তিয়াত্তর পেরিয়েও ছুটছেন শর্মিলী আহমেদ

শর্মিলী আহমেদের আজ জন্মদিন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
শর্মিলী আহমেদের আজ জন্মদিন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

তিয়াত্তর পেরিয়েছেন তিনি। বিরামহীন পথচলা তাঁর। ছিলেন ষাটের দশকের অন্যতম নায়িকা। তখন থেকে নিরন্তর অভিনয় করে চলেছেন। শর্মিলী আহমেদকে ছাড়া এখনো কি অভিনয়জগৎ ভাবা যায়? সিনেমায়, নাটকে মায়ের চরিত্রে তাঁর বিকল্প খুব কম। বয়সকে তুড়ি মেরে প্রায় পাঁচ দশক ধরে বিরতিহীন অভিনয় করে চলছেন।

শর্মিলী আহমেদের আজ জন্মদিন। দেশের এই পরিস্থিতিতে জন্মদিন উদ্‌যাপনের প্রশ্ন আসে না। কিন্তু করোনাকালে কেমন আছেন শোবিজে সবার প্রিয় মুখ? শর্মিলী জানান, বয়সের ভারে কখনো বসে থাকেননি ঘরে, অথচ সেই অভিনেত্রীকেই চার দেয়ালে বসিয়ে রেখেছে করোনা পরিস্থিতি।

ছিলেন ষাটের দশকের অন্যতম নায়িকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
ছিলেন ষাটের দশকের অন্যতম নায়িকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর অভিনয়শিল্পী সংঘসহ নাটকের অন্যান্য সংঠন শুটিং বিরতিতে যায় ১৯ মার্চ থেকে। অন্য অভিনয়শিল্পীদের মতো এই সিদ্ধান্তে কর্মবিরতি এসে পড়ে শর্মিলী আহমেদের ঘাড়েও। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ঘরবন্দী তিনি। এনটিভিতে প্রচার চলা জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’–এ অভিনয় করছিলেন শর্মিলী। এখন এ নাটকের শুটিংয়ে সময় দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তিনি কথা রাখতে চাইলেও বাদ সাধল সময়।

শর্মিলী আহমেদ বললেন, ‘বাসা থেকে কোথাও বের হচ্ছি না। নাটকের শুটিং ছিল। তা এখন তো শুটিং হচ্ছে না। আবার কবে শুটিং হবে জানি না। ছুটির মেয়াদ বাড়াবে কি না তা–ও জানি না।’

কখনো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন কি না, জানতে চাইলে এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, ‘শুধু আমি কেন, গত ১০০ বছরে এ রকম অবস্থা দেখেনি কেউ। যুদ্ধের সময়টাও এখনকার সময়ের চেয়ে ভিন্ন ছিল। এ কিসের মধ্যে পড়লাম বুঝতে পারছি না।’ শর্মিলী আহমেদ জানান, তিনি সব দুর্যোগেই অভিনয় করে গেছেন। বন্যা, হরতাল, বাজে আবহাওয়া, কোনো কিছুতেই অভিনয়ে ছেদ পড়েনি।

‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের শিল্পীদের সঙ্গে শর্মিলী আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকের শিল্পীদের সঙ্গে শর্মিলী আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতি একেবারেই অন্য রকম। তাঁর দীর্ঘ অভিনয়জীবনে এমন প্রতিবন্ধকতার সামনে তিনি পড়েননি। করোনা মোকাবিলার স্বার্থে তিনি বাসায় থাকছেন। যথাসাধ্য পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করছেন। বাসা থেকে বের হওয়ার চিন্তাও মাথায় আনছেন না।

শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক। ১৯৪৭ সালের ৮ মে রাজশাহীতে তাঁর জন্ম। রাজশাহী বেতারের শিল্পী ছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম ছবি উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘ঠিকানা’ মুক্তি পায়নি। ষাটের দশকে নায়িকা হিসেবে তিনি নাম কামিয়েছেন সুভাষ দত্তের ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’, ‘আবির্ভাব’ ছবিতে। কিছু উর্দু ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।

স্বামী পরিচালক রূপকারের (রকিবউদ্দিন আহমেদ) ‘পলাতক’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ। স্বাধীনতার পরে ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’, ইত্যাদি ছবিতে অভিনয় করেন। ‘আগুন’ ছবিতে প্রথম তিনি বয়সী মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। এ ছাড়া কয়েক শ টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ।