জন্মদিনে পরিবার থেকে দূরে জয়া, আবেগঘন বার্তা স্বামী, সন্তানদের

পরিবারের সঙ্গে জয়া বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
পরিবারের সঙ্গে জয়া বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বয়স তাঁর কাছে নিতান্তই এক সংখ্যামাত্র। জন্মদিন ফিরে ফিরে আসে অন্য মানে নিয়ে। তিনি জয়া বচ্চন। সত্তরের দশকের মিষ্টি বাঙালি মেয়ে থেকে বলিউডের বচ্চন পরিবারের দাপুটে অভিনেত্রী হয়ে ওঠা এ অভিনেত্রী আজ ৭২-এ পা দিলেন। প্রতিবছর ঘটা করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করলেও এবার ব্যতিক্রম ঘটল। এ বছর জন্মদিন পরিবারের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ পেলেন না জয়া বচ্চন। লকডাউনের কারণে তিনি আটকে রয়েছেন দিল্লিতে।

তাই বলে থেমে থাকেনি শুভেচ্ছাবিনিময়। বরং আবেগঘন শুভেচ্ছাবার্তা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাড়া ফেলেন সন্তানেরা। জন্মদিনের সকালে ইনস্টাগ্রামেই মাকে উইশ করলেন অভিষেক বচ্চন ও শ্বেতা বচ্চন নন্দা। টুইটারে বার্তা দিয়েছেন স্বামী অমিতাভও।

অভিষেক লেখেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের কাছেই সবচেয়ে প্রিয় শব্দ মা। শুভ জন্মদিন মা। যদিও লকডাউনের জন্য তুমি এখন আমাদের থেকে অনেক দূরে দিল্লিতে। তবুও জানবে প্রতি মুহূর্তে আমরা তোমার কথাই মনে করছি, মনের মধ্যে শুধু তুমিই আছো। তোমায় ভালোবাসি মা...’। আর বেশ কিছুদিন আগে এক সাক্ষাত্কারে অভিষেক জানিয়েছিলেন, জয়া বচ্চন তাঁর কাছে শুধুই মা। ছোট থেকে মায়ের কোনো ছবি দেখতেন না তিনি। যখন ঠিক করলেন নিজে অভিনয় করবেন, তখন জয়ার ছবি দেখা শুরু করেন। মায়ের অনস্ক্রিন পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছিল ছেলেকে। তিনি বলেছিলেন, ‘বাবার সঙ্গে সিনেমা দেখাটা মজার। কিন্তু মা অনস্ক্রিন কাঁদলেও আমার মন খারাপ হয়ে যায়। আসলে মায়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বন্ডিংটা একেবারে আলাদা।’

স্বামী অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জয়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
স্বামী অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জয়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শ্বেতা লিখেছেন, ‘তোমাকে আমার মনে নিয়ে ঘুরি মা। যেখানেই যাই না কেন, তুমি সব সময়ে আমার সঙ্গে থাকো। হ্যাপি বার্থডে মা।’

দুই সন্তানের পাশাপাশি অমিতাভ বচ্চনও এই বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। টুইট বার্তায় এদিন অনুরাগীদের জন্য জয়ার পক্ষে ধন্যবাদ জানালেন অমিতাভ। তিনি জানান, ‘যারা জয়াকে ওর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছ, সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভালোবাসা। ওকে মনে করার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে জবাব দেওয়া সম্ভব নয়, তাই এখানেই তোমাদের সবাইকে অনেক ভালোবাসা পাঠিয়েছে জয়া। শুভেচ্ছা বার্তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।’

জয়া বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
জয়া বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

১৯৪৮ সালের আজকের দিনে ভারতের মধ্য প্রদেশের জব্বলপুরে জন্ম হয় জয়ার। ছোট থেকেই জেদি স্বভাবের জয়া যখন যা চাইতেন, তা অর্জন করেই তবে শান্ত হতেন। খেলাধুলায় বিশেষ আগ্রহ ছিল জয়ার। ভর্তি হয়েছিলেন পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। তবে তার আগে তিনি সত্যজিৎ রায়ের ‘মহানগর’ ছবিতে কাজ করে ফেলেন। ১৯৬৬ সালে ভারতসেরা এনসিসি ক্যাডেট সম্মানে সম্মানিত হন জয়া।

তবে জয়া বচ্চনের আরেক পরিচিতি হলো তাঁর আদি নিবাস বাংলাদেশে! চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ জয়া বচ্চনের পৈতৃক আদি নিবাস নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায়। দেশ বিভাগের আগে তাঁর বাবা তরুণ কুমার ভাদুরী কলকাতায় চলে যান। ১৯৭৩ সালের ৩ জুন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অমিতাভ ও জয়া। অসাধারণ অভিনয়ের জন্য জয়া তিনবার ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর শিরোপা পেয়েছেন। ২০০৭ সালে পেয়েছেন লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্টের সম্মান।

একসময় জয়া বচ্চন ও অমিতাভ বচ্চন দুজনই বলিউড কাঁপিয়েছেন। তবে এখনো অমিতাভ বচ্চন মর্যাদার শীর্ষে রয়েছেন। তাঁরা দুজনই চান, জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত একে অন্যের হাতে হাত রেখে জীবনটা কাটিয়ে দিতে।