গ্রামে ৮০ মণ চাল, ঢাকায় মাস্ক

শাকিল খান। ছবি সংগৃহীত।
শাকিল খান। ছবি সংগৃহীত।

করোনায় এই সময়ে মাস্ক নিয়ে সাহায্যে এগিয়ে এলেন নায়ক শাকিল খান। গতকাল তিনি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের জন্য কেএন–৯৫ মাস্ক সরবরাহ করেন। এই মাস্ক এন-৯৫ মাস্কের বিকল্প। আজ আরও কিছু জায়গায় মাস্ক পৌঁছে দেবেন। সব মিলিয়ে তাঁর এই মাস্কের সংখ্যা ১ হাজার ৭০০। এ ছাড়া এই চলচ্চিত্র নায়ক করোনা শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই চাল ও নগদ টাকা নিয়ে গ্রামের বাড়ির মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

গতকাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের ব্যবহারের জন্য ২০০টি মাস্ক দেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, 'এখন যাঁরা কাজ করছেন, সার্বিকভাবে ঝুঁকি নিয়ে সব সময় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, তাঁদের ব্যবহৃত মাস্কটি একদমই সাধারণ। তখন আমার মনে হয়েছে, তাঁরা যেহেতু দেশবাসীকে রক্ষার জন্য কাজ করছেন, তাই তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কিছু করা উচিত। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই আমি যতটা পারি মাস্ক নিয়ে এগিয়ে আসার চেষ্টা করছি।'

শাকিল খান। ছবি সংগৃহীত।
শাকিল খান। ছবি সংগৃহীত।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, আজ মালিবাগ এসবি শাখা এবং মেয়রের কাছে একত্রে আরও ১ হাজার ৫০০টি মাস্ক দেবেন। করোনার এই দুঃসময়ে গ্রামের মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'করোনার প্রকোপ শুরুর প্রথম থেকেই গ্রাম থেকে অনেক মানুষ সহযোগিতা চেয়ে ফোন করেন। তাঁদের প্রত্যেককে যেভাবে পেরেছি ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত সাহায্য করেছি। ৮০ মণ চাল দেওয়ার কাজ নিয়মিত চলছে। আজ আমার বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার গোরমবা ইউনিয়নে ২০ মণ চাল গেছে।' নগদ অর্থসহায়তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, '৫০০ থেকে হাজার টাকা করে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি, এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৫০–এর মতো। আমি যতটা পারি সাধ্যের মধ্যে থেকে সাহায্য করছি।' এই সময় তিনি মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে বলেন, 'অনেক সময় মানুষ মনে করেন, এটা ব্যবসা। আমি সহযোগিতা করছি নিউজ হচ্ছে। বিষয়টি কিন্তু তেমন না। আমি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানুষকে সহযোগিতা করে ছবি তুলতে আমার লজ্জা লাগে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে মানুষকে সহযোগিতা করছি।'

করোনায় নানাভাবে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ শিল্পী সমিতি। তাঁরা চেষ্টা করছেন মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত স্বল্প আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এই স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কতটুকু সহযোগিতা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার সঙ্গে বেশ কয়েকজন প্রোডাকশনের ম্যানেজার ও প্রোডাকশন বয় যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁদের কিছুটা করে টাকা দিয়েছি। এ ছাড়া তেমন কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। যাঁদের দিতে পারিনি, তাঁদের কেউ না কেউ তো সহায়তা করছে। শিল্পী সমিতির অনেক শিল্পীরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন দেশেও তো আরও অসহায় মানুষ আছেন। স্বল্প আয়ের নিম্নবিত্ত শ্রেণি, অনেকেই কাজ করতে পারছেন না, বেকার বসে আছেন, তাঁদের পাশেও তো দাঁড়ানো দরকার। সবাই যদি নিজের জায়গা থেকে মানুষের পাশে অল্প অল্প করেও দাঁড়ায় তখন আমাদের সমস্যা মনে হয় না থাকবে।'

১৯৯৪ সালে ঝোঁকের বসেই চলচ্চিত্রে আসেন সুদর্শন নায়ক শাকিল খান। ক্যারিয়ারে প্রথম আমার ঘর আমার বেহেশত ছবিতে অভিনয় করেন। সেই ছবি তিন বছর পর মুক্তি পায়। ছবিটি সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এরপর থেকেই যেন এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। এক দশকের কম সময়ে একে একে উপহার দেন ব্যবসাসফল পাহারাদার, বিয়ের ফুল, নারীর মন, কষ্ট–এর মতো অসংখ্য ছবি। বাংলা সিনেমায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেন এই নায়ক। এরপর বাংলা ছবিতে অশ্লীল যুগের সূচনা হলে একসময় হঠাৎ করেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এরপর তিনি আর সিনেমায় নিয়মিত হননি।