শাহরুখ-ভক্ত হোন বা না হোন...

‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘চাক দে ইন্ডিয়া’, ‘স্বদেশ’ ছবির পোস্টার
‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘চাক দে ইন্ডিয়া’, ‘স্বদেশ’ ছবির পোস্টার

জরিপ বলে, বিশ্বে প্রতি পাঁচজনের একজন শাহরুখ খানের ভক্ত। যদিও অন্তত ৯৫টি সিনেমায় অভিনয় করে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো জাতীয় পুরস্কার পাননি, তবে ভারত সরকার বলিউডের এই বাদশাহকে পদ্মশ্রী দিতে ভুল করেনি। সে যা-ই হোক, লকডাউনে আপনি দেখে ফেলতে পারেন শাহরুখের সিনেমা। কে জানে, আপনি যদি এর আগে শাহরুখকে সেভাবে আলাদা করে নজর না দিয়ে থাকেন, তাহলে কোয়ারেন্টিনে বসে তাঁর ছবি দেখে ভক্ত হয়ে গেলেন!

শাহরুখ খান যেবার প্রথম ছোট পর্দার জন্য অডিশন দিতে গিয়েছিলেন, কাস্টিং ডিরেক্টর তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমার চেহারা এতটাই কুৎসিত আর সাধারণ যে তোমাকে নেতিবাচক চরিত্রে খুব ভালো মানিয়ে যাবে। এমনকি যেকোনো চরিত্রে তুমি মানিয়ে যাবে।’ মজার ব্যাপার হচ্ছে, যেবার বড় পর্দার জন্য অডিশন দিলেন, তখনো একাধিক পরিচালক একই কথা বলেছিলেন। তাই ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে তিনি বাজিগর, ডর, আনজাম সিনেমাগুলোতে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে নাম কামান। তাই রোমান্টিক শাহরুখকে ভিলেনরূপে দেখার জন্য আপনি ছবিগুলো দেখে ফেলতেই পারেন।

প্রথমবার ২৭ বছর বয়সে মূল চরিত্র হয়ে শাহরুখ ক্ষণিকের জন্য জ্বলে উঠে নিভে যাওয়া তারকা দিব্যা ভারতীকে সঙ্গী করে বড় পর্দায় আসলেন। আর ১৪টি ফিল্মফেয়ারের প্রথমটি জিতে নিলেন প্রথম ছবিতেই। দেখে ফেলতে পারেন সেই ‘দিওয়ানা’ (১৯৯২)। ১৯৯৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর বলিউডে রীতিমতো ছড়ি ঘুরিয়ে রাজত্ব করেছেন শাহরুখ খান। এই সময়টা শাহরুখের ৫৪ বছরের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জীবনের যা কিছু বড় অর্জন, সব এসেছে এই সময় থেকে। দিল সে সিনেমার শাহরুখকে দর্শক মনে রেখেছে। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কাভি খুশি কাভি গম’ সিনেমাগুলো শাহরুখকে রোমান্সের বাদশাহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর ‘দেবদাস’ মুক্তির পর সমালোচকেরা বলেছিলেন, এই শাহরুখকে মানুষের হৃদয় থেকে মুছতে অনেক সময় লাগবে! কিন্তু ‘স্বদেশ’ সিনেমায় এক দেশপ্রেমিক নাসার বিজ্ঞানী ঝাপসা করে দিল পার্বতীর প্রেমে পাগল–মাতাল দেবদাসকে। আর ‘চাক দে ইন্ডিয়া’য় হকি কোচ কবির খানকে দেখে সমালোচকেরা ডিভিওতে রীতিমতো প্রতিবাদ জানিয়ে বললেন, এতদিন ধরে প্রেমিক শাহরুখকে দেখিয়ে দেখিয়ে শাহরুখের অভিনয় প্রতিভার অপচয় করেছেন পরিচালকেরা।

অভিনেতা শাহরুখকে যোগ্য চরিত্র দিন। কিন্তু শাহরুখ তো শুরু থেকেই ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্র করেই শাহরুখ হয়েছেন। তাই প্রথাবিরোধী, নিরীক্ষামূলক চরিত্রের শাহরুখকে দর্শক গ্রহণ করেনি। গত ১০ বছরে শাহরুখের একমাত্র সুপারহিট ছবি ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’। তবে শাহরুখ ভক্তদের কথা দিয়েছেন, এই দশকে শাহরুখ তাঁর জীবনের সেরা ছবিগুলো উপহার দেবেন। ফিরবেন তিনি শাহরুখের মতোই।

চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে, শাহরুখের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছবি ‘ইন হুইচ অ্যানি গিভস ইট দোজ ওয়ান্স’ (১৯৮৯)। এই ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য অরুন্ধতী রায়ের। পর্দায় শাহরুখকে সঙ্গী করে অভিনয়ও করেছেন অরুন্ধতী। আরও দেখে ফেলতে পারেন ‘রাজু বান গ্যায়া জেন্টালম্যান’, ‘আর্মি’, ‘পরদেশ’, ‘মোহাব্বতে’, ‘ম্যায় হু না’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘জাব তাক হ্যায় জান’, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’, ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ বা ‘ডন’ সিরিজ। দেখতে পারেন শাহরুখের ওপর নির্মিত সাতটি প্রামাণ্যচিত্রও।