ঘরেই গান, ঘরেই ভিডিও

তাহসান,হৃদয় খান,হাবিব ওয়াহিদ,ঐশী
তাহসান,হৃদয় খান,হাবিব ওয়াহিদ,ঐশী

ঘরে থাকছেন, তবে চুপচাপ বসে নেই গানের মানুষেরা। সাধারণ ছুটিতে বাড়িতে বসে ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি গানও করছেন তাঁরা। যাঁদের বাড়িতে আছে হোম স্টুডিও, তাঁরা গান বাঁধছেন। আর যাঁদের নেই, সেই শিল্পীরা মোবাইল ফোনে গান ধারণ করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন অন্যের স্টুডিওতে। সবাই মিলে বাসায় বসেই তৈরি করছেন মিউজিক ভিডিও এবং প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

 করোনাকালে বাঁধা এ গানগুলোর মধ্যে আছে করোনা নিয়ে গান এবং পুরোনো জনপ্রিয় গান। স্টুডিও বা বসার ঘরে, বেলকনি বা ছাদে গানটির জন্য শিল্পীরা ভিডিও করেছেন স্বজনদের সহায়তায়। কোনো কোনো গানে ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁদের ফোনে বা কম্পিউটারে থাকা পুরোনো কিছু ভিডিও ফুটেজ। তারপর অডিও-ভিডিওর সমন্বয়ে সম্পাদিত গানগুলো শিল্পীরা প্রকাশ করছেন নিজের ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে। এসবের কিছু গান আবার অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলের জন্যও তৈরি করছেন কোনো কোনো শিল্পী।

বাড়িতে বসে এ পর্যন্ত করোনা নিয়ে তিনটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী আসিফ আকবর। এরই মধ্যে সেগুলো প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ছাড়া ‘বাংলা হাসবে’ শিরোনামে দুই বাংলার বেশ কয়েকজন শিল্পীর গাওয়া একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন আসিফও। তিনি বলেন, ‘কলকাতার প্রীতমের কথা ও সুরে “বাংলা হাসবে” গানটি মুঠোফোনে কণ্ঠ ও ভিডিও ধারণ করে পাঠিয়েছি। শিগগির প্রকাশিত হবে সেটি।’

 এ সময়ে বই পড়ায় মনোযোগী হয়েছেন সংগীত তারকা তাহসান খান। এরই মধ্যে ছয়টি ইংরেজি গান কভার করছেন তিনি। গত মঙ্গলবার ইউটিউবে ‘কুয়াশা’ শিরোনামে একটি গান প্রকাশ করেছেন হাবিব ওয়াহিদ।

 করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই বাসায় স্টুডিও করেছিলেন শিল্পী কনা। তিনি জানালেন, এরই মধ্যে তিনটি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া পয়লা বৈশাখের গানসহ গেয়েছেন মোট চারটি গান। অন্যদিকে নিজের একক চারটি গানের কাজ শেষ করেছেন হৃদয় খান।

 জগজিৎ সিংয়ের গাওয়া ‘বেদনা মধুর হয়ে যায়’ ও পথিক নবীর ‘আমার একটা নদী ছিল’ গান দুটি কভার করেছেন ইমরান মাহমুদুল। স্টুডিওতে ভিডিও করা গান দুটি কয়েক দিন আগে তাঁর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। ইমরান মাহমুদুল বলেন, ‘স্টুডিওতে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করে প্রথম আলোর জন্য একটি গান করেছি। নিজের সুর–সংগীতে তিনটি রোমান্টিক গানেও কণ্ঠ দিয়েছি। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হলে ভালো করে ভিডিও করব গানগুলো।’

 নিজের গাওয়া ‘আকাশ বাতাস’, ‘সোনালি কাবিন’, ‘বনলতা সেন’, ‘আহা’সহ অনেক পুরোনো গান নতুনভাবে সংগীত পরিচালনা করেছেন কিশোর। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে এ গানগুলো আমি মঞ্চ ও টেলিভিশনে গাই। ঘরে থাকার সুবাদে নতুন করে এ ধরনের প্রায় ১০টি গান করলাম।’ করোনায় সচেতনতামূলক বেশ কয়েকটি গানে একাধিক শিল্পীর সঙ্গে কণ্ঠও দিয়েছেন তিনি।

 আজব রেকর্ড, আরটিভি ও প্রথম আলোর জন্য চারটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাব্বির। পাশাপাশি করেছেন একটি জিঙ্গেলও। করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতামূলক ‘হার মানব না’, ‘এসো সবাই’, ‘দেব পাড়ি’ গানগুলোতে অনেক শিল্পীর সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন ঐশী। নিজের স্টুডিওতে বসে নজরুলসংগীত ‘খোদা এই গরিবের’, ‘হে নামাজি’ গেয়েছেন তিনি। ইউটিউব ও ফেসবুকে পাওয়া যাবে গান দুটি। ‘হার মানব না’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন বেলাল খানও। এ ছাড়া আরও তিনটি গান নিজের স্টুডিওতে বসে সুর–সংগীত করেছেন তিনি। তিনি জানান তাঁর সুরাপিত ‘বন্ধু’, ‘সই’, ‘যদি একবার দেখা পাই’সহ তিনটি গানে অন্য শিল্পীরা কণ্ঠ দেবেন।

 শিল্পী কোনালের উদ্যোগে বেশ কয়েকজন শিল্পী মিলে কভার করেছেন ‘আমরা করব জয়’ গানটি। সেখানে ছাড়াও সম্মিলিত কণ্ঠে তিনি গেয়েছেন ‘হার মানব না’, ‘এসো সাথে সবাই’, ‘জয় হবে নিশ্চয়ই’। এ ছাড়া প্রথম আলোর জন্য গেয়েছেন চারটি গান।