প্রথম ছবিতেই হিট যেসব বলিউড নায়িকা

প্রথম ছবিতেই ‘হিট’—এমন নায়িকাদের নিয়ে থাকল এবারের আয়োজন। হালের দীপিকা পাড়ুকোন থেকে ষাটের দশকের সায়রা বানু। এই কাতারে আছে কঙ্গনা, আনুশকারাও।
‘রব নে বানা দি জোড়ি’ ছবিতে আনুশকা শর্মা ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
‘রব নে বানা দি জোড়ি’ ছবিতে আনুশকা শর্মা ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত


‘রব নে বানা দি জোড়ি’র ‘তানি’ আনুশকা শর্মা
প্রথম ছবিতেই অভিনয় শাহরুখ খানের সঙ্গে। বলিউডে খানদের ছবিতে তাঁদের দাপট থাকে সিনেমাজুড়ে। আর আনুশকা জুটি বাধলেন কিং খানের সঙ্গে। কিন্তু চঞ্চল চরিত্রের ‘তানি’ ওরফে আনুশকা শর্মা অভিষেকেই নিজেকে চেনালেন অন্যরূপে—কী নাচে, কী অভিনয়ে। ছবির গল্প সবার জানা। চঞ্চল ও নাচপাগল মেয়ে তানি। আচমকা মৃত্যু হয় বাবার। বাবা তানিকে সঁপে দিয়ে যান সুরিন্দরের কাছে। সুরিন্দর (শাহরুখ খান) ঠিক তানির উল্টো চরিত্র। শান্তশিষ্ট, মধ্যবিত্ত চাকুরে। কী আর করা। স্বামী হিসেবে সুরিন্দরকে মেনে নেয় তানি। কিন্তু মনের মধ্যে নাচের ঝলক জেগে ওঠে। এদিকে সুরিন্দর বিয়ে করে যেন নতুন করে প্রেমে পড়ে তানির। তানির মন ভালো থাকে এমন সব কাজ করতে প্রস্তুত তিনি। তানি ভর্তি হয় নাচের ক্লাসে। সুরিন্দর এবার তার রূপ বদলে রাজ কাপুর সেজে ওই নাচের ক্লাসেই ভর্তি হন। দুজনের শুরু হয় দোস্তি। গড়ায় প্রেমেও। কিন্তু তানি কাকে ভালোবাসে, সুরিন্দর নাকি রাজকে? এমন দ্বন্দ্ব নিয়ে এগিয়ে চলা ছবিটি অভিনয়, নাচ আর বলিউডের রোমান্টিক গল্প দিয়ে মাত করে রাখে দর্শকদের। প্রথম ছবিতেই নাচ আর অভিনয় দিয়ে আনুশকা শর্মা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, সহজে মিলিয়ে যেতে আসেননি তিনি। প্রথম ছবিতেই হিট। আর এখন, বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের একজন।

‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোন ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোন ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত


‘ওম শান্তি ওম’–এর ‘শান্তিপ্রিয়া’ দীপিকা পাড়ুকোন
শাহরুখ খানকে নিয়ে বন্ধু নির্মাতা ও পরিচালক ফারাহ খান নির্মাণ করবেন মিস্ট্রিয়াস একটি ছবি। যে ছবিতে শাহরুখ ও নায়িকা দুজনেরই দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। ফারাহ খান শাহরুখের নায়িকা হিসেবে আস্থা রাখলেন একজন খেলোয়াড়ের মেয়ের ওপর। ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় প্রকাশ পাড়ুকোনের মেয়ে দীপিকা পাড়ুকোন এলেন নায়িকারূপে। এসেই বাজিমাত। ‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে কিং খানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন দীপিকা। কুড়িয়েছেন প্রশংসাও। সেই শুরু, এখনো অভিনয় করেই চলছেন। এই সময়ে বলিউডের শীর্ষ নায়িকা বললে দীপিকা পাড়ুকোনের নাম আসবে সবার আগে।

‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে কঙ্গনা রনৌত ও এমরান হাশমি। ছবি: সংগৃহীত
‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে কঙ্গনা রনৌত ও এমরান হাশমি। ছবি: সংগৃহীত


‘গ্যাংস্টার’ ছবির ‘সিমরান’ কঙ্গনা রনৌত
হিমাচল প্রদেশের মেয়ে কঙ্গনার বলিউড–যাত্রা খুব সহজ নয়। ভাঙা হিন্দি বলা মেয়েটি এখন শুধু অভিনয়শিল্পীই নন, পরিচালকও। ‘মনিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ ছবিতে অভিনয়ের পাশপাশি পরিচালনার ভারটিও বহন করেছেন। বলিউডে অভিনয় দিয়েই টিকে আছেন এই অভিনেত্রী। নায়কদের ভিড়ে যেখানে বলিউডে নায়িকা কেবলই ‘শো–পিস’, সেখানে কঙ্গনার ছবিগুলো থাকে কঙ্গনাকে ঘিরেই। ‘কুইন’ থেকে শুরু করে ‘তানু ওয়েডস মানু’ কিংবা ‘ফ্যাশন’—কঙ্গনা নিজের স্বাক্ষর রেখেছেন অভিনয়ে। ২০০৬ সালের ‘গ্যাংস্টার’ ছবির নায়িকার চরিত্রটি করতে পরিচালক অনুরাগ বসু ভরসা করেন এই নবাগতর ওপর। অনুরাগের ভরসার বিফলে যায়নি। প্রথম ছবিতেই নিজেকে চিনিয়েছেন কঙ্গনা। পরের বছর ২০০৭ সালে অনুরাগের আরেক ছবি ‘লাইফ ইন মেট্রো’তেও তাই অনুরাগ নিলেন কঙ্গনাকেই।

‘সারগাম’ ছবিতে জয়া প্রদা। ছবি: সংগৃহীত
‘সারগাম’ ছবিতে জয়া প্রদা। ছবি: সংগৃহীত

‘সারগাম’ ছবির ‘হেমা’ জয়া প্রদা
১৯৭৯ সাল। পরিচালক কে বিশ্বনাথ তেলুগু ছবি ‘শ্রী শ্রী মুবা’–এর রিমেক করবেন হিন্দিতে। অসাধারণ এই মিউজিক্যাল সিনেমার নায়ক ঋষি কাপুর। নায়িকা একজন নৃত্যশিল্পী। মিউজিক্যাল হওয়ায় ছবির গানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লক্ষ্মীকান্ত–পেয়ারেলালকে। গানগুলো গাইবেন মোহাম্মদ রাফি আর লতা মঙ্গেশকর জুটি। ছবির সবকিছুই তারকা দিয়ে ঠাসা। কিন্তু নায়িকা কে? কে বিশ্বনাথ তারকায় ঠাঁসা এই ছবিতে নিয়ে এলেন নতুন এক নায়িকাকে। নাম—জয়া প্রদা। ‘সারগাম’ নিয়ে কি কিছু বলার আছে? বলিউড এই মিউজিক্যালে জয়ার সৌন্দর্যের দাগ এখনো মুছে যায়নি সে সময়ের দর্শকদের হৃদয় থেকে।

‘জংলি’ ছবিতে সায়রা বানু। ছবি: সংগৃহীত
‘জংলি’ ছবিতে সায়রা বানু। ছবি: সংগৃহীত

‘জংলি’ ছবির ‘রাজকুমারী’ সায়রা বানু
বলিউডে অভিনয়ের এক দশক শেষ শাম্মী কাপুরের। তাঁর সঙ্গেই কিনা অভিনয় করতে এসেছে ১৬ বছরের সায়রা! সে যা–ই হোক। অত চিন্তা কী? এক শাম্মীকে দেখেই তো দর্শক মাত। নায়িকার অত গুরুত্বের কী দরকার। এই হলো হিসাব–নিকাশ। কিন্তু ‘জংলি’ ছবি মুক্তির পর সব হিসাব–নিকাশ যে উল্টে গেল। ছবির রাজকুমারী চরিত্রের সায়রা বানু দর্শকের ‘রাজকুমারী’ হয়ে দেখা দিলেন। আর দর্শকের মুখে, শুধু সায়রা আর সায়রা। শাম্মী কাপুর যেন উড়ে গেলেন সায়রা বানুর রূপের ছটায়। সেই তো শুরু। তারপর কেবলই এগিয়ে চলা। হয়ে ওঠা সৌন্দর্যের প্রতীক ‘প্রাচ্যের ভেনাস’ হিসেবে।