করোনা কেড়ে নিল যে তারকাদের প্রাণ

ইডি লার্জ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ইডি লার্জ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

করোনাথাবায় স্তব্ধ সারা বিশ্ব। বাইরে নয় বিনোদন জগতও। করোনা–আক্রান্ত হয়েছিলেন টম হ্যাঙ্কস, ইদরিস এলবারা। সেরে উঠেছেন তাঁরা। কিন্তু কোনো কোনো অভিনেতা পাড়িও জমিয়েছেন ওপারে। ব্রিটিশ কমেডিয়ান ইডি লার্জ তার মধ্যে একজন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

টিম ব্রুক টেইলর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
টিম ব্রুক টেইলর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগে থেকেই হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর এজেন্ট ও ছেলে রায়ান জানিয়েছেন, হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে তাঁর মৃত্যু হয়। ইডি লার্জের আসল নাম এডওয়ার্ড ম্যাকগিনিস। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিবিসি ওয়ানের জনপ্রিয় মুখ। কমেডি সঙ্গী সিদ লিটলের সঙ্গে তাঁর ‘লিটল অ্যান্ড লার্জ’ শো দারুণ জনপ্রিয়তা কুড়ায়। প্রায় দেড় কোটি দর্শকের হৃদয় জয় করে ওই অনুষ্ঠান। তাঁর মৃত্যুতে মাইকেল বেরিমোর, টমি ক্যানোনসহ অসংখ্য তারকা ও ভক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন।

কেন শিমুরা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
কেন শিমুরা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ব্রিটিশ কমেডিয়ান ও ‘দ্য গুডিস’খ্যাত অভিনেতা টিম ব্রুক টেইলর। ৭৯ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। ব্রুক ইংল্যান্ডের প্রথম অভিনয়শিল্পী, যিনি স্টপ-মোশন টেকনিককে লাইভ অ্যাকশন ফরম্যাটে এনেছিলেন। ১৯৭০ এর দশকের জনপ্রিয় শো ‘গুডিস’, ‘আই অ্যাম সরি, আই হ্যাভেন’ট আ ক্লু' ছাড়াও তিনি টেলিভিশন শো ‘অ্যাট লাস্ট দ্য ১৯৪৮ শো’ ও ‘ব্রডেন ইয়োর মাইন্ড’ কমেডি সিরিজের জন্য টিম ব্রুক টেইলর বিখ্যাত।

১৯৪০ সালের ১৭ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন টিম। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ১৯৬৩ সালে ফুটলাইটস ক্লাবের প্রসিডেন্ট হন। সেখান থেকেই কমেডিয়ান হিসেবে তাঁর নামডাক ছড়িয়ে পড়ে। টিমকে স্মরণ করে ব্রিটিশ কমেডিয়ান উইলিয়ামস লেখেন, ‘দ্য গুডিস দেখে আমি হাসতে শিখেছিলাম, জীবনের লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম কমেডিয়ান হবার। টিম ব্রুক টেইলর মানেই খুশি। তিনি একই সঙ্গে অত্যন্ত জ্ঞানী আর দয়ালু ছিলেন। তাঁর চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কঠিন।’

অ্যান্ড্রু জ্যাক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
অ্যান্ড্রু জ্যাক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বাংলাদেশের অনেক মানুষের কাছে তিনি পরিচিত ‘কাইশ্যা’ নামে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জাপানের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা কেন শিমুরা। ১৯৫০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাপানের টোকিও শহরের হাইকমিশুরিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেন শিমুরা। তিনি ১৯৭০ সালের দিকে অভিনয়জগতে প্রবেশ করেন। বিশ্বজুড়েই কমেডিয়ান হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় শিমুরা। বাংলাদেশে ‘পাগলা ডিরেক্টর’ নামের একটি অপেশাদার অনলাইনভিত্তিক গ্রুপ কেন শিমুরা অভিনীত বিভিন্ন ধারাবাহিক ডাবিং করে ফেসবুক এবং ইউটিউবে প্রচার করে। সেটি সব বয়সীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে বাংলায় ডাবিং করা ‘জীবনটা বেদনা, কিছু ভালো লাগেনা’ সংলাপটি দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল।

অ্যালান মেরিল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
অ্যালান মেরিল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

জনপ্রিয় সিনেমা সিরিজ ‘স্টার ওয়ারস’ অভিনেতা অ্যান্ড্রু জ্যাক মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমার ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র ও পিয়ার্স ব্রসনানের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। অ্যান্ড্রু জ্যাকের এজেন্ট জানিয়েছেন, তাঁর করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। কোনও লক্ষণ না থাকায় প্রথম দিকে বোঝা যায়নি। পরে যখন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, তখন মৃত্যুর দুদিন আগে তাঁর করোনা আক্রান্তের বিষয়টি ধরা পড়ে। ‘স্টার ওয়ারস: দ্য লাস্ট জেডি’, ‘সোলো: এ স্টার ওয়ারস স্টোরি’ ও ‘স্টার ওয়ারস: দ্যা ফোর্স অ্যাওকেনস’ সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

জো ডিফি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
জো ডিফি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন রক অ্যান্ড রোল খ্যাত সংগীতশিল্পী অ্যালান মেরিল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। জনপ্রিয় গান ‘আই লাভ রক অ্যান্ড রোল’–এর গীতিকার অ্যালান মেরিল। ছিলেন গায়ক, গীতিকার, গিটারিস্ট, অভিনেতা ও মডেল। মার্কিন নাগরিক অ্যালান মেরিল ব্রিটিশ ব্যান্ড ‘দ্য অ্যারোস’ ব্যান্ডের গীতকার ও ভোকাল ছিলেন। ব্যান্ডটি ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭—এই চার বছর সক্রিয় ছিল। এই ব্যান্ডে থাকার সময়ই তিনি ও আরেকজন মিলে গানটি লেখেন।

করোনায় মারা গেছেন আরেক গ্র্যামিজয়ী সংগীতশিল্পী জো ডিফি। ৬১ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি। জো ডিফির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তাঁর মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। এর এক দিন আগে তাঁর পেজ থেকেই জানানো হয়েছিল যে তিনি কোভিড–১৯ পজিটিভ।