গান ভালোবেসে সিনেমা

রকস্টার, বোহেমিয়ান র‌্যাপসডি ও  অ্যা স্টার ইজ বর্ন ছবির পোস্টার।  ছবি: সংগৃহীত
রকস্টার, বোহেমিয়ান র‌্যাপসডি ও অ্যা স্টার ইজ বর্ন ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

করোনাকালে সিনেমা তো দেখা হচ্ছেই। তবে সবচেয়ে বেশি মনে হয় শোনা হচ্ছে গান। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া ইতালিতেও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কেউ প্রতিবেশীকে শোনাচ্ছে, ‘বেলা চাও’, জন লেননের ‘ইমাজিন’, টাইটানিক সিনেমার ‘মাই হার্ট উইল গো অন’। ঘরে বসে বাজানো আপনার প্লে লিস্টে যদি থাকে ‘উই উইল রক ইউ’ অথবা ‘আই উইল নেভার লাভ অ্যাগেইন’, তাহলে দেখে নিতে পারেন এসব গানের নেপথ্যের ব্যক্তি বা দলকে নিয়ে বানানো সিনেমাও।

তবে সিনেমাগুলো দেখার সময় একটু ধৈর্য নিয়েই বসতে হবে। কেননা অ্যাকশন, থ্রিলারের ঝনঝনানি তো নেই-ই, রোমান্টিকতার মাত্রাও সীমিত। আছে অনুপ্রেরণা আর কোনো কিছু পাওয়ার জন্য নিজেকে গড়ে তোলার টনিক। কতটা অধ্যবসায় আর পরিশ্রম করলে নিজের মেধা বা ভেতরের শক্তিকে ফুটিয়ে তোলা যায়, সে গল্প বলবে আজকের সিনেমাগুলো। যা দেখতে আপনাকে গানের পোকা না হলেও চলবে।

শুরুতেই দেখতে পারেন ড্যামিয়েন শ্যাজেল পরিচালিত হুইপল্যাশ। ২০১৪ সালের এই সিনেমার গল্প এগিয়েছে অ্যান্ড্রু নেইম্যান নামের এক তরুণের জাজ ড্রামার হয়ে ওঠার স্বপ্নকে ঘিরে। জাজ ড্রামিং কিংবদন্তি বাডি রিচকে গুরু মেনে ক্রমাগত অনুশীলন চালিয়ে যায় সে। যা নজরে আসে নিউইয়র্কের বিখ্যাত সংগীত স্কুল শেফার কনজারভেটরির অধ্যাপক টেরেন্স ফ্লেচারের। যিনি আবার নিখুঁত কাজে বিশ্বাসী। এই অধ্যাপকের অধীন অনুশীলন করতে গিয়ে নেইম্যানের জীবন যেন বিভীষিকায় পরিণত হয়। প্রচণ্ড মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে একসময় শিক্ষকের সঙ্গেই মনোমালিন্য তৈরি হয়। শিক্ষক-ছাত্রের এই মান–অভিমানে চাকরি হারান ফ্লেচার। তবে পৃথিবীটা যেহেতু গোল, সে সূত্র মেনে সিনেমার গল্পেও এক সময় শিক্ষক-ছাত্রের পুনরায় দেখা হয়। তখনই প্রকাশ পায় সিনেমাটির মূল বার্তা। নিখুঁত কাজ করার পেছনে একজন শিল্পীর রহস্য।

ড্যামিয়েন শ্যাজেলের আরেকটি সংগীতভিত্তিক সিনেমা লা লা ল্যান্ড। আপনি জাজের ভক্ত হোন বা না হোন, দুর্দান্ত সংগীতায়োজন ও অভিনয় দেখতে চাইলে লা লা ল্যান্ড আপনার জন্য আদর্শ।

শিল্পীর পরিশ্রমের গল্প তো জানলেন। বিতর্কিত ও এলোমেলো জীবনের গল্পটাও দেখে নিতে পারেন বোহেমিয়ান র‌্যাপসডিতে। আজ আপনার কাছে যা প্রিয়, তা সৃষ্টি করার সময় একজন শিল্পী কেমন মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যান, সে চিত্র পরিচালক ব্রায়ান সিঙ্গার তুলে ধরেছেন এই সিনেমায়। রক ঘরানার গান যাঁদের প্রিয়, ব্রিটিশ ব্যান্ড ‘কুইন’ তাঁদের কাছে অচেনা নয়। এই ব্যান্ডের ‘উই উইল রক ইউ’, ‘উই আর দ্য চ্যাম্পিয়নস’ গানগুলো ফুটবল লিগের ম্যাচ দেখার সময় গ্যালারির দর্শকদের সমস্বরে গাইতে শুনে থাকতে পারেন। এই কুইন ব্যান্ডের লিড ভোকাল ফ্রেডি মার্কারির জীবনভিত্তিক এই সিনেমার নামকরণও করা হয়েছে বিখ্যাত গান বোহেমিয়ান র‌্যাপসডির নামে।

সংগীতভিত্তিক আরও কিছু সিনেমা দেখার তালিকায় রাখতে পারেন। আমেরিকান কণ্ঠশিল্পী লেডি গাগার সংগীতজীবনকেন্দ্রিক অ্যা স্টার ইজ বর্ন, আইরিশ চলচ্চিত্র পরিচালক কারস্টেন শেরিডানের আগস্ট রাশ। বলিউড সিনেমার ভক্ত হয়ে থাকলে দেখতে পারেন গালি বয়, রকস্টার ও সিক্রেট সুপারস্টার।