নতুন বছরে নতুন থ্রিলারে সময় কাটুক

‘দ্বিতীয় পুরুষ’, `এস্কেপ ফ্রম প্রিটোরিয়া’ ও ‘আনজাম পাথিরা’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘দ্বিতীয় পুরুষ’, `এস্কেপ ফ্রম প্রিটোরিয়া’ ও ‘আনজাম পাথিরা’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

‘প্রিজন ব্রেক’ সিরিজ বা ‘শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ সিনেমা যাঁদের দেখা আছে তাঁদের কাছে জেল পালানোর সিনেমা নতুন নয়। আর যদি আমেরিকার অন্যতম সুরক্ষিত আলকাতরেজ কারাগার থেকে পালানোর ঘটনা নিয়ে ‘এস্কেপ ফ্রম আলকাতরেজ’ দেখে থাকেন তবে ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এস্কেপ ফ্রম প্রিটোরিয়া’ ছবির প্লটও নতুন লাগার কথা নয়।

আলকাতরেজের মতোই ‘এস্কেপ ফ্রম প্রিটোরিয়া’ সিনেমাকে আলাদা রসদ দিয়েছে এর বাস্তব ঘটনা। সাল ১৯৭৮। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ তখন চরমে। কয়েক বছর আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলার রাজনৈতিক দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)। এ অবস্থাতেই এএনসির অস্তিত্ব জানান দিতে টিমোথি পিটার জনসন ও স্টিফেন লি নামের দুই তরুণ লিফলেট ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে অংশ নেন। পেশায় গবেষক জনসন উদ্ভাবন করেন লিফলেট বোমা, যা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন কালো চামড়ার মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার বার্তা লেখা লিফলেট। কেপটাউনের ব্যস্ত সড়কে ১৯৭৮ সালের ২ মার্চ এ কাজ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন জনসন ও লি। বিচার শেষে তাঁদের দুজনকেই পাঠানো হয় প্রিটোরিয়া কেন্দ্রীয় কারাগারে।
সিনেমা শুরু হয় এখান থেকেই। তবে শেষ হওয়ার আগে আছে কারাগারের ৯ স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরোনোর গল্প। ড্যানিয়েল র‌্যাডক্লিফ ও ড্যানিয়েল ওয়েবার অভিনীত ‘এস্কেপ ফ্রম প্রিটোরিয়া’ মুক্তি পায় চলতি বছরের ৬ মার্চ। এ বছর আরও মুক্তি পাওয়া ইংরেজি ভাষার সিনেমাগুলোর মধ্যে দেখতে পারেন ‘দ্য ইনভিজিবল ম্যান’, ‘দ্য হান্ট’, ‘প্রমিজিং ইয়াং ওম্যান’ ও ‘দ্য রিদম সেকশন’।

` দ্বিতীয় পুরুষ` ছবির দৃশ্য।
` দ্বিতীয় পুরুষ` ছবির দৃশ্য।

কোরিয়ান থ্রিলারের বিপরীতে মালয়ালাম সিনেমাকে দাঁড় করানো সিনেমাপ্রেমীদের জন্য এ বছর এখনো সুখকর মুহূর্ত আসেনি। তবে ‘আনজাম পাথিরা’ কিছুটা বারুদের জোগান দিতে পারে। কোচি থানা থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে নিখোঁজের পর নিহত হওয়া পুলিশ সদস্যদের খুনিকে খুঁজে বের করা নিয়ে এগিয়েছে এই সিনেমা। আর এখন পর্যন্ত পাওয়া জনপ্রিয়তা বিবেচনায় আইএমডিবির তালিকায় মালয়ালাম ভাষার থ্রিলারগুলোর মধ্যে ওপরের দিকে আছে ‘ট্রান্স’ ও ‘ভাইরাস’।
বাংলা ভাষার থ্রিলার সিনেমাগুলোর মধ্যে বেশ রাখঢাক করেই এ বছর ‍মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখার্জির ‘দ্বিতীয় পুরুষ’। ২০১১ সালের ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর পরবর্তী কিস্তি এ সিনেমা। তবে ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ দেখতে বসে যদি ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর স্বাদ ভুলে না যান, তবে খানিকটা হতাশই হতে হবে।

` আনজাম পাথিরা` ছবির দৃশ্য।
` আনজাম পাথিরা` ছবির দৃশ্য।

কলকাতার চায়নাটাউনে বেড়ে ওঠা খোকা নামের এক কিশোরের মাথায় খুনের নেশা চেপে বসে। হত্যার পর নিহত ব্যক্তির কপালে লিখে দিত তার নাম। যাকে একসময় গ্রেপ্তার করেন প্রণব রায় চৌধুরী নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। কিন্তু এর ২৫ বছর পর ঠিক একই কায়দায় আবার একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটতে থাকে। এবারও ভুক্তভোগীদের কপালে লেখা খোকার নাম। সিনেমার বেশির ভাগ সময়জুড়ে এই খোকাকে আড়ালে রাখেননি পরিচালক। বরং শেষ দিকে এসে যখন আসল খোকার পরিচয় মেলে, তখনই চমকে যেতে হয়। বাংলা ভাষার থ্রিলার সিনেমা দেখার তালিকায় আরও রাখতে পারেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত অভিনীত ‘দ্য পার্সেল’ ও রুপঙ্কর বাগচী অভিনীত ‘সিন সিস্টার’ ছবি দুটো। তবে সব নতুনে যে মন ভরবে সে নিশ্চয়তা নেই।