মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের বিরুদ্ধে হিরো আলমের অভিযোগ

মিশা সওদাগর, জায়েদ খান ও হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত
মিশা সওদাগর, জায়েদ খান ও হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত

‘হিরো আলম নামে কাউকে চিনি না’। একটি টেলিভিশনের সরাসরি অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের এমন মন্তব্যে ভীষণ চটেছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। আজ বুধবার এফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতিতে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগও করেছেন তিনি। প্রথম আলোকে তেমনটাই জানিয়েছেন তিনি। প্রযোজক সমিতির পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে মানহানি মামলাও করবেন বলে জানালেন হিরো আলম।

লিখিত অভিযোগে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরের নামও উল্লেখ করেছেন। গানের ভিডিওতে কাজ করে পরিচিতি পেয়েছেন হিরো আলম। ‘মার ছক্কা’ নামে কাজ করেছেন একটি চলচ্চিত্রেও। শুধু তা–ই নয়, চলচ্চিত্রে প্রযোজক হিসেবেও নাম লিখিয়েছেন তিনি, ‘সাহসী হিরো আলম’ নামের সেই ছবির নায়কও তিনি। প্রথম আলোকে আজ বুধবার সকালে হিরো আলম বলেন, ‘আমাকে হেয় করে কেন কথা বললেন, এর একটা ব্যবস্থা নিতে চাই। তাই প্রযোজক সমিতির কার্যালয়ে এসেছি। জায়েদ খান হিরো আলম নামের কাউকে চেনেন না। তিনি এমন কথা কীভাবে বলেন! আমি এফডিসির কেউ না, এটা বলেন কীভাবে। আমি এফডিসির একজন প্রযোজক না, আমি সিনেমা বানাইছি এটা জানেন না। আমার কাছে কাগজপত্র আছে না!’ জায়েদ খানের সঙ্গে আপনার কখনো দেখা হয়েছে? ‘কেন হবে না। আমি এফডিসিতে যাই। তিনি তো সারাদিন এফডিসির শিল্পী সমিতির অফিসে থাকেন। আমাদের দেখা হয়। তিনি আমাকে ভালো করে চেনেনও। তিনি ইচ্ছাকৃভাবে অপমান করতে এমন কথা বলেছেন। তাচ্ছিল্য করতে। আমার জনপ্রিয়তা তো জায়েদ খানের চেয়ে অনেক বেশি। আমাকে এভাবে হেয় করে কথা বলতে পারেন না তিনি। তাই অভিযোগ করেছি। কোনো সুফল না পেলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’

শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে হিরো আলম। ছবি: ফেসবুক থেকে
শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে হিরো আলম। ছবি: ফেসবুক থেকে

শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি সরাসরি অনুষ্ঠানে মিশা সওদাগরকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনাদের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কি সদস্য হিরো আলম? উত্তরে তিনি বলেন, ‘ও হ্যাঁ, তিনি তো আমাদের আজীবন সদস্য।’ জায়েদ খান ভুল ভাঙান। তাৎক্ষণিকভাবে জায়েদ বলেন, ‘না না, আমার প্রেসিডেন্ট বুঝতে পারেননি। একজন আছে যে মিউজিক ভিডিও করে, তাঁর কথা বলছেন।’ তিনি জয়ের প্রশ্নের উত্তর হিসেবে বলতে শুরু করেন, ‘না না হিরো আলম নামে আমরা কাউকে চিনি না। আমরা হিরো বলতে চিনি নায়করাজ রাজ্জাক, হিরো বলতে চিনি আলমগীর সাহেবকে... হিরো আলম নামে কাউকে চিনি না।’ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হিরো আলমের অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। অফিসে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আমরা কমিটির সবাই মিলে আলাপ–আলোচনা করে অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমাদের অনেক শিল্পীর চেয়েও হিরো আলমের পরিচিতি অনেক বেশি। পাশের দেশ ভারতেও ভীষণ জনপ্রিয়। ইউটিউবে আমি তাঁর কয়েকটা ভিডিও দেখেছি। তিনি একজন চলচ্চিত্র প্রযোজকও। এমন একজন মানুষকে নিয়ে এভাবে কথা বলাটা ঠিক হয়নি। শিল্পী সমিতির মতো ওই রকম একটা দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যে কারও কথাবার্তাও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত মনে করি।’ এদিকে অভিযোগ করার আগে হিরো আলম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘হিরো আলমকে তুচ্ছ করে মূল্যায়নই দিল না জায়েদ খান ভাই। কী বলল, ওরা নাকি হিরো আলমকে চেনে না। বলল, ওই যে মিউজিক ভিডিও করে হিরো আলম। আমি জায়েদ খান ভাইকে একটা কথা বলতে চাই, আপনি যে তুচ্ছ করে কথাটা বললেন, আপনি জায়েদ খান একদিকে দাঁড়াবেন, আমি হিরো আলম একদিকে দাঁড়াব, দেখি আপনাকে কয়জন চেনে, আর আমি হিরো আলমকে কয়জন চেনে। আপনাদের এই রকম অহংকারী কথাবার্তার জন্য আজকে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংসের পথে।’