বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে একগুচ্ছ সিনেমা

‘ছিছোরে’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘ছিছোরে’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

যাঁরা ভেবেছিলেন, ছুটি শেষে বন্ধুদের সঙ্গে ফের আড্ডায় মেতে উঠবেন, ছুটি বাড়ায় তাঁদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো। তবে করোনাকালেও ঘরে বসে বন্ধুত্বের স্বাদ পেতে পারেন কিছু সিনেমা দেখে।

রাজকুমার হিরানির ‘থ্রি ইডিয়টস’ দেখেছেন অনেকে। ২০০৯ সালের এই সিনেমার ঠিক ১০ বছর পর মুক্তি পায় নিতেশ তিওয়ারির ‘ছিছোরে’। কলেজের হাউসগুলোর মধ্যে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। প্রতিবছর হেরে যাওয়া হাউসের বদনামে লজ্জা পান সেখানকার শিক্ষার্থীরা। সে বদনাম ঘোচাতে এগিয়ে আসেন কয়েকজন। আর সেখান থেকেই গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কলেজজীবনের বন্ধুত্ব নিয়ে ২ ঘণ্টা ২৩ মিনিটের এই সিনেমা। হিন্দি ‘ছিছোরে’ শব্দের ইংরেজি ভাবানুবাদ দাঁড়ায় ‘লুজার’। তবে সিনেমার যে পর্যায়ে এসে আপনার মনে হবে, এবার অন্তত এই বদনামটা ঘুচে যাক, ঠিক সে মুহূর্তে অভিনয় আর আবেগঘন কিছু দৃশ্য আপনাকে ভাবতে বাধ্য করাবে, হেরে যাওয়াটাই জীবনের শেষ কথা নয়।

২০১৩ সালের ‘কাই পো চে’ সিনেমার গল্পটা তিন বন্ধুর ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তোলা নিয়ে। চাকরির পেছনে না ছুটে বেকার বসে থাকা তিন বন্ধু ঈশান, অমি আর গোবিন্দ সিদ্ধান্ত নেন নিজেদের ‘প্যাশনকে’ই জীবিকা বানানোর। শহরের আবহ, পাড়ার মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা আর খুনসুটি, ঘরবন্দী দিনগুলোতে আপনাকে স্মৃতিকাতর করে তুলতে পারে।

‘রং দে বাসন্তী’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘রং দে বাসন্তী’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

যদি মানেন, বিপ্লব আর ভালোবাসা একসঙ্গে চলে, তাহলে ‘রং দে বাসন্তী’ আপনার জন্য। জীবনকে উপভোগের আদর্শ ধারণ করা কয়েক তরুণের মধ্যে পরিবর্তন আসে এক বিমান দুর্ঘটনার পর। তাতে নিহত হন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অজয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাইলটের ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে অজয়ের বন্ধুরা উদ্‌ঘাটন করেন বিমানের ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। দুর্নীতি করে কেনা হয়েছিল বিমানটি। একসময় রাজনীতি, দেশ নিয়ে আলোচনা যাঁদের কাছে হাসি–তামাশার বিষয় ছিল, সে তরুণেরাই এবার বন্ধুর বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা ভারতের তরুণদের মধ্যে নতুন চেতনার জন্ম দেয়। নব্বইয়ের দশকের মডেল জেসিকা লাল হত্যা মামলায়ও ভূমিকা রাখে রাকেশ ওম প্রকাশ মেহেরা পরিচালিত এই সিনেমা। এই সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই জেসিকার মৃত্যুর প্রায় সাত বছর পর তাঁর বন্ধুরা বিচারের দাবিতে ইন্ডিয়া গেটে মোমবাতি জ্বালিয়ে আন্দোলনে নামেন। পরবর্তীকালে এই জেসিকা হত্যাকাণ্ড নিয়েও নির্মিত হয় ‘নো ওয়ান কিল্ড জেসিকা’ নামের সিনেমা।

তালিকায় রাখতে পারেন ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’। যদি হলিউডের সিনেমা বেশি পছন্দ হয়, তবে দেখতে পারেন ‘ডেড পোয়েটস সোসাইটি’, ‘দ্য বয় ইন স্ট্রাইপড পাজামাস’, ‘দ্য পার্কস অব বিং আ ওয়ালফ্লাওয়ার’। আজকের পর্বের পাঠক যদি হন মধ্যবয়সী কেউ, তবে এই সিনেমাগুলো আপনার জন্যও। কেননা বয়সের বেড়াজাল না মানা বন্ধুত্ব আর চোখের দেখা প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়?

‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত