অবশেষে অনলাইনে হয়ে গেল কর্মশালাটি

কথা ছিল, এ বছর মার্চে বাংলাদেশের ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে পার্টনারশিপে এর ওপর প্রথমবারের মতো একটি কর্মশালার আয়োজন করবে। জিএমএম এর আগে স্থানীয় চলচ্চিত্র উৎসব বা ফিল্ম ল্যাবের বাইরে এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন করেনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন প্রযোজক ও একজন পরিচালকেরও আসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে করোনা সংকটের কারণে পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তবে দেরিতে হলেও এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে, জুম অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে। 

বাংলাদেশ সময় ১২ থেকে ২০ মে (মার্কিন সময় ১১ থেকে ১৯ মে)—এই ৯ দিন চলেছে কর্মশালা। বাংলাদেশ থেকে পুরো বিষয়টির দেখভাল করেছে জিএমএমে অংশ নেওয়া আরিফুর রহমান ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। তাঁরা প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম, খনা টকিজ, দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ইনিশিয়েটিভ অব বাংলাদেশ, ঢাকা ডক ল্যাব, বক্স অফিস এবং ছবিয়াল—এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মশালায় অংশ নেওয়ার জন্য মনোনীত করে। তারপর প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ জন, অর্থাৎ মোট ৩০ জন তাঁদের প্রজেক্ট জমা দেন। সেখান থেকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২ জন করে ১২ জন নির্বাচিত হয় এই কর্মশালার জন্য।


অংশগ্রহণকারীদের নাম ও প্রজেক্ট:


রাওয়ান সায়েমা- সাবওয়ে
রেদোয়ান রনি- দৌড়
নুহাশ হুমায়ূন- মুভিং বাংলাদেশ
চৈতালী সমদ্দার- আ ওয়াক
ফারজানা ববি- রিদম অব বাবল
সুমন দেলোয়ার- মাই সিস্টার মাই ফ্রেন্ড
সাদিয়া খালিদ- টু সি ইয়োর ফেইস
সরদার জাহিদুল ইসলাম- দ্য আইল্যান্ড অব মিসফিটস
মাহমুদুল ইসলাম- ইবলিশ
তাসমিয়াহ আফরিন- স্টোলেন উইংস
ফরিদ আহমেদ- ওয়েটিং ফর উইনার
শাওকি সৈয়দ আহমেদ- ১০১


তাঁরা দুই দফায় তাঁদের প্রজেক্ট উপস্থাপনের সুযোগ পান। আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাঁদের প্রজেক্টের ওপর ফিডব্যাক জানানো হয়। গতকাল কর্মশালার শেষ দিনে তাঁরা শেষবারের মতো তাঁদের সংশোধিত প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন। মার্কিন প্রযোজক তাতিয়ানা কেলি ও জিম ইয়ং ক্রিয়েটিভ প্রযোজনার ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন। এই দুই প্রযোজক হলিউডের বড় পর্দার লাইফ অব আ কিং, দ্য ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি, দ্য ওয়ার্ডস—এই সিনেমাগুলো প্রযোজনা করেছেন। চিত্রনাট্য ও গল্পের গঠনের ওপর পরামর্শ দেন রুথ অ্যাটকিনসন। মার্কিন লেখক ও পরিচালক জেভিয়ার ফুয়েনটেস-লিওন তাঁর চলচ্চিত্র এল এলিফান্তে ডেসাপারেসিডোকে কেস স্টাডি হিসেবে তুলে ধরেন ও স্বাধীন ধারার নির্মাতাদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলাপ করেন। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা শর্টফিল্মসহ ৬টি প্রজেক্ট দেখেন ও এসব প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্ত আলাপও করেন। শেষ দুটো সেশনের মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ফিল্ম ইন্ডিপেনডেন্টের জ্যেষ্ঠ পরিচালক মারিয়া রাকুয়েল বোজ্জি। প্রথমবার নয়, দ্বিতীয়বার নয়, তৃতীয়বারেও নয়, চতুর্থবারে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল মিডিয়া মেকার্স সংক্ষেপে জিএমএমে দেখা পেল দুই বাংলাদেশি তরুণ নির্মাতার। তাঁরা হলেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও আরিফুর রহমান। ৯টি দেশ থেকে ১৮ জন, ২০১৯ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে ৪২ দিন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের সানসেট বুলেভার্ডের সানসেট স্ট্রিপে থেকে হলিউডের রথী–মহারথীদের কাছ থেকে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। শিখেছেন সিনেমা পড়া, বানানো, বণ্টন, বিক্রিসহ ভিজ্যুয়াল রিয়েলিটিতে গল্প বলার কৌশলসহ নানা কিছু।


তাঁদের এক বছরের ফেলোশিপ এখনো চলছে। এই দুই তরুণ নির্মাতা জিএমএমকে বোঝান যে বাংলাদেশে অসংখ্য চমৎকার সব প্রজেক্ট আছে। একটা কর্মশালা এই প্রজেক্টগুলোর জন্য বেশ সহায়ক হতে পারে। পরবর্তী সময়ে এই দুই তরুণকে দায়িত্ব দেয়, পুরো আয়োজনের ধরন ও সময়সূচি তৈরি করতে। ফিল্ম ইন্ডিপেনডেন্ট ও জিএমএম, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন হাইকমিশনারের সহযোগিতায় এই আয়োজন সম্পন্ন করে।