উর্বীর ভয়কে জয়

প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত
প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম দিনের শুটিংয়ে বেশ বাহবা পান নবাগত নায়িকা প্রিয়ন্তী উর্বী। বেশির ভাগ দৃশ্যের জন্যই নির্মাতাকে দুই থেকে তিনবারের বেশি ‘কাট’ বলতে হয়নি। সহ–অভিনয়শিল্পী সুমন আনোয়ারও অভিনয়ের বেশ প্রশংসা করেছেন। ছবির পরিচালকসহ দলের সবার কাছ থেকে প্রথম দিনেই অনেক প্রশংসা কুড়িয়ে যেন আত্মবিশ্বাসটা একটু বেড়েই গিয়েছিল উর্বীর। অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার পর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দুয়োধ্বনি কম শুনতে হয়নি। জীবনের প্রথম ছবি ‘স্বপ্নবাজী’র দৃশ্য ধারণের প্রথম দিন এমনভাবেই কাটল তাঁর।

প্রথম দিনের সেই রেশ নিয়েই দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে কাজ শুরু করেন উর্বী। শুরুটা ভালো হওয়ায় তাই মেজাজ ছিল ফুরফুরে। দ্বিতীয় দিনের দৃশ্য ধারণের প্রস্তুতি চলছে। সবাই ব্যস্ত শুটিং নিয়ে। কিন্তু উর্বী ছুটছেন এদিক–ওদিক। তাতে বিরক্ত নির্মাতা। বারবার বলছিলেন চিত্রনাট্য পড়তে। নির্মাতা বেশ কয়েকবার মহড়া করার তাগিদ দিলেও নিজের আত্মবিশ্বাসের কারণে সেভাবে গুরুত্ব দেননি এই অভিনেত্রী।

প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত
প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত

এই অতি–আত্মবিশ্বাসই কাল হয়ে দাঁড়াল উর্বীর জন্য। ছোট পর্দার নির্মাতা সুমন আনোয়ারের সঙ্গে ছিল শুটিং। তাঁর সঙ্গেই শুরু হয় মহড়া। উর্বী কোনোভাবেই মহড়ায় ঠিকঠাক মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। বারবার ভুলে যাচ্ছিলেন। পরিচালক রায়হান রাফীর হাতে ছিল তিন ঘণ্টা সময়। এর মধ্যেই দৃশ্যটি শেষ করতে হবে। মহড়ায় ততক্ষণে অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু উর্বী কিছুতেই পেরে উঠছেন না। নির্মাতা তখন বলেন, আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্ত বেশি আত্মবিশ্বাস ভালো না। উর্বী নির্মাতার এই কথায় ভয় পেয়ে যান। উর্বী বলেন, ‘প্রথম দিন যেভাবে গল্পের মধ্যে ঢুকেছিলাম, দ্বিতীয় দিন আর কোনোভাবেই পারছিলাম না। নির্মাতা একসময় আমার ওপর রেগে যান। ধমক দিলে ভয় পেয়ে যাই। বারবার তিনি আমাকে বলতে থাকেন, “আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্ত বেশি আত্মবিশ্বাস ভালো না।” এটা শুনে প্রচণ্ড ভয়ে আমার হাত–পা কাঁপতে থাকে। তা ছাড়া সুমন আনোয়ার ভাই অনেক ভালো একজন অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে অভিনয় করতেও একটু নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম।’

প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত
প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত

এরপর ভয়ে ভয়েই দাঁড়িয়ে যান ক্যামেরার সামনে। পরিচালক ‘অ্যাকশন’ বলার সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রটির সঙ্গে যেন মিশে যান উর্বী। দুই মিনিট দৈর্ঘ্যের দৃশ্য। চরিত্রটির মধ্যে একটু ভয়ের দরকার ছিল। তা নির্মাতা ঠিকঠাক পেয়ে যান। নির্মাতার পছন্দ হয়। শুটিং শেষে পুরো দলের করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে শুটিং। উর্বী বলেন, ‘ঠিকমতো মহড়া করতে না পারার কারণে ভয়ে ক্যামেরার সামনে কাঁপতে ছিলাম। আমার দৃশ্য ছিল আবেগের। পুরো সংলাপ মুখস্থ ছিল। ভয় নিয়ে সংলাপ এমন ভাবে দিয়েছি যে নির্মাতা পছন্দ করেন। পরে নির্মাতা বলেছেন, দৃশ্যে হালকা ভয় ও হালকা কান্নার একটা আবহ দরকার ছিল। এ জন্যই একটু বকাবকি করেছেন।’

প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত
প্রিয়ন্তী উর্বী। ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়ন্তী উর্বী এখন নিয়মিত মনোযোগ দিয়ে অভিনয় করছেন। আর অতি–আত্মবিশ্বাসী হতে চান না। শুটিংয়ে এখন বেশির ভাগ সময়ে মনযোগী ছাত্রীর মতো চিত্রনাট্য পড়েন। উর্বী বলেন, ‘আমি নিয়মিত অভিনয় করে যেতে চাই। প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনের শুটিং আমাকে অনেক বদলে দিয়েছে।’

প্রিয়ন্তী উর্বী ‘মিস ফেস অব বিউটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ২০১৯’ বিজয়ী। তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি ‘স্বপ্নবাজী’। ছবির নায়ক চরিত্রে আছেন সিয়াম আহমেদ। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মাহিয়া মাহি, জান্নাতুল পিয়া। ছবিটির দৃশ্য ধারণ শুরু হয় ফেব্রয়ারি মাসের শেষের দিকে।