বলিউডের বর্ষীয়ান তারকা নিম্মি মারা গেছেন

সেই যুগে পরিচিত জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী নিম্মি। ছবি: ফেসবুক থেকে
সেই যুগে পরিচিত জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী নিম্মি। ছবি: ফেসবুক থেকে

বলিউডের সাদা–কালো যুগে ‘বারসাত’ সিনেমার ‘বারসাত মে হামসে মিলে তুম সাজান’ কিংবা ‘মেরে মেহবুব’–এর ‘মেরে মেহেবুব তুজে প্যায়ার কারো ইয়া না কারু’ গানগুলো হয়তো প্রবীণ দর্শকের মনে আছে। সেই যুগের পরিচিত জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী নিম্মি। গতকাল ৮৮ বছরে এসে থেমে গেল তাঁর জীবনতরি, মুম্বাইয়ের জুহুর একটি হাসপাতালে গত বুধবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে। চলচ্চিত্র পরিচালক অশোক সরকার তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় দীর্ঘদিন ভুগছিলেন।

এই অভিনয়শিল্পীর ভাগনি সামিরা খান ভারতের জনপ্রিয় দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সর্বশেষ কয়েক বছর ধরেই খালা (নিম্মি) হাসপাতালে যাওয়া–আসার মধ্যে ছিলেন। স্মৃতিও হারিয়ে ফেলছিলেন ক্রমে। মৃত্যুর আগে কেবল কিছু সিনেমার শুটিংয়ের কথা মনে ছিল তাঁর।’ তিনি আরও জানান, শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য বাড়ির কাছের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। অভিনেতা ঋষি কাপুর, নির্মাতা মহেশ ভাট তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে টুইট করেন।

তাঁর আসল নাম নবাব বানু। ছবি: ফেসবুক থেকে
তাঁর আসল নাম নবাব বানু। ছবি: ফেসবুক থেকে

তাঁর আসল নাম নবাব বানু। কিন্তু বড় পর্দার নিম্মির আড়ালে হারিয়ে গেলেন নবাব বানু। বলিউডের খাতায় নাম লেখানোর সময় নিম্মি নামটি দিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় তারকা রাজ কাপুর। তাঁর প্রথম ছবি ‘বারসাত’ মুক্তি পায় ১৯৪৯ সালে। ছবিতে পাহাড়ি মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।

ফেমাস স্টুডিওতে শুটিংয়ের সময় নিম্মি ‘ফিল্মিন্ডিয়া’ ম্যাগাজিন পড়ছিলেন। সেখানে মেহবুব স্টুডিওর চিত্রনাট্যকার আলী রাজার ছবি ছিল। তখন নিম্মির কেশসজ্জাকারী বলেছিলেন, আপনি কেন এই লোকটাকে বিয়ে করেন না? সহকর্মীও একই বুদ্ধি দিয়েছিলেন। আইডিয়াটা মনে ধরল নিম্মির। পরবর্তী সময়ে দুই পরিবারের সম্মতিতে ১৯৬৫ সালে বিয়ে হয় নিম্মি ও রাজার। কিন্তু দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাঁদের কোনো সন্তান হয়নি। এ নিয়ে দুজনই খুব হতাশায় ভুগতেন। পরে বোনের ছেলেকে দত্তক নেন নিম্মি। সেই সন্তান এখন লন্ডনে। আর আলী রাজা মারা যান ২০০৭ সালে।

১৯৪৯ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত অসংখ্য হিট ও প্রশংসিত ছবি উপহার দেন নিম্মি। এর মধ্যে ‘সাজা’ (১৯৫১), ‘আন’ (১৯৫২), ‘দাগ’ (১৯৫২), ‘আলিফ লায়লা’ (১৯৫৩), ‘অমর’ (১৯৫৪), ‘উড়ান খাটোলা’ (১৯৫৫), ‘রাজধানী’ (১৯৫৬), ‘ভাই ভাই’ (১৯৫৬), ‘বসন্ত বাহার’ (১৯৫৬), ‘শাম্মা’ (১৯৬১), ‘ডাল মে কালা’ (১৯৬৪), ‘পূজা কী ফুল’ (১৯৬৪), ‘মেরে মেহবুব’ (১৯৬৩), ‘লাভ অ্যান্ড গড’ (১৯৮৬) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।