বিপদে কোনো তারকা আমাদের পাশে নেই

মিথিলা ও অপু বিশ্বাসের সঙ্গে মেকআপ সহকারী মানিক। ছবি: সংগৃহীত
মিথিলা ও অপু বিশ্বাসের সঙ্গে মেকআপ সহকারী মানিক। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রভাবে আপাতত বন্ধ বিনোদন অঙ্গনের সবকিছু। এই প্রভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারকাদের রূপসজ্জাকারীরা। স্বল্প আয়ের এসব মানুষের সংসার চলে দৈনিক আয় দিয়ে। শুটিং বন্ধ থাকায় পরিবার–পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন অনেকেই। তাঁদের এই দুর্দিনে পাশে নেই খোদ তারকারাই। করোনা–সতর্কতায় সব ধরনের শুটিং ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। রূপসজ্জাকারীদের আশঙ্কা, এই সময় আরও বাড়তে পারে।

‘গেরিলা’ ও ‘মৃত্তিকা মায়া’ ছবি দিয়ে দুবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন রূপসজ্জাকারী মোহম্মদ আলী বাবুল। ৬০টির বেশি ছবিতে রূপসজ্জাকারী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তিনি বর্তমান টেলিভিশন মেকআপম্যান সমিতির সভাপতি এবং ফিল্ম মেকআপম্যান সমিতির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বাবুল মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা যাঁরা শিল্পী, আমাদের ছোঁয়ায় যাঁরা সুন্দর হন, তাঁরাও আমাদের দুর্দিনে সাহায্য করছেন না। করোনার কারণে আমাদের কাজ বন্ধ। কবে কাজ শুরু হবে আমরা জানি না। এই বিপদে কোনো তারকা আমাদের অসচ্ছল সহকর্মীদের পাশে নেই। অথচ শুটিং সেটে দেখলেই আমাদের “গুরু” বা “ওস্তাদ”বলেন। তাঁদের আমরা একটা পরিবার ভাবি। তারকারা কাজ শেষ হলে ফিরেও তাকান না।’

মেকআপম্যান সুজন বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের মেকআপ ঠিক করছেন। ছবি: সংগৃহীত
মেকআপম্যান সুজন বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের মেকআপ ঠিক করছেন। ছবি: সংগৃহীত

নাম না প্রকাশ করার শর্তে সংগঠনের আরেক নেতা বলেন, ‘আমাদের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। সব সময় চিন্তা করতে হয় খাওয়া–পরা নিয়ে। আমরা সরকারি চাকরি করি না। নিজেরা আয় করে জমাতে পারি না। আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বিপদে পড়লে কেউ আমাদের দেখে না। আমরা যে শিল্পীদের নিজস্ব দায়বদ্ধতা নিয়ে সব সময় কাজ করি, অথচ এই শিল্পীরা আমাদের এই দুঃসময়ে কেউই এগিয়ে এল না।’

রূপসজ্জাকারী সুজন হোসেন বলেন, ‘আমরা দিন আনি, দিন খাই। যা আয় হয় সবই খরচ হয়ে যায়। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কোনো অর্থ জমা থাকে না। অনেক কষ্ট করে আমাদের চলতে হয়। তারপর এই করোনায় আমরা চলার কোনো উপায় সামনে দেখছি না।’

এখন পর্যন্ত কী ধরনের সহায়তা পেয়েছেন জানতে চাইলে সহকারী রূপসজ্জাকারী মানিক হোসেন বলেন, ‘এফডিসিতে আমাদের শিল্পীদের পরিচালক ও প্রযোজকদের সংগঠন এবং অনন্ত জলিল কিছু সাহায্য করেছেন। চাল, ডাল, তেল দিয়ে সাহায্য করেছে। আমাদের মধ্যে যেসব সচ্ছল মেকআপম্যান আছেন, যাঁরা আমাদের গুরু, তাঁরাও অসচ্ছলদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করছেন। শুটিং শুরু হলেই আমাদের দুর্দিন কাটবে।’