ইরফান-শোকের মধ্যেই চলে গেলেন ঋষি কাপুর

পর্দায় ঋষি কাপুর ও ইরফান খান, যেন সহযাত্রী অনন্ত পথেরও। ছবি: ফেসবুক থেকে।
পর্দায় ঋষি কাপুর ও ইরফান খান, যেন সহযাত্রী অনন্ত পথেরও। ছবি: ফেসবুক থেকে।

এক দিনের ব্যবধানে বলিউডে আবার বড় ধাক্কা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিদায় নিলেন বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা ঋষি কাপুর। ৬৭ বছরের ঋষি ক্যানসারে ভুগছিলেন। বলিউডের আরেক বরেণ্য অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন টুইটে ঋষি কাপুরের প্রয়াণের খবর নিশ্চিত করেন। তিনি লিখেছেন, ‘ও নেই...! ঋষি কাপুর নেই...এই মাত্র চলে গেল...আমি শেষ হয়ে গেলাম!’

গতকাল বুধবারই অভিনেতা ইরফান খান প্রয়াত হয়েছেন। গতকাল রাতেই ঋষি কাপুর হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ সকালে এল দুঃসংবাদ।

জানা গেছে, গতকাল হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে মুম্বাইয়ের স্যার এইচ এন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী নীতু কাপুর। রাতে ভাই রণধীর কাপুর জানিয়েছিলেন, ঋষি ভালো নেই। শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তবে তিনি ঋষি লাইফ সাপোর্টে যেতে নারাজ ছিলেন। এই অবস্থায় চিকিৎসা চলছিল। তবে সকালেই সব শেষ, শেষবার মুম্বাইয়ের বাতাসে নিশ্বাস ছাড়লেন তিনি। তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী নীতু, ছেলে রণবীর ও কন্যা ঋদ্ধিমাকে।

তরুণ ঋষি কাপুর। ছবি: ফেসবুক
তরুণ ঋষি কাপুর। ছবি: ফেসবুক

২০১৮ সালে ঋষি কাপুরের ক্যানসার ধরা পড়ে। সে বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়ে যান ঋষি কাপুর। দীর্ঘ এক বছর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য সেখানেই ছিলেন। প্রথমে খবরটি পুরোপুরি গোপন রাখেন। তাঁর অসুস্থতার খবর জানানোর ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। সংবাদমাধ্যম থেকে বারবার প্রশ্ন করা হলেও অনেক দিন সরাসরি কেউ কিছু বলেননি। কিন্তু একসময় সবই জানাজানি হয়ে যায়।

একসময় নিজেই ক্যানসার নিয়ে বলেছেন ঋষি কাপুর। ইনস্টাগ্রামে আবেগাপ্লুত ঋষি কাপুর লিখেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আবার জীবনযুদ্ধে ফিরতে পেরেছি। তিনি আমাকে ধৈর্য ধরতে শিখিয়েছেন। আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। আমি এখন ক্যানসারমুক্ত।’ ঋষি কাপুর আরও বলেছেন, ‘ক্যানসার থেকে মুক্ত হয়ে নতুন করে জীবনে ফেরা মোটেও সহজ ছিল না। এর জন্য ধন্যবাদ জানাই চিকিৎসক, আমার পরিবার আর ভক্তদের। এই কঠিন সময়ে সবাই আমার পাশে থেকেছেন।’

ভারতের একসময়ের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ কাপুরের ছেলে ঋষি কাপুরের ছবিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সে। ‘‌শ্রী ৪২০’‌ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। ‘মেরা নাম জোকার’‌, ‘‌ববি’‌ ছবিতে অসামান্য অভিনয় করেছিলেন ঋষি। ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত দাপিয়েছেন বলিউডে। ‘‌অমর আকবর অ্যান্টনি’‌, ‘‌কুলি’‌, ‘‌চাঁদনি’‌, ‘‌কর্জ’ ছবিতে অভিনয় দক্ষতা তুলে ধরেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে ‘হাম তুম’, ‘অগ্নিপথ’ এবং ‘কাপুর অ্যান্ড সন্স’–এর মতো ছবিতে তাঁর চরিত্রের জন্য দাগ রেখে গেছেন ঋষি কাপুর। এ ছাড়া করেছিলেন আরও অসংখ্য ছবি। ১৯৭০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন ঋষি কাপুর।

স্ত্রী সঙ্গে ঋষি কাপুর। ছবি: ফেসবুক
স্ত্রী সঙ্গে ঋষি কাপুর। ছবি: ফেসবুক

ঋষি কাপুরকে শেষ দেখা গেছে ইমরান হাসমির ‘বডি’ ছবিতে, ডিসেম্বরে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এরপর তাঁকে দেখা যাবে ‘দ্য ইনটার্ন’-এর হিন্দি রিমেকে দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে। নিউইয়র্ক থেকে ফেরার পর ‘শর্মাজি নমকিন’ নামে একটি ছবিতে জুহি চাওলার সঙ্গে শুটিং শুরু করেন কিন্তু তাঁর অসুস্থতার কারণে তা বাতিল করা হয়।