যে কারণে নোবেলের স্ত্রী ক্যামেরার সামনে

মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ে নোবেল ও তাঁর স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত
মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ে নোবেল ও তাঁর স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

নাহ, নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণ কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে সংবাদ শিরোনাম নয়। এবার গায়ক মডেল বিনোদন সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন নিজের গানের মিউজিক ভিডিওতে স্ত্রীকে মডেল বানিয়ে। নিজের প্রথম মৌলিক গান ‘তামাশা’র মিউজিক ভিডিওতে মডেল হয়েছেন সালসাবিল মাহমুদ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সারা দিন তাঁর নিজ বাসা নিকেতনে শুটিং হয়েছে গানটির ভিডিওর।

নোবেল বলেন, ‘আমার প্রথম গান বড় আকারেই শুটিং করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু করোনা পরিস্থির কারণে ছোট পরিসরে নিজ বাসাতেই শুটিং করছি। গানে আমার বউকে মডেল করেছি।’
স্ত্রীকে মডেল কেন? এই গায়ক বলেন, ‘করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাইরে থেকে এখন মডেল নেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া আমার বউ যথেষ্ট সুন্দরী। মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবে বেশ মানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতে করে মিউজিক ভিডিওর মডেল খরচটাও বেঁচে গেল। সবচেয়ে বড় কথা, আমার প্রথম মৌলিক গানে আমরা দুজনই থাকলাম। বলতে পারেন একটা ইতিহাস হয়ে থাকল। তা ছাড়া আমার আগামীর গানগুলোতেও আমার বউকেই মডেল হিসেবে রাখার চেষ্টা করব।’
গানের ভিডিওতে মডেল হওয়া সালসাবিলের কাছে প্রথম অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘আমি তো এভাবে কোনো দিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াইনি। আমার অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু আমার স্বামী সবকিছু ঠিকঠাক বুঝিয়ে দিয়ে কাজটি করাচ্ছেন। যেহেতু আপন মানুষের সঙ্গে কাজ হচ্ছে, তাই তেমন একটা সমস্যাও হচ্ছে না।’
ভয় লাগছে কি? জানতে চাইলে সালসাবিল বলেন, ‘না, কোনো নার্ভাস বা ভয় লাগছে না। কারণ নোবেল প্রতিটি দৃশ্যেই সাপোর্ট দিচ্ছেন। হাতে ধরে ধরে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ক্যামেরাম্যান ভাই কাজটিতে আমাকে সহজ করতে উৎসাহ দিচ্ছেন।’

নোবেল ও তাঁর স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল ও তাঁর স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

স্বামীর প্রথম মৌলিক গানের ভিডিওতে থাকতে পেরে দারুণ খুশি তিনি। সালসাবিল বলেন, ‘আমি তো কোনো দিন ভাবিনিই এভাবে গানে মডেল হিসেবে কাজ করব। কাজটি করছি। খুব ভালো লাগছে। এখন দেখা যাক কাজটি শেষ হলে পর্দায় কেমন দেখাবে আমাকে। দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকব আমি।’
‘তামাশা’ গানটির লেখা ও সুর জিহানের। সংগীত করেছে নোবেলম্যান টিম। মিক্সমাস্টারিং ইমন চৌধুরী। ভিডিও নির্মাতা নাজমুল হাসান।
নোবেল জানালেন, দু–এক দিনের মধ্যেই গানটির প্রোমো ‘নোবেলম্যান’ ইউটিউবে প্রকাশিত হবে। এরপর ৭ জুন একই চ্যানেল থেকে গানটির ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার কথা আছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের টিভি চ্যানেল জি বাংলার সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো সারেগামাপার মাধ্যমে দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় হয়েছেন মাঈনুল আহসান নোবেল। ২৫ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক মন্তব্য করায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন ত্রিপুরার বিলোনিয়ার সুমন পাল। স্থানীয় বিলোনিয়া থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারা এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলাটি করা হয়েছে।

ভারতের টিভি চ্যানেল জি বাংলার সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো সারেগামাপার মাধ্যমে দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় হয়েছেন মাঈনুল আহসান নোবেল। ছবি: প্রথম আলো
ভারতের টিভি চ্যানেল জি বাংলার সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো সারেগামাপার মাধ্যমে দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় হয়েছেন মাঈনুল আহসান নোবেল। ছবি: প্রথম আলো

গোপালগঞ্জের ছেলে নোবেল বড় হয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়। লেখাপড়া করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতে। মাথায় গানের পোকা ঢোকে কলকাতায় থাকতেই। কলকাতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে ২০১৪ সালে ঢাকায় ফেরেন নোবেল। এভাবে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা করতে করতে নোবেলের সঙ্গে গানের প্রেম পোক্ত হয়ে যায়। সারেগামাপা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ভারতের কলকাতা আর বাংলাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান নোবেল। সেখানে তিনি প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুর করা পাঁচটি গান করেন। প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে ‘বাবা’র মতো জনপ্রিয় গানের কারণে দ্রুত পরিচিতি পান নোবেল। এরপর প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে ‘মা’ গানটি তাঁকে আরও বেশি আলোচনায় নিয়ে আসে।