মাস্ক ছাড়া সিনেমা হলে ঢোকা যাবে না
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নানা রকম ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রেক্ষাগৃহগুলোও সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। প্রেক্ষাগৃহের প্রবেশদ্বারে দর্শককে থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা, টিকিট কাউন্টারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা, মাস্ক ও গ্লাভস পরে টাকা ও টিকিট আদান-প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে এই মুহূর্তে চলছে শাকিব খান অভিনীত দুটি ছবি—‘বীর’ ও ‘শাহেনশাহ’। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে চলছে পরমব্রত ও তিশার ‘হলুদ বনি’, আনিসুর রহমান মিলনের ‘চল যাই’ এবং নিরব ও প্রিয়াঙ্কার ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবিগুলো। গত শনিবার বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়ার খবরে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে কমে গেছে দর্শক।
গত শুক্রবার থেকে মধুমিতা সিনেমায় চলছে ‘শাহেনশাহ’। শুক্রবার ভালো চললেও শনিবার থেকে দর্শক কমে গেছে। এ প্রেক্ষাগৃহের স্বত্বাধিকারী ও প্রদর্শক সমিতির নেতা ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, প্রথম দিন এক লাখ টাকার ওপরে টিকিট বিক্রি হয়েছে। পরের দিনই ব্যাপক হারে দর্শক কমেছে। শাকিব খানের ছবি মোটামুটি প্রথম তিন দিন ভালো চলে। কিন্তু এবার দ্বিতীয় দিন থেকেই দর্শকখরা। বলাকা হলের ব্যবস্থাপক শাহিন হোসেন জানান, এমনিতেই শাকিব খানের ছবি তাঁদের প্রতিষ্ঠানে খুব একটা চলে না। তারপর আবার করানোভাইরাসের খবরে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। শ্যামলী সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আহাসানুল্লাহ বলেন, ‘শনিবার থেকে দর্শক কমে গেছে। মনে হয় এটা করোনাভাইরাসের প্রভাব।’
সিনেপ্লেক্সগুলোতে চলছে একাধিক ছবি। স্টার সিনেপ্লেক্স বসুন্ধরা ও সীমান্ত সম্ভারে দুটি বাংলা ছবি—‘হলুদ বনি’, ‘চল যাই’সহ চলছে বেশ কয়েকটি ইংরেজি ছবি। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাস ছড়ানোর খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সিনেপ্লেক্সে দর্শক কমেছে। এ রকম জনসমাগমে মানুষ আর এখন আসতে চাইছে না। যশোরের মণিহার, টঙ্গীর চম্পাকলি, রংপুরের শাপলা সিনেমা হল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
তবে এখনো যাঁরা সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন বা যাবেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ ও প্রদর্শক সমিতির নেতারা। সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা-আতঙ্ক বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষও কিছুটা শঙ্কায় আছে। তা ছাড়া সরকারিভাবে জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ কারণে সিনেমা হলেও দর্শক কিছুটা কমে গেছে।
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁরা নিজেরা মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করছেন, যাতে তাঁদের মাধ্যমে দর্শকের কোনো ক্ষতি না হয়। পাশাপাশি মিলনায়তনের প্রবেশদ্বারে ভাইরাস শনাক্তকরণ যন্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মিলনায়তনের দরজায় থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে দর্শকদের পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি মিঞা আলাউদ্দিন বলেন, ‘অনেক হলমালিকই এখন তাঁদের করণীয় জানতে ফোন করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে বলেছি, দর্শকদের মাস্ক পরে হলে আসতে হবে। মাস্ক ব্যবহার না করলে টিকিট বিক্রি করা হবে না। টিকিট ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া মিলনায়তনের প্রবেশমুখে থারমাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা করতেও বলেছি।’