হার্ভি ওয়াইনস্টিন করোনাক্রান্ত

শুরুতে যৌন হয়রানির সব অভিযোগই অস্বীকার করেছিলেন হার্ভি ওয়াইনস্টিন। ছবি: রয়টার্স
শুরুতে যৌন হয়রানির সব অভিযোগই অস্বীকার করেছিলেন হার্ভি ওয়াইনস্টিন। ছবি: রয়টার্স

ধর্ষণের দায়ে কারাদণ্ড পাওয়া কুখ্যাত মার্কিন প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন (৬৮) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ১১ মার্চ নিউইয়র্কের একটি আদালত ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির দায়ে তাঁকে ২৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।

গত রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় দৈনিক নায়াগ্রা গেজেট হার্ভির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করে। হার্ভির মুখপাত্ররা মার্কিন গণমাধ্যমের কাছে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। গত বুধবার হার্ভিকে নিউইয়র্ক সিটির উত্তর-পশ্চিম থেকে সাড়ে ৩শ মাইল দূরে বাফেলোর কাছে এক কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে হার্ভি রিকার্স আইল্যান্ডের কাছে একটি জেলে ছিলেন। বুকে ব্যথা উঠলে তাঁকে ম্যানহাটনের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বন্দীতে ঠাসা মার্কিন জেলখানাগুলো করোনাভাইরাসের উর্বর ভূমি হিসেবে কাজ করতে সক্ষম বলে মনে করছেন অনেকে। গত সপ্তাহে স্থানীয় এক গণমাধ্যম জানিয়েছে নিউইয়র্কের সিং সিং জেল ও রিকার্সের জেলের একজন নিরাপত্তারক্ষীর শরীরে করোনাভাইরাসের আলামত পাওয়া গেছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ৪১৭ জন লোক মারা গেছে। দেশটিতে ওই দিন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজারের বেশি।

২০১৭ সালে হার্ভি ওয়াইনস্টিনের সঙ্গে স্ত্রী জর্জিনা চ্যাম্পম্যানের বিচ্ছেদ হয়। ছবি: সংগৃহীত
২০১৭ সালে হার্ভি ওয়াইনস্টিনের সঙ্গে স্ত্রী জর্জিনা চ্যাম্পম্যানের বিচ্ছেদ হয়। ছবি: সংগৃহীত

গত ৬ জানুয়ারি নিউইয়র্কের আদালতে হলিউডের প্রভাবশালী চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিচার শুরু হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সাবেক অভিনেত্রী জেসিকা মানকে ২০১৩ সালে ধর্ষণ এবং ২০০৬ সালে প্রযোজনা সহযোগী মিমি হ্যালেইর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গ স্থাপনের অভিযোগে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়।

চলচ্চিত্র অঙ্গনে যৌন হয়রানি গোপন রাখতে রাখতে এক সময় এটি প্রকাশ করতে শুরু করেন হলিউডের নারী শিল্পীরা। এ আন্দোলনের প্রথম অভিযুক্ত প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন। জোডি ক্যানটর ও মেগান টুহে নামে নিউইয়র্ক টাইমসের দুই প্রতিবেদক ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর হার্ভি ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন লিখে হইচই ফেলে দেন। প্রতিবেদনের সূত্র ধরে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে #মি–টু আন্দোলন।

ওই প্রতিবেদনের জন্য পুলিৎজার পুরস্কারও অর্জন করেন সেই দুই প্রতিবেদক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত তিন দশকে অন্তত আটজন নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন হার্ভি। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, সালমা হায়েক, গিনেথ প্যালট্রো, আসিয়া আর্জেন্তোও, নাতাশিয়া মালথেসহ ৯০ জনের বেশি নারী। প্রায় সবগুলো অভিযোগই অস্বীকার করেছিলেন হার্ভি। সূত্র: ডেকান ক্রনিকেল