'আমার বিয়েতে কারও জ্বলবে, কারও গলবে'

পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে
পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে

অভিনেত্রী পরীমনি ও ছোট পর্দার নির্মাতা কামরুজ্জামান রনির বিয়ে হয় ১০ মার্চ মধ্যরাতে। ফেসবুকের মাধ্যমে রনি সে খবর জানান ১৯ মার্চ। গতকাল শুক্রবার সুন্দরবনের শুটিং স্পট থেকে মুঠোফোনে বিয়ের বিস্তারিত জানালেন পরীমনি।

এই করোনার মধ্যেই বিয়ের খবর দিলেন?
এখনই খবরটি প্রকাশের কথা ছিল না। আমার সিনেমার শুটিং, রনির নাটকের কাজ শেষ করে সবাইকে জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু মেয়ে রনিকে ডিস্টার্ব করে। সেটা নিয়ে একটা ইস্যু তৈরি হয়েছে। এ কারণেই করোনার অশান্তির মধ্যেই খুশির খবরটি দিতে হয়েছে। যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। আজ হোক কাল হোক, সবাই জানবেই।

বর রনির সঙ্গে প্রথম পরিচয় কবে?
সাত থেকে আট মাস হবে। কিন্তু আগে খুব একটা দেখা–সাক্ষাৎ হতো না। প্রায় পাঁচ মাস আগে হৃদি আপা ১৯৭১: সেই সব দিন সিনেমার চিত্রনাট্য নিয়ে আমার বাসায় এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন এস এ হক অলিক ভাই ও রনি। কিন্তু আমি ওইভাবে তাঁকে খেয়াল করিনি। যদিও আমাদের দুজনের বাড়িই বরিশাল।

তারপর?
ওই দিনই ছবির গল্প শোনার পর কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। চলতি মাসের ৩ থেকে ৭ তারিখ ঠাকুরগাঁওয়ে শুটিং হলো। রনি সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন ছবিতে। এই শুটিংকে কেন্দ্র করেই আমাদের দুজনের কাছে আসা। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে আগে ঠাকুরগাঁওয়ে কীভাবে যাব, কোথায় থাকব—এসব নিয়ে রনির সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছিল। এরপর শুটিং করতে গেলাম। মাত্র চার দিন শুটিং করেছি। এ সময়ের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। খুব মজা হতো সেখানে। শুটিংয়ে আমি তাঁকে ‘রনিদা’ বলে ডাকতাম, আমাকে সে ‘পরী ভাই’ ডাকত। তখনো বুঝিনি কিছু একটা হতে চলেছে।

পরীমনি ও ছোট পর্দার নির্মাতা কামরুজ্জামান রনির বিয়ে হয় ১০ মার্চ মধ্যরাতে। ছবি: প্রথম আলো
পরীমনি ও ছোট পর্দার নির্মাতা কামরুজ্জামান রনির বিয়ে হয় ১০ মার্চ মধ্যরাতে। ছবি: প্রথম আলো

বিয়ের সিদ্ধান্ত কখন নিলেন?
সত্যি বলতে, বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি পাঁচ মিনিটে। ৮ মার্চ শুটিং থেকে ঢাকায় ফিরি। তারপর মনে হচ্ছিল, কিছু একটা মিস করছি। আমি রনিকে হোয়াটসঅ্যাপে ‘আমার ভালো লাগছে না’ বলে এসএমএস করি। রনি আমাকে লিখল, আই লাভ ইউ, তুমি আমাকে বিয়ে করবা? এভাবে কোনো দিন ভালোবাসা কিংবা বিয়ের প্রস্তাব পাইনি কখনো। তাঁর এই মেসেজ দেখে নিজের মধ্যে সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। শান্তিনগরে রনি ও হৃদি আপার প্রোডাকশন হাউস ‘টিকেট’-এর অফিসে গেলাম পরদিন। আমি, রনিসহ কয়েকজন হৃদি আপার কাছে গিয়ে বললাম, আমরা বিয়ে করব। হৃদি আপা হেসে দিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, আমরা ফাজলামি করছি। এরপর পাঁচ মিনিটের সিদ্ধান্তে বিয়ে। পরিবারের কেউ ছিল না।

পরিবারকে জানালেন না কেন?
একটু লুকানো বিয়ের মজা নিতে চেয়েছি। আস্তে আস্তে জানবে। আমাকে ফোন করবে পরিবার থেকে। আমি ভয়ে ভয়ে সেই ফোন ধরব। তারপর একটা সময় পরিবার মেনে নেবে। এ ধরনের মজা করার জন্যই এই কাজ করেছি।

বরের সঙ্গে পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে
বরের সঙ্গে পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে

এখন তো সবাই জেনেছে, নাকি?
হ্যাঁ, সবাই জেনেছে। যেদিন আমরা বিয়ের খবরটি প্রকাশ করেছি, সেদিনই খালামণি, নানা জেনেছেন। ফোনও দিয়েছেন। কোনো সমস্যা হয়নি।

আপনারা বিয়ে করায় ভক্ত ও পরিচিতদের প্রতিক্রিয়া কী?
ইতিবাচক-নেতিবাচক দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই থাকতে পারে। তাতে আমার কিছুই যায়–আসে না। আমার নাক দিয়ে আমি শ্বাস নিই, আমার প্লেটে আমি খাই, আমার বালিশে আমি ঘুমাই। আমি বিয়ে করেছি, এটি আমার ব্যাপার। আমি জানি, এই বিয়েতে কারও জ্বলবে, কারও গলবে; কেউ আবার আবেগে অনেক কিছু বলে ফেলবে। বিয়ের খবরে কেউ অখুশি হবেন, কেউ খুশি হবেন। এর মধ্যেই আমি আমার বিয়ে, আমার জীবন নিয়ে খুশি থাকব।

পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে
পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে

আপনি তো এখন সুন্দরবনে। বর রনি কি শুটিংয়ে গেছেন?
হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার সকালে এসে আবার রাতেই ঢাকা ফিরে গেছে। ওই দিন আমার খুব মন খারাপ ছিল। এ জন্যই সে এসেছিল। তার একটি ধারাবাহিক নাটক সপ্তাহে দুই দিন এনটিভিতে দেখাচ্ছে। এ কারণে আমাকে বেশি সময় দিতে পারেনি।

পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে
পরীমনি। ছবি: ফেসবুক থেকে

বিয়ের দাওয়াত পাচ্ছি কবে?
আমার অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন সিনেমার শুটিং শেষ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। রনি নাটকের কাজে ব্যস্ত। এখনো এ নিয়ে বসা হয়নি। দুজনের কাজ গুছিয়ে নিয়ে তারপর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে বসব।

হানিমুন কোথায় হবে?
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে এখন সারা বিশ্ব প্রায় স্থবির। এসব নিয়ে এখন মাথা ঘামাচ্ছি না। চারদিকে পরিস্থিতি শান্ত হোক। এরপর কোথায় যাব, দেখা যাবে।