প্রথম সিনেমায় ফেল করেছিলেন এসব নায়ক

ফেরদৌস, শাকিব খান, ইমন, নিরব প্রথম ছবিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
ফেরদৌস, শাকিব খান, ইমন, নিরব প্রথম ছবিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

নায়ক-নায়িকার প্রথম ছবি মুক্তি পাওয়া মানেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া। ছবি সুপার কিংবা বাম্পারহিট মানেই পাস করে যান নায়ক-নায়িকা, আর না হলে নির্ঘাত ফেল। দর্শক যখন প্রেক্ষাগৃহে নতুন নায়ক-নায়িকাকে একনজর দেখতে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো ছোটেন, সবাই ধরে নেন ভালো নম্বরে পাস করেছেন। প্রথম ছবিতে ভালো নম্বর নিয়ে পাস করতে প্রাণান্তকর চেষ্টাও থাকে তারকাদের। প্রযোজক-পরিচালকেরাও চেষ্টা করেন নতুন তারকা নিয়ে বাজিমাত করতে। কেউ উতরে যান, কাউকে হার মানতে হয়। তাই বলে দমে যান না অনেক তারকা। শুরুতে ফেল করা তারকাদের কেউ আবার দ্বিগুণ উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দর্শকের ভালোবাসায় বেশি নম্বর নিয়ে কেউবা হয়ে যান বড় তারকা। রাজত্ব করেন চলচ্চিত্রজগতেও। দর্শকের মনে জায়গা করে নেওয়া কয়েকজন তারকার খবর জানব, যাঁরা প্রথম সিনেমায় সফল হতে পারেননি।

ফেরদৌস: ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ থেকেই বদলে যায় ফেরদৌসের ক্যারিয়ার। ছবি: সংগৃহীত
ফেরদৌস: ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ থেকেই বদলে যায় ফেরদৌসের ক্যারিয়ার। ছবি: সংগৃহীত

ফেরদৌস
সালমান শাহ মারা গেলে তাঁর অসমাপ্ত অংশে কাজ করেন ফেরদৌস। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় ‘বুকের ভেতর আগুন’। ছটকু আহমেদ পরিচালিত ছবিটি সালমান শাহ–ভক্তরাই শুধু দেখেছেন। সাধারণ দর্শকদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাননি ফেরদৌস। এরপর আরও তিনটি ছবি মুক্তি পায় তাঁর। এগুলো হচ্ছে ‘পৃথিবী আমারে চায় না’, ‘মধুপূর্ণিমা’ ও ‘পরদেশী বাবু’। একটি ছবিও চলেনি। অনুমান করুন, এরপর মুক্তি পায় কোন ছবিটি? হ্যাঁ, ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ থেকেই বদলে যায় তাঁর ক্যারিয়ার। প্রথম ছবিতে হইচই ফেলে দিতে না পারলেও বছর দু-একের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রির নির্ভরযোগ্য তরুণ নায়কে পরিণত হন ফেরদৌস।

শাকিব খানের প্রথম ছবি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়নি। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খানের প্রথম ছবি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

শাকিব খান
আজ শাকিব খানের নাম, চাহিদা, সফলতার কোনো কমতি নেই। দেশের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত চিত্রতারকা তিনি। দেশের বাইরেও তিনি কাজ করছেন। ছবির সংখ্যার দিক থেকেও অনেকেই তাঁর পেছনে। এই শাকিব খানের প্রথম ছবি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়নি। এমনকি হিট ছবির তকমাও জোটাতে পারেনি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটির ভাগ্যে করুণ পরিণতি নেমে এলেও দু–তিনটি ছবির ব্যর্থতার পরই সফলতার দেখা পেতে শুরু করেন শাকিব। শীর্ষ নায়ক হতে সময় নিলেও শুরুর ব্যর্থতা খুব অল্প দিনেই গা থেকে ঝেড়ে ফেলে ব্যস্ত নায়কে পরিণত হন তিনি।

