ঘরে বসে দেখতে পারেন এই ধারাবাহিকগুলো
দীর্ঘ ধারাবাহিক দেখার সুযোগ সেভাবে পাওয়া যায় না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘরেই কাটাতে হবে আরও কিছুদিন। এই সময়ে বিনোদিত হতে দেখতে পারেন দেশি কিছু ধারাবাহিক নাটক। বিনোদনের পাশাপাশি এগুলো সময় কাটাতেও সহায়তা করবে।
‘উড়ে যায় বকপক্ষী’
হুমায়ূন আহমেদের গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক নাটক ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’। এটি যেমন হাস্যরসাত্মক, তেমনি মানবিকতার বার্তাও দেয়। নাটকটি একবারে দেখে শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে করবে না। এক পর্ব শেষ হতেই পরের পর্ব দেখতে বাধ্য হবেন দর্শকেরা। নাটকের গল্পে দেখানো হয়েছে গ্রামের অতিদরিদ্র একটি গানের দল ও তাদের জীবনযাপন। যাদের বেশির ভাগ সময় অর্থনৈতিক সমস্যায় থাকতে হয়। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এরপরও তারা বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে যায়। গানের দল এবং তাদের ব্যক্তিগত আনন্দ-বেদনার গল্প নিয়ে এগিয়ে যায় ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’। নাটকে অভিনয় করেছেন রিয়াজ, মেহের আফরোজ শাওন, মাসুম আজিজ, ইনামুল হক, এজাজুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, স্বাধীন খসরু প্রমুখ।
‘৪২০’
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় নাটক ‘৪২০’। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ব্যঙ্গ করে নাটকের গল্পটি তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে দেখা যায় দুই ভাইকে, যারা গ্রামে চুরি করত। বিভিন্ন সময় তারা সাজাও পেয়েছে। একসময় তারা মসজিদের টাকা চুরি করে ঢাকায় চলে আসে। রাজধানীতে এসে ঘটনাক্রমে জড়িয়ে যায় রাজনীতিতে। বদলে যায় তাদের ভাগ্য। শেষ পরিণতিও তাদের ভাগ্যকে বদলে দেয়। ২০১২ সালে ধারাবাহিকটি প্রচারের পর থেকে বিপুল জনপ্রিয় হতে শুরু করে। নাটকে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, লুৎফর রহমান জর্জ, সোহেল খান, মারজুক রাসেল প্রমুখ। এই নাটক দিয়েই ক্যারিয়ারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেন মোশাররফ করিমসহ বেশ কজন তারকা।
‘হাউজফুল’
রেদওয়ান রনি ও ইফতেখার আহমেদ ফাহমির যৌথ পরিচালনায় প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘হাউজফুল’। পরিবারকেন্দ্রিক হাস্যরসাত্মক গল্প হওয়ায় শুরু থেকেই নাটকটি লুফে নিয়েছিলেন দর্শক। যৌথ পরিবারের ছোট ছোট গল্প এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে এই ধারাবাহিক। নাটকে নেই কোনো কেন্দ্রীয় চরিত্র। অবসর কাটানোর জন্য এটি একটি অনবদ্য নাটক। ‘হাউজফুল’ প্রচারিত হয়েছিল এনটিভিতে। এই নাটকে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, মোশাররফ করিম, সুমাইয়া শিমু, মিথিলা, হাসান মাসুদ, সুমন পাটোয়ারি, মিশু সাব্বির, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
‘রঙের মানুষ’
