হিচককের সেরা মুভি, যা হিচকক বানাননি

স্যারাড, টেল নো ওয়ান ও ফ্র্যান্টিক ছবির পোস্টার।  ছবি: সংগৃহীত
স্যারাড, টেল নো ওয়ান ও ফ্র্যান্টিক ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

এটা একটা ধাঁধা। ধরেন, প্রশ্নটা এ রকম—হিচককের সেরা মুভি কোনটি যা হিচকক বানাননি। আলফ্রেড হিচককের একটা ঘরানা আছে। রহস্য-রোমাঞ্চ ভরা জমজমাট থ্রিলার যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে হিচককের বিকল্প নেই। বিকল্পের দরকারই বা কী। কারণ হিচককের ধারা অনুসরণ করে বানানো সিনেমা কিন্তু কম নেই। দুনিয়াজুড়ে এসব সিনেমার বড় পরিচয় হচ্ছে, ‘বেস্ট হিচকক ফিল্মস নট ডিরেক্টেড বাই হিচকক’।

হিচককের মতো সিনেমার তালিকা করতে চাইলে সবাই সম্ভবত সবার আগে যে নামটি বলেন, সেটি হচ্ছে স্যারাড। আবার অনেকে এর উচ্চারণ করেন চ্যারেড। ১৯৬৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় আছেন অড্রে হেপবার্ন ও ক্যারি গ্রান্ট। পুরো সিনেমার শুটিং হয়েছিল প্যারিসে। যাঁরা প্রতি মুহূর্তেই রহস্য পছন্দ করেন এবং শেষটায় চমকে যেতে চান, তাঁদের তো এই সিনেমা অবশ্যই দেখা উচিত। ঘরে বসে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কিছুক্ষণের জন্য ভুলিয়ে দেবে ঠিকই, এর রেশও সহজে কাটবে না।

রেজিনা রেজি ল্যামপার্টের (হেপবার্ন) স্বামী খুন হয়েছেন। লুকিয়ে রাখা গুপ্তধনের সন্ধানে রেজির পেছন নিয়েছে একদল মানুষ। পথে দেখা হয় এক রহস্যময় পুরুষ পিটার জসুয়ার (ক্যারি গ্রান্ট) সঙ্গে। এর মধ্যেই আরও খুনের ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। আর গুপ্তধনটাই বা কী, জানতে হলে এখনই দেখতে বসে যান।

এবার আর প্যারিসে শুটিং হওয়া সিনেমা নয়, ফরাসিদের বানানো আরেক হিচকক ঘরানার সিনেমার কথা বলি। টেল নো ওয়ান মুক্তি পায় ২০০৬ সালে। আলেসান্দ্রে বেক একজন চিকিৎসক। স্ত্রী যখন নিহত হন, আলেসান্দ্রে বেক কিন্তু তখন আশপাশেই ছিলেন। স্ত্রীর বাবা এ জন্য তাঁকেই সন্দেহ করেন। এর ঠিক ৮ বছর পর আবার জোড়া খুন। সন্দেহ পড়ে আলেসান্দ্রের ওপর। ঠিক একই দিনে একটি অদ্ভুত মেইল পান আলেকসান্দ্রে।

মেইলটা আসে নিহত স্ত্রীর কাছ থেকে। তবে কি বেঁচে আছে? একদিকে নতুন করে খুনের দায়ে অভিযুক্ত, পালাতে হচ্ছে, অন্যদিকে নিহত স্ত্রীর নামে আসা মেইল। শুরু হয় চোর-পুলিশ খেলা। এটিও কিন্তু এক নিশ্বাসে দেখে ফেলার মতোই সিনেমা। 

আলফ্রেড হিচকক
আলফ্রেড হিচকক

রোমান পোলানস্কি নানা কারণে বিখ্যাত ও কুখ্যাত। কিন্তু তাঁর বানানো সিনেমার ভক্ত অসংখ্য। নানা ধরনের সিনেমা বানিয়ে তিনি নিয়মিত চমকে দেন। তাঁরও নিজস্ব একটা ঘরানা আছে। সেই রোমান পোলানস্কিও কিন্তু হিচককের মতো একটা সিনেমা বানাতে চেয়েছিলেন। সফলও হয়েছিলেন। ফ্র্যান্টিক সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর অনেকেই পরিচালকের নাম লিখেছিলেন রোমান ‘হিচকক’ পোলানস্কি। নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছিল, সিনেমাটি রোমান পোলানস্কি যেভাবে শেষের দিকে নিয়ে গেছেন, হিচকক বেঁচে থাকলে খুশিই হতেন।

কাকতালীয়ভাবে এই সিনেমার ঘটনাস্থলও প্যারিস। রিচার্ড ওয়াকার একজন চিকিৎসক। স্ত্রীসহ প্যারিসে এসেছেন এক সম্মেলনে যোগ দিতে। হোটেলের কক্ষে তাঁদের মনে হলো এয়ারপোর্ট থেকে ভুল স্যুটকেস নিয়ে এসেছেন। কারণ সেটি খুলতে পারছিলেন না। রিচার্ড যখন গোসলে তখন একটি ফোন আসে। রিচার্ডের স্ত্রী ফোনটি ধরেছিলেন। গোসল শেষে রিচার্ড স্ত্রীকে আর খুঁজে পেলেন না। দেখা হলো মিশেল নামের এক তরুণীর সঙ্গে। হ্যারিসন ফোর্ড ও ফরাসি অভিনেত্রী ইমানুয়েল সিনারের এই সিনেমাটি দ্রুত দেখে ফেলুন। বলে রাখি, ইমানুয়েলকে পরে রোমান পোলানস্কি বিয়ে করেছিলেন।