যে কারণে ভেঙেছিল প্রিয়াঙ্কা-শহীদের প্রেম

‘কামিনে’ ছবিতে শহীদ–প্রিয়াঙ্কার প্রেমটা কিন্তু সত্যি ছিল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
‘কামিনে’ ছবিতে শহীদ–প্রিয়াঙ্কার প্রেমটা কিন্তু সত্যি ছিল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

‘আজ পেহলি বার মোহাব্বাত কি হ্যায়, আখরি বার মোহাব্বাত কি হ্যায়...’

বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘কামিনে’ (২০০৯) ছবিতে শহীদ কাপুর আর প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে এই গানে নাচতে নাচতে প্রেম করতে দেখেছেন। ভেবেছেন, শুটিংয়ে প্রেম করেছেন তাঁরা। না, যে প্রেমটা আপনি চিত্রনাট্যে লেখা ভাবছেন, অ্যাকশন আর কাটের মাঝের অভিনয় ভাবছেন, সেটা আদতে অভিনয় নয়, সত্যি। সে সময় সত্যিই প্রেম করছিলেন এই জুটি। লুকোচুরি লুকোচুরি খেলাতেই শেষ হয়নি, অসংখ্যবার মিডিয়াতে তাঁদের প্রেম নিয়ে লেখা হয়েছে কাব্য।

শহীদ কাপুরের প্রেমিকাদের তালিকা একেবারে ছোট নয়। যাঁদের সঙ্গে জুটি বেঁধে বড় পর্দায় দেখা দিয়েছেন, সবার সঙ্গেই শহীদের প্রেমের ‘গুজব’ ছড়িয়েছে। সেসব গুজবের সব যে মিথ্যা নয়, সেই তথ্য নিজেই জানিয়েছেন শহীদ। তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়েছে সোনাক্ষী সিনহা, এষা দেওল বা বিদ্যা বালানের নাম।

‘তেরি মেরি কাহানি’ (২০১২) এই জুটির শেষ ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
‘তেরি মেরি কাহানি’ (২০১২) এই জুটির শেষ ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

তবে যে দুটি সম্পর্ক নিয়ে শহীদ কাপুর খুবই ‘সিরিয়াস’ ছিলেন, সেই দুটি নাম কারিনা কাপুর ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। কারিনার সঙ্গে আগের বছর সব চুকেবুকে যাওয়ার পর প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে মন দেওয়া–নেওয়া করেন শহীদ কাপুর।

কিন্তু শহীদ কাপুরকে নিয়ে মনে খানিক দ্বিধা ছিল প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার। কারণ, ২০০৮ সালে হারমান বাওয়েজার প্রথম ছবি ‘লাভ স্টোরি ২০৫০’–এ (২০০৮) অভিনয় করতে গিয়ে তাঁকে মন দিয়ে বসেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তাই শহীদ কাপুরকে নিয়ে দোনোমনায় ভুগছিলেন তিনি। এর মাঝে প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা যখন হানা দেন, তখন শহীদ দরজা খুলেছিলেন। আয়করের লোকজনই মিডিয়াকে সে কথা জানান। অবশ্য ‘ভোগ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শহীদ বলেছিলেন, তাঁর আর প্রিয়াঙ্কার বাড়ি পাশাপাশি। যখন আয়কর থেকে ফোন করে জানাল, তারা প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে আসছে, তখন তার বাড়িতে কেউ ছিল না। তাই প্রিয়াঙ্কা ফোন করে শহীদ কাপুরকে ডেকেছিলেন।

শহীদ কাপুর আর প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সে যা-ই হোক, ‘কামিনে’র বছরই প্রিয়াঙ্কা চোপড়া হারমান বাওয়েজার সঙ্গে ‘হোয়াটস ইয়োর রাশি?’ (২০০৯) ছবি করেন। আগের ছবির মতোই এই ছবিও চূড়ান্ত ফ্লপ হয়। এরপরই ভেঙে যায় প্রিয়াঙ্কা-হারমানের সম্পর্ক। এসব মোটেই ভালো লাগছিল না শহীদ কাপুরের। না লাগাটাই স্বাভাবিক। তবে হারমানের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সব চুকেবুকে যাওয়ার পর শহীদ–প্রিয়াঙ্কা আরও একবার নিজেদের সম্পর্ককে একটা শেষ সুযোগ দিলেন। ২০১১ সালের নভেম্বর নাগাদ তাঁরা একসঙ্গে ছুটি কাটাতে গোয়া যান। তখন তাঁরা ‘তেরি মেরি কাহানি’ (২০১২) ছবির শুটিং করছিলেন। গোয়ায় গিয়ে তাঁরা বুঝে যান, এই সিনেমা তাঁদের শেষ সিনেমা। এরপর আর কখনোই তাঁরা একসঙ্গে ছবি করবেন না।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস
ইনস্টাগ্রাম

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া আর শহীদ কাপুর যখন প্রেম করছেন, তখনো শহীদ কাপুর বলিউডে সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হননি। ততদিনে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ‘মুঝসে শাদি কারোগি’, ‘কৃশ’, ‘ডন’–এর মতো ব্যবসাসফল ছবি করেছেন। ফ্যাশন ছবিতে অভিনয় করে হাতে তুলেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ক্যারিয়ারের সিঁড়ি বেয়ে খুব দ্রুত ওপরে উঠছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তাই শহীদের জন্য তাল মেলানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। তা ছাড়া শহীদ ছিলেন ভীষণ দায়িত্বশীল ও অন্তর্মুখী। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা ছিলেন অত্যন্ত ক্যাজুয়াল আর খোলামেলা। ব্যক্তিত্বের এই বৈপরীত্বও একসময় প্রকট হয়ে ধরা দেয়।

শহীদ কাপুর ও মীরা রাজপুত পরিবার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এখন শহীদ কাপুর আর মীরা রাজপুত দুই সন্তান নিয়ে সুখে ঘর করছেন। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তাঁর জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন নিক জোনাসকে।