শাবনূরের দাবি, বিচ্ছেদের নোটিশের আগেই বিয়ে করেন স্বামী

শাবনূরের সঙ্গে একই মঞ্চে স্বামী অনীক মাহমুদ। ছবি: প্রথম আলো
শাবনূরের সঙ্গে একই মঞ্চে স্বামী অনীক মাহমুদ। ছবি: প্রথম আলো

চাইনিজ নাগরিককে বিয়ে করেছিলেন শাবনূর—এমন দাবি শাবনূরের স্বামী অনীক মাহমুদের। তবে অনীকের এমন দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শাবনূর। অনীক এ ধরনের কথা গণমাধ্যমে বলার পর শাবনূর দিলেন আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রথম আলোর কাছে পাঠালেন অনীকের আরেক বিয়ের তথ্য। পাঠানো কাগজ ঘেঁটে দেখা যায়, শাবনূর তাঁর বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠানোর ১৫ মাস আগে আয়েশা আকতার নামের একজনকে বিয়ে করেন অনীক। বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন বলেও জানান শাবনূর।

শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো
শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো

শাবনূর বলেন, ‘আমি আসলে এসব নিয়ে কথা বলতে চাইনি। অনীক আমাকে বাধ্য করেছে। আমি অনেক ভেবেচিন্তে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভাবছিলাম, বিষয়টা চুপচাপ শেষ হয়ে যাক, কিন্তু অনীকের কথাবার্তা মোটেও গ্রহণযোগ্য না। উল্টাপাল্টা কথা বলে দেশের মানুষ ও ভক্তদের কাছে আমার ইমেজ নষ্ট করতে চাইছিল, এমনটা তো হতে দিতে পারি না। আমি একটা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, আমাকে নিয়ে কোনো কথা বলে যদি বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়, তাহলে আমি কিন্তু আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে তিন দিন আগে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনীক মাহমুদ বলেছিলেন, শাবনূর ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হননি। বিয়ের প্রসঙ্গ জানতে সোমবার দুপুরে একাধিকবার ফোন করা হলে এবং খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।

শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো
শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো

শাবনূর জানান, তিনি বিয়ে করে ভুল করেছেন। পরিবারের সবাই বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, তাই তিনি বিয়ে করেছেন। শাবনূর বললেন, ‘আমারও বিয়ে করার ঝোঁক তৈরি হয়। এরপর বিয়ে করেছি। বিয়ের কিছুদিন পরই মনে হয়েছে, বিয়ে করে ভুল করেছি।’
শাবনূর তাঁর স্বামী অনীকের ব্যাপারে যেসব তথ্য পাঠিয়েছেন তাতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পাসপোর্টে দেওয়া তথ্য যাছাই করে দেখা গেছে, আয়েশা আকতার নামের একজন অনীক মাহমুদের স্ত্রী।

স্বামী অনীক মাহমুদের সঙ্গে ডিভোর্স চেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি নোটিশ পাঠিয়েছেন শাবনূর। গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় এসে এই সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে। বনিবনা না হওয়ার কারণেই সংসারে বিচ্ছেদ চেয়েছেন তিনি।

শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো
শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো

২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভালোবেসে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন শাবনূর ও অনীক মাহমুদ। বিয়ের পরের বছরই ২৯ ডিসেম্বর এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় ছেলেসন্তান আইজান নিহান। শাবনূরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ‘সন্তান জন্মের পর থেকেই অনীকের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। অনেক বিষয়ে মতের অমিল হচ্ছিল। এরপর আমরা আলাদা থাকা শুরু করি। ভেবেছিলাম, একটা সময় উপলব্ধিতে পরিবর্তন আসবে, কিন্তু তা আর হয়নি। এরপর অনীকের বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলি। অনেক চেষ্টার পরও বনিবনা হচ্ছিল না দেখে আলাদা থাকা শুরু করি। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে ২৬ জানুয়ারি তালাক নোটিশ অনীকের বাসায় পাঠাই।’

শাবনূর আরও বলেন, ‘অভিনয়ে এসে অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে সবার ভালোবাসার মানুষ হিসেবে তৈরি করেছি। সংসারজীবন শুরু করেছিলাম ভালো থাকার আশায়। চলচ্চিত্রে সবার ভালোবাসা পাওয়া আমার হয়তো সংসারজীবনের ভালোবাসা ভাগ্যে লেখা ছিল না। তাই সংসারজীবনে বিচ্ছেদ করতে হয়েছে। অনীকের পরিবার আছে, আমারও পরিবার আছে—দুজনেরই সমাজ আছে, সেখানে দুজন নিজেদের মতো করে থাকুক, এটাই চেয়েছি।’

জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনীক মাহমুদের সঙ্গে আংটি বদল করেন শাবনূর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তাঁরা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আইজান নিহান নামের এক ছেলেসন্তানের মা হন শাবনূর। ছেলেকে নিয়ে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন।