প্রতিটি দিন আলাদা সৌন্দর্য নিয়ে আসে

ফেরদৌসী রহমান।  ছবি: প্রথম আলো
ফেরদৌসী রহমান। ছবি: প্রথম আলো
>প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান ৮০ বছরে পড়েছেন গতকাল ২৮ জুন। পল্লিগীতির সম্রাটখ্যাত আব্বাসউদ্দীনকন্যার সংগীতের সঙ্গে বসবাস খুব ছোটবেলা থেকে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ঘর থেকে বের হন না, করোনায় আরও না। এবারের জন্মদিন কেমন কেটেছে, তা নিয়ে রোববার দুপুরে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

শুভজন্মদিন?
অনেক ধন্যবাদ।

এবারের জন্মদিন কেমন কাটছে?
সত্যি কথা বলতে, ছোটবেলায় কখনো জন্মদিন পালন করা হতো না। প্রথম জন্মদিন করা হয় মেট্রিক পাস করার পর। আমি বোর্ডে স্ট্যান্ড করলাম, সেদিন আমার জন্মদিন ছিল, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে ডেকে ওই অছিলায় খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছে। ছোটবেলায় আব্বা বলতেন, 'তুমি নিজে কেন জন্মদিন পালন করবে, তুমি এমন কিছু করবে, দেশের মানুষ তোমাকে স্মরণ করবে। জন্মদিন উদ্‌যাপন করবে।' বাড়িতে হইচই করে জন্মদিন পালন করেছি বলে মনে হয় না।

ফেসবুকে দেখলাম অনেকে শুভকামনা জানাচ্ছেন জন্মদিনে, দেখেছেন?
আমি দেখি, এগুলো অবশ্যই ভালো লাগে।

জন্মদিনে যখন পেছন ফিরে তাকান, কেমন লাগে?
বয়স নিয়ে আমি কখনোই মাথা ঘামাই না। আমার মনে হয়, জীবন আরও চলবে। প্রতিটা দিন আমি আমার মতো করে উপভোগ করি। আমি মনে করি, প্রতিটি দিন আলাদা সৌন্দর্য নিয়ে আসে।

শুনেছিলাম, আপনার পায়ে ব্যথা। ঘর থেকে বের হতে পারেন না। এখন কেমন আছেন?
করোনার কারণে অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে। স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত। তবে চারপাশে যা অবস্থা, তাতে হতাশ হয়ে পড়ছি। প্রতিনিয়ত পরিচিত লোকজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন, খুব খারাপ লাগছে।

করোনার এই মহামারিতে গান কীভাবে সঙ্গী হতে পারে?
এই মহামারি অন্য সব মহামারির মতো না। এখন আমরা অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। এই যুদ্ধ মানুষকে দুর্বল করে দেয়, মানসিক শক্তি নষ্ট করছে। মানসিক শক্তি হারালে তো গান যত শক্তিই হোক, মনকে প্রফুল্ল করতে পারবে না। হয়তো শিল্পী হিসেবে আমি নিজে গান করে সময় পার করতে পারব, শান্তি পাব। কিন্তু এই অবস্থায় শারীরিক, মানসিকের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে কষ্টে আছে মানুষ। গরিবের সংখ্যা বাড়ছে। কাজে থাকা মানুষগুলো কাজ হারাচ্ছে। মানুষ মিউজিক করে শান্তি থেকে। এখন তো অশান্তির সময়। খালি পেটে গান–কবিতা কিছুই তো বের হবে না।

সময়টা কাটছে কেমন?
বই পড়ি, তবে মনোযোগ দিতে পারি না। লিখতে পারি না। মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত। কাল কী হবে বুঝতে পারছি না। দিনটাই শুরু হয় মৃত্যুর খবর পেয়ে, আতঙ্ক নিয়ে। টেলিভিশন অন করলেই ভাবতে থাকি, না জানি আজ কোন পরিচিতজনের মৃত্যুর খবর শুনতে হবে!