করোনার প্রভাব বিনোদন অঙ্গনেও

নাবিলা, মোশাররফ করিম, নুসরাত ফারিয়া। ছবি: প্রথম আলো ও ইনস্টাগ্রাম
নাবিলা, মোশাররফ করিম, নুসরাত ফারিয়া। ছবি: প্রথম আলো ও ইনস্টাগ্রাম

চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে নেপালে কানামাছি ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে পিছিয়ে গেল ছবিটির কাজ। কারণ, নেপালেও ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। তাই ভ্রমণের ওপর নেপালে চলছে বিশেষ সতর্কতা। বিদেশে শুটিং শিডিউল দেওয়া এমন চলচ্চিত্র ও নাটকের শুটিং আটকে যাওয়ার খবর পাওয়া গেল সম্প্রতি।

কানামাছি ছবির নির্মাতা অঞ্জন আইচ বলেন, ‘শুটিং টিমের নিরাপত্তার জন্যই দৃশ্য ধারণ থেকে সরে এসেছি। নেপালেও আক্রান্ত রোগী আছে। নিরাপত্তার খাতিরে আমরা শুটিং বাতিল করেছি। নেপাল থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলেই আগামী মাসে শিডিউল করব।’

কানামাছি ছবিতে অভিনয় করছেন ইমন। তিনি বলেন, ‘করোনার প্রভাবে সিনেমার কাজ পিছিয়েছে। জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে।’

গত মাসে মিশন সিক্সটিন ছবির লোকেশন দেখতে থাইল্যান্ড যায় এই ছবির একটি দল। নির্মাতা শামীম আহমেদ দ্রুত দেশে ফিরে শুটিং লোকেশন পরিবর্তন করেন। এই মাস থেকে ছবিটির শুটিং থাইল্যান্ডের পরিবর্তে কলকাতায় শুরু হওয়ার কথা আছে।

সিনেমার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ছোট পর্দায়ও। বেশ কয়েকজন নির্মাতা ও প্রযোজক শুটিং বাতিল করেছেন। নির্মাতা ও অভিনেতা শামীম জামান একটি ধারাবাহিক ও তিনটি খণ্ড নাটকের দৃশ্য ধারণের পরিকল্পনা করেছিলেন মালয়েশিয়ায়। শেষ পর্যন্ত বিদেশের মাটিতে শুটিং পিছিয়ে দিয়েছেন এই নির্মাতা। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘনবসতির দেশ। আল্লাহ না করুক, যদি শুটিং করতে গিয়ে এই ভাইরাস কারও দ্বারা চলে আসে তাহলে পুরো দেশ হুমকির মধ্যে পড়বে। সেই জায়গা থেকেই আমরা সতর্ক হয়ে দেশের বাইরের গল্প বাদ দিয়ে দেশের গল্প নিয়ে এখন ভাবছি।’

তাঁর নাটকগুলোতে অভিনয় করার কথা ছিল অভিনেতা মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, রোবেনা রেজা জুঁইসহ অনেকের। মোশাররফ করিম বলেন, ‘একটু সতর্ক অবস্থার মধ্য দিয়েই আমরা চলছি। এই মুহূর্তে করোনা-আক্রান্ত দেশগুলোতে শুটিং করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।’

অভিনেতা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘প্রতি ঈদেই দেশের বাইরে শুটিং করি। এবারও প্রস্তাব এসেছিল, না করে দিয়েছি।’

মাস্ক পরে এভাবেই ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়েছেন অভিনয়শিল্পী নাবিলা (ডানে)।
মাস্ক পরে এভাবেই ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়েছেন অভিনয়শিল্পী নাবিলা (ডানে)।

এ ছাড়া শুটিং বাতিল করেছেন নির্মাতা অনিরুদ্ধ রাসেল, আহমেদ আলভীসহ বেশ কয়েকজন নির্মাতা। সাজু মুনতাসির, আলী বশির, বোরহান উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন প্রযোজকও শুটিং বাতিল করেছেন। সাজু মুনতাসির বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আমরা একদমই দেশের বাইরে শুটিং নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের প্রযোজক সমিতি থেকেও সহকর্মীদের নিষেধ করছি এই মুহূর্তে দেশের বাইরে কোনো রকম শুটিং না করতে।’

শুধু তা–ই নয়, করোনাভাইরাস প্রভাব ফেলেছে বিনোদনজগতের তারকাদের ওপরও। অনেকেই বিদেশসফর বাতিল করেছেন। যাঁরা দেশের বাইরে যাচ্ছেন, তাঁরাও বেশ সতর্ক। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি দিয়েছেন আয়নাবাজিখ্যাত অভিনয়শিল্পী মাসুমা রহমান নাবিলা। সেখানে নাবিলাকে দেখা গেছে মাস্ক পরা অবস্থায়। হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন ‘স্টে ইন সেফ’।

আরেক তারকা নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘এখনো করোনার প্রভাব আমার কাজের ওপর পড়েনি। কারণ, বেশ কিছুদিন আমি সুন্দরবনে একটি শুটিংয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। গতকালই আমার অংশের শুটিং শেষ করে ফিরেছি। আগামীকাল ভারতে শো করতে যাচ্ছি। দেশে ফিরে আরেকটি ছবির শুটিংয়ে অংশ নেব। আর দেশের বাইরে গেলে একটু সতর্কতার মধ্যে থাকতেই হবে।’

ছোট পর্দার অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। ঈদের কিছু নাটকের শুটিং দেশের বাইরে করার কথা ছিল। এই পরিস্থিতিতে একদমই দেশের বাইরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নাটক সবই দেশে শুটিং করছি।’