ঈদে মুক্তি পেয়েও ছবিটি না চলায় প্রথম ছবি থেকে সফল নায়ক হওয়ার রেকর্ড গড়তে পারেননি ইমন। ছবি: সংগৃহীত
ঈদে মুক্তি পেয়েও ছবিটি না চলায় প্রথম ছবি থেকে সফল নায়ক হওয়ার রেকর্ড গড়তে পারেননি ইমন। ছবি: সংগৃহীত

ইমন
যদিও ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করা হয়ে গিয়েছিল ইমনের, কিন্তু তাঁর অভিষেক বলতে যায় বোঝায়, তা ঘটে ‘এক বুক ভালোবাসা’ ছবিতে। এই প্রথম বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করেন ইমন। এতে তিনি জুটি বাঁধেন তখনকার সফল নায়িকা অপু বিশ্বাসের বিপরীতে। ইস্পাহানি আরিফ জাহান পরিচালিত ‘এক বুক ভালোবাসা’ শ্রুতিমধুর গানের ছবি হিসেবে উতরে গেলেও ব্যবসায়িক বিচারে ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখায়। ২০০৮ সালের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি না চলায় প্রথম ছবি থেকে সফল নায়ক হওয়ার রেকর্ড গড়তে পারেননি ইমন। তাঁর বাণিজ্যিক ছবিতে অভিষেক পুষ্প বর্ষিত হয়নি, বরং কাঁটার আঘাতে জর্জরিত হয়েছে।

নিরব। ছবি: সংগৃহীত
নিরব। ছবি: সংগৃহীত

নিরব
বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে দারুণ সফল নিরব। এরপর নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এক দশক আগে চলচ্চিত্রেও অভিষেক ঘটে তাঁর। বড় পর্দায় তাঁর প্রথম ছবি ছিল শাহীন সুমন পরিচালিত ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’। দীর্ঘদিন ধরে সিনেমায় কাজ করেও নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না নিরব। সময় গেলেও হাল ছাড়েননি তিনি। গত বছরের শেষের দিকে ‘আব্বাস’ ছবিটি মুক্তির পর নিরবের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন দর্শক। হঠাৎ যেন তাঁর ক্যারিয়ারের পালে হাওয়া লেগেছে। তরতর করে এগিয়ে যেতে শুরু করেছেন নিরব। এর আগে অবশ্য নিরব অভিনীত ১৫টির বেশি ছবি মুক্তি পায়।

২০১২ সালে মুক্তি পায় সাইমন সাদিকের প্রথম ছবি ‘জ্বী হুজুর’। ছবি: সংগৃহীত
২০১২ সালে মুক্তি পায় সাইমন সাদিকের প্রথম ছবি ‘জ্বী হুজুর’। ছবি: সংগৃহীত

সাইমন
২০১২ সালে মুক্তি পায় সাইমন সাদিকের প্রথম ছবি ‘জ্বী হুজুর’। একই ছবিতে অভিষেক ঘটে নবাগত সারা জেরিনের। দুজনকেই ব্যর্থতার কালিমা লাগিয়ে ফ্লপ করে ‘জ্বী হুজুর’। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ছবিটি দর্শকদের মনে ধরেনি। অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল ছবিটি চলবে। নতুন জুটিকে দর্শকেরা লুফে নেবেন। অথচ একই বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভালোবাসার রঙে’ বাপ্পি-মাহির অভিষেক হয় সফলতাপূর্ণ।

২০০৬ সালে মুক্তি পায় জায়েদ খানের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’। ছবি: সংগৃহীত
২০০৬ সালে মুক্তি পায় জায়েদ খানের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’। ছবি: সংগৃহীত

আরও কয়েকজনের কথা
২০০৬ সালে মুক্তি পায় জায়েদ খানের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’। ছবিটির নাম আসেনি হিটের খাতায়। ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ ছবিতে অভিষেক ঘটে অনন্তর। ছবিটি না চলায় ব্যর্থতার ভাগীদার হতে হয় তাঁকেও।