করোনা-সতর্কতায় ভক্তদের উদ্দেশে যা বললেন তাহসান

তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত
তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত

করোনা নিয়ে সতর্ক হলিউড, বলিউডসহ দেশে তারকারা। নিজেরা সতর্ক থেকে ভক্তদের সতর্ক করছেন ঘরে বসে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে সতর্কবার্তার কথা বললেন তাহসান খান। এ মাসের প্রথম দিক থেকেই করোনা নিয়ে সতর্ক আছেন এই অভিনেতা ও গায়ক। ঘরে বসেই মুঠোফোনে পেয়েছেন সরকারি বার্তা। সেটা মনোযোগ দিয়ে পড়ছেন তিনি। কোনোভাবেই সরকারি এই সতর্কবার্তাকে এড়িয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিলেন সবাইকে।

সরকার সবার কাছে যে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে, সেটা অবশ্যই মূল্যবান উল্লেখ করে তাহসান বলেন, ‘মাসের প্রথম দিক থেকেই সরকারি মেসেজ আমার মুঠোফোনে পাচ্ছি। বেশির ভাগ যেটা হয়, সবাই এই মেসেজ ইগনোর করি। এটাকে কেউ এড়িয়ে যাবেন না। কারণ, এই মেসেজগুলো আমাদের সচেতন করার জন্য পাঠানো হচ্ছে। ফোনে যখন আসে তখন আমরা যেন পড়ে মেনে চলি। তাহলে যতটা দুশ্চিন্তা করা উচিত, ততটা হবে না। এটা সরকার সবাইকে সচেতন করার জন্য দিচ্ছে। নিজেও এটা পড়ুন, পারলে অন্যকে পড়তে বলুন।’

ভক্তদের উদ্দেশে তাহসান বলেন, ‘বেশি প্যানিক হওয়া যাবে না। সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এই সময়ে পাশ্চাত্যের দেশগুলো টিস্যু পেপারের জন্য মারামারি করেছে। কিন্তু এভাবে একটা পরিস্থিতি তৈরি করে লাভ নেই। এখানে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এমন দুর্যোগ এর আগেও এসেছে। এটা কিছুদিন থাকবে, আবার চলে যাবে। তত দিন সবাইকে বলব, একটু ধৈর্য নিয়ে ঘরে বসে থাকবেন। এই মুহূর্তে যাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন, তাঁরাই শুধু হাসপাতালে যাবেন। অল্প জ্বর–কাশি নিয়ে যদি সবাই হাসপাতালে যাওয়া শুরু করেন, তাহলে পরিস্থিতি উল্টো হবে। চিকিৎসক ও রোগী সবার জন্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়াই কঠিন হবে। তা ছাড়া আমরা যদি প্রয়োজনীয় সব বেশি বেশি কিনে বাসায় ভর্তি করে রাখি, তাহলে যাঁদের সময়মতো প্রয়োজন, তাঁরাও দরকারি সময়ে সেই জিনিসটা পাবেন না। সবার মধ্যে অতিরিক্ত নয়, পরিমিতি বোধটা যেন থাকে। যেটুকু দরকার, সেটুকু কিনুন। সবার মধ্যে সহানুভূতি, সহমর্মিতা বোধটা জরুরি। আমরা যেন চিন্তা করি, এ সমস্যায় সবাইকে মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে। সে জন্য এ সময়টা আমাদের একসঙ্গে সহযোগী মনোভাব নিয়ে পার করতে হবে। করোনা একটি প্রাকৃতিক ব্যাপার। আমরা যদি শক্ত থাকি ও সাবধানতা অবলম্বন করি, তাহলে এটা মোকাবিলা করতে পারব।’

তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত
তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত

করোনা নিয়ে ব্যক্তিগত সতর্কতার কথা উল্লেখ করে তাহসান বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের গাইডলাইনে অনুসরণ করছি। মুখে হাত দিচ্ছি না। সাবান দিয়ে হাত ধুচ্ছি। মাস্ক পরছি, যেন মুখে হাত না যায়। বাইরে খুব বেশি বের হচ্ছি না। গ্লাভস পরার চেষ্টা করছি।’ তাহসানের এই সতর্কতা নিয়ে সবাই ভাবছে হয়তো তিনি একটু বেশি সতর্ক। এই প্রসঙ্গে তাহসান বলেন, ‘হয়তো সবাই আমার সতর্কতা নিয়ে ভাবছেন, একটু বেশি বেশি করছি। কিন্তু আমি চেয়েছি আমাকে দেখে যেন মানুষ সতর্ক হয়।’

মাসের প্রথম দিক থেকেই তাহসান দেশের বাইরে তাঁর গানের কনসার্ট এবং দেশে সব রকমের শুটিং বন্ধ করে দেন। গত সপ্তাহ থেকেই সিদ্ধান্ত নেন নাটকের শুটিং করবেন না। করোনা–সতর্কতায় এত আগে থেকেই শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত খুব বেশি তারকাকে নিতে দেখা যায়নি। পূর্বসতর্কতার জন্য তাহসানকে শুনতে হয়েছেন আপনি বেশি বেশি করছেন। এই প্রসঙ্গে তাহসান বলেন, ‘আমি যখন নাটকের শুটিং বন্ধ করি, তখন অনেকেই বলছেন আপনি ক্যানসেল করছেন, আপনি কিন্তু বেশি বেশি করছেন। এখনো তো বাংলাদেশে কিছু হয়নি।’ এই প্রসঙ্গে তাহসানের যুক্তি ছিল হওয়ার পরে সতর্ক থাকার চেয়ে আগে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। তাহসান বলেন, ‘এই কারণে আমি আগে স্ট্যাটাস দিয়ে আমার প্রযোজকদের সব কাজ ক্যানসেল করতে অনুরোধ করেছি।’

তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত
তাহসান খান। ছবি সংগৃহীত

তাহসান আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার কনসার্ট বাতিল হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন থাকতে হবে। তারপর থেকে তিনি বেশির ভাগ বাসায় সময় কাটাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতি দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী কাজের।