আগেই নতুন পোশাক বানিয়েছিলাম

জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক
জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক
>

ঈদুল ফিতরে ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর প্রথম কিস্তি মুক্তির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়ার কথা ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ঈদে অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় অনিশ্চিত। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিরাপদে থাকতে দীর্ঘদিন ধরে ঘরে অবস্থান করছেন তিনি। কীভাবে সময় কাটছে জানালেন সম্প্রতি।

পয়লা বৈশাখ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল?
আগেই নতুন পোশাক বানিয়েছিলাম। আমরা পরিবারের লোকজন মিলে খুব মজা করে প্রতিবার পয়লা বৈশাখ পালন করি। এবারও তেমন পরিকল্পনা ছিল। নতুন জামাকাপড় পরে ছবি তুলব, বাইরে পরিবারের লোকজন মিলে দল বেঁধে ঘুরতে যাব, সবাই একসঙ্গে খাব। কিন্তু হলো না।

ঈদুল ফিতরে ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির প্রথম পর্ব মুক্তির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়ার কথা ছিল আপনার। করোনাভাইরাসের কারণে ছবিটির মুক্তি অনিশ্চিত...
বর্তমান পরিস্থিতিতে ছবিটি মুক্তি না পেলে খারাপ লাগবে না। কারণ এখন মানুষ আরও বেশি খারাপ অবস্থার মধ্যে আছেন। আগে মানুষের জীবন। মানুষকে বাঁচতে হবে। তারপর অন্য কিছু। ছবিটি হয়তো একদিন মুক্তি পাবে। তখন না হয় আমার অভিষেক হবে। আমি মনে করি, যা ঘটে তা ভালোর জন্যই ঘটে। অভিষেক আটকে যাওয়ায় আমার কোনো দুঃখ নেই, খারাপ লাগা নেই।

জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক
জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক

ঘরবন্দী কত দিন?
ময়মনসিংহে ‘আদম’ ছবির শুটিং ছিল। সেখান থেকে ফিরেছি ১৮ মার্চ। ওই দিন থেকেই পুরোপুরি ঘরে। আমাদের শুটিং আরও চার দিন বাকি ছিল। কিন্তু করোনার আতঙ্কের মধ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আগেই ফিরে এসেছি। এরপর ঘর থেকে আর কোথাও বের হইনি।

সময়টা কাটছে কীভাবে?
আমি এখন নানা-নানির বাসায় আছি। একটু বেশি ঘুমাচ্ছি। এর বাইরে বাসায় সবার সঙ্গে গল্প করে সময় কাটে। এ ছাড়া ইউটিউবে কিছু সিনেমা দেখছি। ইদানীং নানির সঙ্গে রান্নাঘরে যাচ্ছি। নানির কাছ থেকে এবং ইউটিউব থেকে শিখে টুকটাক রান্না করার চেষ্টা করছি।

কী ধরনের সিনেমা দেখছেন?
বন্ধুরা কিছু সিনেমার তালিকা দিয়েছেন, সেগুলো দেখছি। পুরোনো দিনের আমার পছন্দের কিছু হিন্দি মুভি আবার নতুন করে দেখছি। ‘সিনড্রেলা’, ‘ফ্রোজেন টু’সহ কিছু অ্যানিমেশন ছবি ও কার্টুন দেখছি।

জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক
জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক

করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো আতঙ্ক কাজ করছে?
গত দুই থেকে তিন দিন হলো আতঙ্ক কাজ করছে না। কারণ, এই প্রাণঘাতী রোগটি থেকে নিরাপদে থাকতে যা যা করার দরকার সবই পালন করছি আমি। বাইরে যাচ্ছি না, বাইরে থেকে কোনো অতিথিও বাসায় আসার অনুমতি নেই। এরপরও যদি কিছু হয়, তাহলে আর কিছু করার নেই। শুধু আমি না, আমরা বাসার সবাই বিষয়টি নিয়ে সচেতন। আমার মনে হয় সবারই নিরাপদে থাকতে দিকনির্দেশনাগুলো মানা উচিত। তাহলে এই ভাইরাস বিস্তার করতে পারবে না।

অনেকেই নিয়ম মানছেন না...
শতভাগ হয়তো মানছেন না। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে সচেতন হচ্ছেন। আমাদের এখানে সরকারের কঠিন নির্দেশের কারণে অন্তত সত্তর ভাগ মানুষ ঘরে ঢুকে গেছে। বাকি মানুষ হয়তো বাইরে বের হচ্ছেন। তবে কয়েক দিন আগে ছুটির সময় ঈদের আমেজে মানুষ দল বেঁধে গ্রামে না ফিরলে আরেকটু ভালো থাকতাম আমরা।

এই পরিস্থিতির মধ্যে কাছের মানুষদের খোঁজ খবর কতটুকু রাখতে পারছেন?
আমার বাবা-মা দুজনই পিরোজপুরে থাকেন। বাবার বয়স হয়েছে। প্রতিদিনই খোঁজ নিচ্ছি। তা ছাড়া বন্ধুবান্ধব, সহশিল্পীদেরও ফোনে খোঁজখবর রাখছি। তাঁরাও আমার খোঁজ নিচ্ছেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক
জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ছবি: ফেসবুক

পুরো পরিস্থিতি নিয়ে আপনার উপলব্ধি কী?
আমার কাছে মনে হয়, এই ঝড় একদিন থামবে আর নতুন একটা পৃথিবী পাব আমরা। কিছুদিন আগে একটা লেখায় পড়েছিলাম, এখন বরফ গলছে না। বিলুপ্তপ্রায় পশুপাখিরা আবার ফিরে আসছে। হতে পারে মানুষ এবং প্রকৃতির একটা ভারসাম্য হতে যাচ্ছে। কারণ, আমরা হয়তো প্রকৃতির ওপর বেশি অত্যাচার করে ফেলেছিলাম। আমরা এই রোগ, খাদ্যসংকট, অর্থনীতি নিয়ে ভাবছি কিন্তু প্রকৃতি নিয়ে কি ভেবেছি? পৃথিবীটি যে দিন দিন বাসযোগ্যহীন হয়ে পড়ছিল, তা নিয়ে কি ভেবেছি? পৃথিবীতে সব প্রজাতির প্রাণীর বাসযোগ্য করতে প্রকৃতি আজ মানুষকে দমিয়ে দিচ্ছে।

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে আপনার কী কী কাজ আটকে গেছে?
‘আদম’ ছবির শুটিং শেষ না করেই ফিরে এসেছি। এ ছাড়া ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর দ্বিতীয় কিস্তি ও ‘রাতজাগা ফুল’ ছবির ডাবিং বাকি আছে। এই পরিস্থিতি না হলে এত দিনে দুটি ছবিরই ডাবিং হয়ে যেত।