সিঙ্গাপুরের বাঙালিদের জন্য ঢাকা কলকাতার তারকাদের আয়োজন

প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা ও লোপামুদ্রা। ছবি: সংগৃহীত
প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা ও লোপামুদ্রা। ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারিতে বসে থেকে ক্লান্ত সিঙ্গাপুরে থাকা বাঙালি শ্রমজীবীরা। তাঁদের চাঙা করতে ইতিবাচক সব গল্প ও গান শোনাবেন কলকাতা ও ঢাকার তারকারা। শিল্পীদের এ দলে থাকবেন প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা, লোপামুদ্রা, ফেরদৌস, তিশা ও ফারুকী। সিঙ্গাপুরের বাঙালি শ্রমজীবীদের দুশ্চিন্তা কাটিয়ে চাঙা করে তুলতে এ উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। এ জন্য প্রচারিত হতে যাচ্ছে ‘আওয়ার স্টোরিজ ইউর স্টোরিজ’ নামের একটি অনুষ্ঠান।

সিঙ্গাপুর সরকারের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েব পোর্টালে প্রতি সপ্তাহে দেখা যাবে আওয়ার স্টোরিজ ইউর স্টোরিজের একটি করে পর্ব। একই সঙ্গে সরকারের কাছে সংরক্ষিত শ্রমজীবীদের হোয়াটসঅ্যাপেও চলে যাবে পর্বগুলো। শুধু তা–ই নয়, প্রতিটি পর্ব দেখার পর সেটার বিষয়বস্তুর ওপর নিজের জীবনের গল্প লিখে পাঠাতে পারবেন বাঙালিরা। অনুষ্ঠানটির প্রযোজক ভারতের শ্রেয়সী সেন জানিয়েছেন, তারকাদের জীবনের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্ব। একেকটি পর্ব প্রচারের পর সেই পর্ব ধরে ধরে শ্রমিকদের তাঁদের জীবনের গল্প লিখতে বলা হবে। একটি ওয়েব পোর্টালে সেই গল্প জমা দিতে হবে। বাছাইকৃত সেরা পাঁচটি গল্প ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেওয়া হবে সিঙ্গাপুর সরকারকে। সেখান থেকে দুটি গল্প নিয়ে নির্মিত হতে পারে চলচ্চিত্র।

সিঙ্গাপুরে কর্মরত শ্রমজীবীরা দীর্ঘদিন বসে থেকে ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভুগছেন অবসাদে। তাঁদের দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে উদ্যোগটি নিয়েছে দেশটির সরকার। এতে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের কলকাতার বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। সচেতনতামূলক এ অনুষ্ঠানে তারকারা বলবেন তাঁদের জীবনের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, কেউ শোনাবেন গান, কেউ পড়বেন কবিতা। দুই দেশের ছয়জন তারকাকে নিয়ে ধারণ করা হচ্ছে অনুষ্ঠানটির ছয়টি পর্ব। এই তারকারা হলেন কলকাতার অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কণ্ঠশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র, বাংলাদেশের অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এই ছয় তারকা ছয়টি ভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিডিওতে উপস্থিত হবেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন কলকাতার সার্থক দাশগুপ্ত।

ফেরদৌস, তিশা ও ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত
ফেরদৌস, তিশা ও ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত

প্রযোজক শ্রেয়সী সেন বলেন, ‘আমাদের সিঙ্গাপুরভিত্তিক পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান দর্পণের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। এই দুঃসময়ে শ্রমিকদের উৎসাহ দিতে প্রথমে তারা গানবাজনা আয়োজনের কথা বলেছিল। কিন্তু সংযমের মাস হওয়ায় আমি রাজি হইনি। পরে আমার পরিকল্পনায় রাজি হয় তারা। দেশের বাইরে শ্রমিকেরা অবসরে গান শোনেন, সিনেমা দেখেন। সুতরাং এসব তারকার গল্প তাঁদের অনুপ্রাণিত করবে।

শ্রেয়সী জানান, তারকারা নিজ নিজ ঘরে বসে ফোনে ভিডিও করে কনটেন্টগুলো পাঠাচ্ছেন। এরই মধ্যে ফেরদৌসের পর্বটি তৈরি হয়েছে। এরপর ধারণ করা হবে ঋতুপর্ণের পর্বটি। বাকিগুলো হবে পর্যায়ক্রমে। বুধবার সন্ধ্যায় ফেরদৌসের পর্বটি প্রচারিত হবে।

এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ফেরদৌস বলেন, ‘এটি একটি মানবিক ব্যাপার। সারা পৃথিবী এখন শঙ্কার মধ্যে আছে। আমাদের দেশের শ্রমিক ভাইয়েরা বিপদে আছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারছি, নিজেরও ভালো লাগা কাজ করছে।’

দেশের বাইরে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সিঙ্গাপুরে কর্মরত বহু শ্রমিক। সেখানকার হাসপাতাল ও ডরমিটরিতে চলছে তাঁদের চিকিৎসা। দীর্ঘদিনের লকডাউনে সব ধরনের কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। চিকিৎসার পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রতিদিনের খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করছে তারা। বন্ধ থাকা এই সময়ে তাঁদের বেতনও নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকার।