'চিন্তায় চিন্তায় আমরা জীবনটা শেষ করে ফেলছি'

ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলছেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। ২১ মার্চ তিনি খুলনা থেকে একটি নাটকের শুটিং শেষে ঢাকায় ফেরেন। তারপর থেকেই পালন করছেন হোম কোয়ারেন্টিন। গতকাল ২৫ মার্চ ছিল এই অভিনেতার জন্মদিন। দিনটি নিয়ে ছিল না খুব বেশি আয়োজন। ফোনেই বেশি সময় ব্যস্ত ছিলেন এই অভিনেতা। বাকি সময় করোনা-সতর্কতা নিয়েই সময় কেটেছে তাঁর। হোম কোয়ারেন্টিনে থেকেই জানালেন জন্মদিন নিয়ে।

মোশাররফ করিমের সেলফিতে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
মোশাররফ করিমের সেলফিতে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেতা ফারুক আহমেদ তাঁর দিলু রোডের বাসা থেকে মুঠোফোনে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই সতর্কতার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন। আমিও সতর্কতার মধ্যে আছি। শুটিং থেকে ফিরেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে আছি। বাড়িতে থেকেও পরিবারের অন্যদের কাছ থেকে সব সময় দূরত্ব বজায় রাখছি। এর মধ্যেই গতকাল আমার জন্মদিন ছিল। যদিও আলাদাভাবে জন্মদিন আমি কখনো পালন করি না। কেকও কাটা হয় না। দিনটি আমাকে জোর করে মনে করিয়ে দেয় আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। আমি ক্রমেই একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। জন্মদিন আমাকে একটি টেনশনে ফেলে দেয়।’

ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

এই অভিনেতার জন্মদিন ২৫ মার্চ। দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে একটি কালো অধ্যায়। তাই এই দিনে তাঁর জন্মদিনটা না পালন করার সিদ্ধান্ত নেন অনেক আগে থেকেই। নিজের ইচ্ছাতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ফোন দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এদিন সবার সঙ্গেই ফোনে কথা বলেন তিনি। ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মানুষ শুভেচ্ছা জানালে কিছু বলা যায় না। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আমিও তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আমার ভেতরে একটা মনখারাপ থাকা কাজ করে সব সময়। এটা শৈশব থেকেই আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। এখন সবাইকে যদি বলি আমি জন্মদিন পালন করব না, তাহলে হয়তো তারা মন খারাপ করবে। ভাববে, আমি একটু বেশিই করছি। তবে বাইরে আনন্দ প্রকাশ করলেও ভেতরে কখনোই আমার মধ্যে কোনো আনন্দ থাকেনি।’

‘ফান ফ্যাক্টরি ট্যুর’ নাটকের দৃশ্যে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
‘ফান ফ্যাক্টরি ট্যুর’ নাটকের দৃশ্যে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ফারুক আহমেদ আরও বলেন, ‘দর্শক আমার অভিনয়ে আনন্দ পান। এটা আমার খুবই ভালো লাগে। আমি নিজেও হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় সুন্দর পৃথিবীতে সৌন্দর্যকে আমরা উপভোগ করতে পারছি না। আমাদের মধ্যে সব সময় একটা অর্থনৈতিক চিন্তা, সামাজিক, রাজনৈতিক চিন্তা থেকেই যায়। চিন্তায় চিন্তায় আমরা জীবনটা শেষ করে ফেলছি। অনেক কিছু জীবনের বাকি থেকে যায়। টেনশনেই জীবনটা পার হয়। কিন্তু জীবনের জন্য আনন্দ খুব জরুরি।’

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সরকারের নিয়ম মেনে চলতে হবে। আপনারা ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। আর দূরত্ব বজায় রাখেন। এই মুহূর্তে সবার নিরাপত্তার জন্য বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।’

নির্মাতা অনিমেষ আইচ ও সহশিল্পীর সঙ্গে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
নির্মাতা অনিমেষ আইচ ও সহশিল্পীর সঙ্গে ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

নিজ বাড়িতে মাত্র পাঁচ দিন পার করেছেন হোম কোয়ারেন্টিনে। এই সময়টা পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। তিনি সর্বশেষ শুটিং করেছেন সুন্দরবনে। নাটকের নাম ‘ফান ফ্যাক্টরি ট্যুর’। ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে ছোট পর্দাসংশ্লিষ্ট সব রকম শুটিং বন্ধ ঘোষণা করেছে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির ১৪টি সংগঠন। পরবর্তী নির্দেশনা দিলেই আবারও নিয়মিত শুটিং করবেন।