসিফের মূল পেজটি ভেরিফায়েড হলে বিভ্রান্তি কমে আসে, বাড়তে থাকে লাইক ও অনুসারীর সংখ্যা। ফেসবুকে আসিফ শুধু নিজের কাজই বেশি প্রচার করেন।

৪০ বছরের কর্মজীবন, ৪০ লাখ ভালোবাসা

এ বছর হানিফ সংকেতের কর্মজীবনের বয়স হতে যাচ্ছে ৪০ বছর। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে এই টিভি ব্যক্তিত্ব। এই জনপ্রিয়তা আঁচ করা যায় তাঁর ফেসবুক পাতার লাইকের দিকে তাকালেই। ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত এই উপস্থাপক, পরিচালক, নাট্যকার এবং লেখকের ভেরিফায়েড পেজে অনুসারীর সংখ্যা ৪৩ লাখ এবং লাইকের সংখ্যা ৪০ লাখ। হানিফ সংকেত বলেন, ‘আমি ফেসবুকে ভক্তদের সংখ্যাকে সব সময় মূল্যয়ন করি। এটা দেশের মানুষের ভালোবাসা।’ সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যম থেকে ভালো আয়ের সুযোগ থাকলেও সে পথে হাঁটেননি হানিফ সংকেত। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিজ্ঞাপন দিতে চান। কিন্তু এটা আমার পছন্দ না। এটা দর্শকদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’ ২০০৮ সালে চালু করা এই নিজের ফেসবুক পাতায় হানিফ সংকেত কখনোই কাজের বাইরে পরিবার বা ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করেন না।