সেলিম আল দীন ও মাসুম রেজার পরিকল্পনায় ধারাবাহিক নাটক ‘রঙের মানুষ’। নাটকের পর্ব রচনা করেন মাসুম রেজা। নাটকটি পরিচালনা করেন সালাউদ্দিন লাভলু। এই নাটকের মধ্য দিয়ে গ্রামীণ নাটকের গল্প বদলে যায়। সেই সঙ্গে হাস্যরসাত্মক গল্প হওয়ায় ধারাবাহিকটি দর্শককে টানতে থাকে। নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, আহমেদ রুবেল, ফজলুর রহমান বাবু, রহমত আলী, হাসান মাসুদ, প্রাণ রায়, মিলন, রুমানা, সালাউদ্দিন লাভলু, বন্যা মির্জা, তানিয়া আহমেদ, মুক্তি প্রমুখ।
‘মাইক’
তখনো মোবাইল ফোন পৌঁছেনি, সে রকম এক গ্রামের দুই ভাই মোবাইল ফোনের ব্যবসা শুরু করে। দেশ-বিদেশ থেকে তাদের নম্বরে মানুষ ফোন করে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। যাদের ফোন এসেছে, তাদের মাইকে ডেকে দেন ব্যবসায়ী দুই ভাই। এ নিয়েই দুই ভাইয়ের ব্যস্ততা। মাইক হয়ে ওঠে তাদের যোগাযোগের মাধ্যম। এমনকি মনের মানুষের সঙ্গে দেখা করতেও ব্যবহার করা হয় এই মাইক। সেই গ্রামে এই মাইক নিয়ে ঘটতে থাকে মজার সব ঘটনা। নাটকটি পরিচালনা করেছেন করেছেন মোস্তফা কামাল রাজ। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, তিশা, হাসান মাসুদ, মীর সাব্বির, এজাজ, মনিরা মিঠু প্রমুখ।
‘ভবের হাট’
দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব নিয়ে ‘ভবের হাট’ ধারাবাহিক নাটকের গল্প। ভোভদিয়া গ্রামের হেরেম খাঁ ও মারেম খাঁ নামে দুই ভাইকে দেখা যাবে এক তুচ্ছ ঘটনার কারণে ২৫ বছর একে অন্যের সঙ্গে কথা বলেন না। তাদের হয়ে কথা বলে বাড়ির কাজের লোক আ খ ম হাসান ও শামীম জামান। নাটকে বড় ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান এবং ছোট ভাই হুমায়ুন ফরীদি। দুজনই যৌবনে ফুটবল খেলায় পারদর্শী ছিলেন। হাস্যরসাত্মক এই নাটকটি দর্শক এখনো পছন্দ করেন। নাটকের অন্য চরিত্রগুলোয় অভিনয় করেছেন ওয়াহিদা মল্লিক জলি, পারভিন সুলতানা দিতি, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, সালাউদ্দিন লাভলু, ফজলুর রহমান বাবু, বন্যা মির্জা প্রমুখ।
‘এফএনএফ’
প্রায় ১০ বছর আগে এনটিভিতে দেখানো হয় নাটক ‘এফএনএফ’। হাস্যরসে ভরা এই নাটক প্রচারের অল্প সময়ের মধ্যেই দর্শকদের পছন্দের তালিকায় চলে আসে। পারিবারিক টানাপোড়েনের গল্প। সেই সঙ্গে যোগ হয় ছন্নছাড়া কিছু মানুষের ঘটনা। পরিচালনা করেছিলেন রেদওয়ান রনি। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, মোশাররফ করিম, অপি করিম, পার্থ বড়ুয়া, সুমাইয়া শিমু, মিশু সাব্বির, সুমন পাটোয়ারি প্রমুখ।
‘সাকিন সারিসুরি’
‘সাকিন সারিসুরি’ গ্রামে জাপান ডাক্তার নামে জনপ্রিয় চঞ্চল চৌধুরী। অ্যালোপ্যাথিক-হোমিওপ্যাথিক দুই মাধ্যমেই চিকিৎসা করেন তিনি। রোগমুক্ত করে তোলেন মানুষ ও পশুকে। নাটকটি গ্রামের হাস্যরসাত্মক ঘটনার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায়। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মজার কিছু চরিত্র আবির্ভূত হয়। যাদের অনবদ্য অভিনয় এবং গল্প বাধ্য করে পুরো নাটকটি দেখতে। ‘সাকিন সারিসুরি’তে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, শাহনাজ খুশি, শানারেই দেবী শানু, নাজমুল হুদা বাচ্চু, গোলাম ফরিদা ছন্দা, আজিজুল হাকিম, রওনক হাসান, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, মামুনুর রশিদ, মাসুম আজিজ প্রমুখ।