পিচ্চি নায়িকা পূজা

>
পূজা চেরি।  ছবি: কবির হোসেন
পূজা চেরি। ছবি: কবির হোসেন
ভালোবাসার রং, তবুও ভালোবাসি, মোস্ট ওয়েলকাম–এর মতো ছবিগুলোয় শিশুশিল্পী ছিলেন পূজা চেরি। ২০১৮ সালে যৌথ প্রযোজনার ছবি নূর জাহান দিয়ে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ তাঁর, কিন্তু শিশুশিল্পী তকমা কিছুতেই ছাড়াতে পারেন না পূজা। পুরোদস্তুর নায়িকা হয়েও লোকের মুখে মুখে তিনি ‘পিচ্চি নায়িকা’ হয়েই থাকেন। শুরুর দিকে খুব বিরক্ত হতেন, কষ্ট পেতেন। তবে এখন নাকি আর খারাপ লাগে না পূজার। কেন? এর উত্তর জানার চেষ্টা করেছি আমরা। লিখেছেন শফিক আল মামুন।

প্রথম ছবি নূর জাহান–এর পর পূজা চেরি ফুরসত পাননি। এরপর তাঁকে দেখা গেছে পোড়ামন ২, দহন–এর মতো আলোচিত ছবির নায়িকা হিসেবে। পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর স্বীকৃতিও। ব্যক্তিজীবনে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে উঠেছেন কলেজে, কিন্তু এরপরও সেই ‘পিচ্চি নায়িকা’র আওয়াজ পিছু ছাড়েনি পূজার। তিনি বলেন, ‘নায়িকা হিসেবে যখন অভিনয় শুরু করি, তখন থেকে অনেকেই পিচ্চি নায়িকা বলে ডাকতেন। শুনে রাগ হতো, খুব মন খারাপ হতো। অনেক সময় পরিচিতজনেরা পিচ্চি নায়িকা বললে তাঁদের সঙ্গে ঝগড়াও করতাম।’

পূজার কথা, ছোটবেলা থেকে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। যখন কোনো নায়িকাকে অটোগ্রাফ দিতে দেখতেন, তখন হিংসা হতো। ভাবতেন, ‘ইশ্‌! যদি নায়িকা হতে পারতাম।’ কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ হলেও নায়িকা পরিচয়ের আগে ‘পিচ্চি’ বিশেষণ বড্ড উত্ত্যক্ত করত তাঁকে।

‘পিচ্চি’ বলার দিন শেষ

দহন ছবিতে কাজ করতে এসে একটু একটু পূজার ভেতর ভর করতে থাকে পরিপক্বতা। পূজা বলেন, ‘পোড়ামন ২ ছবিতে আলোচনায় আসা এবং দহন–এ অভিনয়ের পর থেকে সবার দৃষ্টিভঙ্গি একটু একটু করে বদলাতে থাকে। অভিনয়ে যে বয়সের প্রভাব পড়ে না, তা অনেকেই বুঝতে শুরু করেন। সিনেমাতে অভিনয় করার সময় আমাকে নায়িকার মতো লাগে না, এমন কথা কেউই বলতে পারবেন না। কারণ, আমি যখন অভিনয় করি, তখন একজন পরিপক্ব অভিনেত্রীর মতোই কাজ করার চেষ্টা করি।’

তবে এই নায়িকা জানান, এখনো মাঝেমধ্যে মজা করে কেউ কেউ ‘পিচ্চি নায়িকা’ বলে ডাকেন, কিন্তু পূজা শুরুর সময়ের মতো আর বিরক্ত হন না, বরং উপভোগই করেন। হাসতে হাসতে পূজা বললেন, ‘কত নায়িকাই তো তাঁদের বয়স কমাতে চান। সেখানে আমার বয়স লোকে মুখে মুখেই কমিয়ে রাখছেন। এতে তো আমারই সুবিধা হবে । হা হা হা...।’

বড় নায়কের নায়িকা

খুব অল্প সময়েই ঢালিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন পূজা চেরি। প্রযোজক ও পরিচালকদেরও আগ্রহ বেড়েছে তাঁকে ঘিরে। তাঁর হাতে এখন বেশ কয়েকটি ছবি। শান, জ্বীন, সাইকো—তিনটি ছবির কাজ শেষ। আগামী ঈদ থেকে পর্যায়ক্রমে ছবিগুলো মুক্তি পাবে। মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা ছবিগুলো নিয়ে পূজা বলেন, ‘ছবিগুলো নিয়ে আমি আশাবাদী। এগুলো বড় পরিসর, বড় বাজেটের। প্রতিটি চরিত্রের জন্য আমাকে পরিশ্রম করতে হয়েছে।’

এক নায়িকার চার নায়ক

কলকাতার আদ্রিত থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সিয়াম, রোশান ও সজলের বিপরীতে কাজ করেছেন ঢালিউডের নতুন যুগের এই নায়িকা। সিয়াম ও আদ্রিতের বিপরীতে অভিনীত ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে। এখন সজল ও রোশানের বিপরীতে পূজার অভিনয় দেখা বাকি। চার নায়কের মধ্যে পূজার সবচেয়ে ভালো রসায়ন কার সঙ্গে—পূজা বলেন, ‘সিয়াম ও সজলের সঙ্গে বেশি ভালো কাজ হয়েছে। সিয়ামের গুণ হলো, তিনি দ্রুতই সহশিল্পীকে নিয়ে কাজে মিশে যেতে পারেন। আর সজল টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র দুই মাধ্যমেই অভিজ্ঞ। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’

সামনেই পরীক্ষা

গল্পে গল্পে পূজা জানালেন, সামনে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। এপ্রিলে শেষ হবে। দুটি বড় কাজের কথা চলছে। হয়তো এর মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। পরীক্ষা শেষ করেই আবার কাজে নেমে পড়বেন, ব্যস্ত হয়ে উঠবেন এই সময়ের এ তরুণ নায়িকা।