দুই হাতে দান করছেন শাহরুখ

শাহরুখ খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শাহরুখ খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হচ্ছে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানকে নিয়ে। তিনি নাকি কৃপণ বাদশাহ। মোদির করোনামুক্ত ভারত গড়ার কেয়ার ফান্ডে তিনি কিছুই দেননি। অথচ তাঁরই এগিয়ে আসার কথা ছিল সবার আগে। এর জবাবও দিয়েছেন নেটিজেনরাই। কবে, কোথায় কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন, সেই সব প্রমাণসমেত বললেন। তাঁদের ভাষ্য, শাহরুখ খান অন্যদের মতো লোক দেখানোর জন্য দান করেন না।

ভক্তদের তালিকা থেকে সাম্প্রতিক সময়ে শাহরুখের দানের খতিয়ান—

১. উড়িষ্যার পাঁচটি গ্রামে বিদ্যুৎ দেওয়া।
২. গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে ২০১৫ সালে দান করেছিলেন ২৫ কোটি রুপি।
৩. আইপিএলের সমস্ত প্রাইজমানি দান করেছিলেন ক্যানসার রোগীর চিকিৎসায়।
৪. নানাভাতি হাসপাতালে ক্যানসার ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ড গড়ে তোলা। 
৫. চেন্নাইয়ের খাদ্যসংকটে ১ কোটি রুপি অর্থ দিয়েছিলেন।
৬. মীর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এখান থেকেই দুই হাজার অ্যাসিড–আক্রান্ত নারীর সম্পূর্ণ ভরণপোষণ বহন করেন শাহরুখ।

শাহরুখ খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শাহরুখ খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অন্যান্য বলিউড তারকার মতো শাহরুখ খানও বড় অংকের চেক দিয়েছেন মোদির করোনা ফান্ডে। তবে তা যেন কেউ না জানে, সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারপরও লোকে জেনে গেছে। এরপর দুই হাত তুলে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’

শাহরুখ খান সব সময় বলেন, গরিব হওয়াতে কোনো গর্ব নেই। তাই গরিবকে দান করে দেখানোটা তাঁদের জন্য খুবই অসম্মানজনক। দিল্লির একটা সাধারণ রাস্তা থেকে মান্নাতের এই বাড়িতে আসার রাস্তাটা গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বিছানো ছিল না। এক ফুফু বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতেন। তাই দিয়ে বাবার চিকিৎসা করেছেন। জীবনে দারিদ্র্য দেখেছেন বলেই কিনা দানে কোনো বড়াই নেই তাঁর।

বিয়ের পরও এমএ পাস শ্যামবর্ণের, গালে টোল পরা সামান্য নাটক করা এক ছেলে ছিলেন শাহরুখ। সে রকমই কোনো একটা দিন মুম্বাইয়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বললেন, ‘একদিন আমি এই গোটা শহরে রাজত্ব করব। এইখানে থাকবে আলিশান বাড়ি। ওখানে অফিস।’ তখন পাগলের প্রলাপ বলে হেসেছিলেন সঙ্গের বন্ধুরা।

এবার দেখা যাক, করোনার কারণে কী কী সাহায্য দিলেন শাহরুখ খান—

১. শাহরুখ খান আর তাঁর ক্রিকেট টিম প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন একটা বড় অঙ্ক। 
২. ৫০ হাজার পিপিই দিয়েছেন।
৩. করোনার কারণে জীবিকা হারানো সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবারকে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার খাবার দিচ্ছেন। আপাতত এক মাস এই কর্মসূচি চলবে।
৪. হাসপাতাল আর জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মানুষদের প্রতিদিন দুই হাজার খাবার যাচ্ছে এক রান্নাঘর থেকে। আর সেই রান্নাঘরের উদ্যোক্তা এই খান সাহেব।
৫. এ ছাড়া মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে মিলে শাহরুখের সংস্থা প্রান্তিক ভবঘুরে আর ভিক্ষুকদের জন্য রোজ ৩ লাখ খাবারের প্যাকেট তৈরি করছে।
৬. দিল্লির আড়াই হাজার শ্রমিককে প্রতি সপ্তাহে বিনা পয়সায় রেশন দেবে শাহরুখের সংস্থা।

এই তালিকা কেবল যেসব সাহায্যের কথা মিডিয়াতে এসেছে, সেগুলো। এ রকম অসংখ্য উদারহণ আছে, যেগুলো কেউ জানেই না।

সূত্র: বিজনেস টুডে, ফার্স্টস পোস্ট, ফিল্মফেয়ার, ইন্ডিয়া টাইমস ও টুইটার অবলম্বনে