জাস্টিন বিবারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

জাস্টিন বিবার ও কাদি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
জাস্টিন বিবার ও কাদি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

দুজন নারী সংগীত তারকা জাস্টিন বিবারের বিরুদ্ধে টুইটারে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের একজনের নাম ‘ড্যানিয়েল’ (ছদ্মনাম) ও আরেকজন ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’ কাদি। ড্যানিয়েল নামহীন এক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৪ সালে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সব ঘটনা পোস্ট করেছেন। অন্যদিকে কাদি তাঁর নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ড্যানিয়েলের ঘটনা শেয়ার করে নিজের সঙ্গে ২০১৫ সালে ঘটে যাওয়া সেই ধর্ষণের ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। ইতিমধ্যে অনেকে বিবারকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বিবার এ নিয়ে এখন পর্যন্ত টুঁ শব্দটি করেননি।

ইনস্টাগ্রামে কাদির ফলোয়ার ২ লাখ ১৪ হাজার। ‘আমি ড্যানিয়েলকে বিশ্বাস করি’ বলে কাদি ঘটনার বর্ণনা দেন এভাবে:

‘২০১৫ সালের ৪ মে, সন্ধ্যা। বিবারের গানের আর দশটা ভক্তের মতো আমিও সেদিন নিউইয়র্কে, বিবারের হোটেলে গিয়েছিলাম তার সঙ্গে দেখা করতে। আর একটা ছবি তুলতে। ৪ মে সন্ধ্যা থেকে ৫ মে সকাল পর্যন্ত আমি বিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করি। হোটেলের বাইরে বিবারের বডিগার্ড মিকি আরানার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। মিকি আমাকে বলে যে আমি আকর্ষণীয়, ওর নম্বর আমাকে দেয় (আমারটা নেয়নি)। আর চলে যায়। বেলা আড়াইটার দিকে মিকি আমাকে বিবারের সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে যায়। সেখানে আমিসহ আরও পাঁচজন নারী ছিলেন, আর তিনজন পুরুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন অভিনেতা কাইলি মাসেই আর সম্ভবত বিবারের হেয়ারস্টাইলিস্ট ফ্লোরিডা।’

জাস্টিন বিবার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
জাস্টিন বিবার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কাদির বক্তব্য অনুসারে ওই দিন কাদি বিবারের সঙ্গে ফরাসি ভাষায় কথা বলা শুরু করেন। কারণ, কাদি জানতেন, বিবার একটু একটু ফরাসি পারেন। তখন বিবার কাদিকে ‘স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে না’ জানিয়ে আরও কাছে আসতে বলেন। এরপর কাদি বিবারের বেডরুমের বাঁ পাশের বিশ্রামঘরে যান। বিবার কাদিকে অনুসরণ করে তাঁর বিশ্রামঘরে যান ও দরজা লাগিয়ে দেন। কাদি দরজা লাগানোর কারণ জিজ্ঞেস করলে বিবার বলেন, ‘বলছি।’ এরপর বিবার কাদির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কাদির দাবি, একপর্যায়ে ধর্ষণ করেন। কাদি বিবারকে লাথি মেরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। ঘরে ফিরে এ ঘটনা কাদি তাঁর বোনের সঙ্গে শেয়ার করেন। বোন তাঁকে বলেন যে এ ঘটনা যদি সবাই জেনে যায়, সেটা তাঁদের পরিবারের জন্য মারাত্মক অসম্মানজনক। আর বিবারও ক্ষমতাশালী, তাঁদের ক্ষতি করতে পারেন। এসব বলে কাদির বোন এ ঘটনা কাউকে না বলতে পরামর্শ দেন। কাদি এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে থাকেন। ওই বছরেরই ৬ জুন কাদি টুইটারে বিবারকে ট্যাগ করে লেখেন, ‘বিবার, তুই যেখানেই থাকিস, আমি তোকে দেখে নেব।’ টুইটের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা হুমকি ও মৃত্যুপরোয়ানা আসতে থাকায় কাদি দ্রুত সেই টুইট ডিলিট করেন। দীর্ঘদিন পর ড্যানিয়েলের বিবৃতি আসার পর সেটি শেয়ার করে কাদির সঙ্গেও যে এমনটা ঘটেছিল, তা বিশ্বকে জানিয়ে দেন।

কাদি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
কাদি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

নামহীন এক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে অন্তর্জালের দুনিয়ায় ভেসে ওঠে এক বিবৃতি, ‘ধরুন, আমার নাম ড্যানিয়েল। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ। বন্ধুদের সঙ্গে আমি বিয়ার গার্ডেনের ব্যাংগার্স সসেজ হাউসে স্কুটার ব্রাউনের ইভেন্টে বিবারের গান শুনতে গিয়েছিলাম। বিবার বেশ কয়েকটি গান গাইল। কিছু গান বিবারের তৎকালীন প্রেমিকা সেলেনা গোমেজকে উৎসর্গ করে। এর মধ্যে একজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, আমরা শো শেষে বিবারের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী কি না। আমরা বললাম, “অবশ্যই”। তারপর তাঁর সঙ্গে আমি আমার দুই বন্ধুকে নিয়ে ফোর সিজনস হোটেলে যাই। বিবার তখন ওই হোটেলে ছিল। আমরা তিন বন্ধু বসে ছিলাম। একজন কেবল আমাকে বিবারের ঘরে নিয়ে যায়। আমার তখন ২১ বছর বয়স, বিবারের ২০। তারপর সেখানেই বিবার আমাকে প্রথমে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়, ভয় দেখায় ও ধর্ষণ করে। আমি শারীরিক, মানসিক যন্ত্রণায় আর বন্ধুদের চিন্তায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। বের হয়েই আমি বন্ধুদের সঙ্গে ও আমার পরিবারের সঙ্গে এ ঘটনা শেয়ার করি। আর বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম আমার সব যন্ত্রণা।’

ইতিমধ্যে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়ে গেছে নতুন বিতর্কের ঝড়। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। খুঁজে বের করা হচ্ছে, কে এই ড্যানিয়েল।